Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া: ভ্যাটিকান সিটিতে লাখো মানুষের শেষ শ্রদ্ধা

ডেস্ক রিপোর্ট

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১১:০৪ এএম

পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া: ভ্যাটিকান সিটিতে লাখো মানুষের শেষ শ্রদ্ধা

ভ্যাটিকান সিটি এবং রোমের রাস্তাজুড়ে লাখো মানুষ জড়ো হয়েছেন পোপ ফ্রান্সিসকে শেষ বিদায় জানাতে। অভিবাসী, দরিদ্র এবং ক্যাথলিক চার্চের সংস্কারের প্রতীক হিসেবে ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন এই পোপ।

শনিবার সেন্ট পিটার্স বাসিলিকার সিঁড়িতে পোপের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট জাভিয়ের মাইলি, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি এবং ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়রসহ ৫০টিরও বেশি দেশের নেতৃবৃন্দ এবং ১১ জন রাজপরিবারের সদস্য উপস্থিত রয়েছেন।

ভ্যাটিকান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে ২,৫০,০০০ মানুষের সমাগম এবং রোমের রাস্তায় আরও ১০ লাখ মানুষের ভিড়ের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে, যারা শেষবারের মতো পোপের কাঠের কফিন দেখার আশায় অপেক্ষা করছেন।

পোপ ফ্রান্সিস ইস্টার সোমবার স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার একদিন পর, ৮৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। এরপর কয়েক দিনে প্রায় ২,৫০,০০০ শোকাহত মানুষ তার মরদেহে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছে। শুক্রবার রাতে আনুষ্ঠানিকভাবে তার কফিন সিল করা হয়।

আজকের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া মিসায় লাতিন ভাষায় প্রার্থনা শুরু হবে। পাঠ হবে ইংরেজিতে এবং বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা ক্যাথলিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ফরাসি, আরবি, পর্তুগিজ, পোলিশ, জার্মান এবং প্রথমবারের মতো ম্যান্ডারিন ভাষায় "বিশ্বাসীদের প্রার্থনা" পাঠ করা হবে।

পোপ ফ্রান্সিস আগে থেকেই তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সাধারণ ও সরল রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ভ্যাটিকান জানিয়েছে, তিনি চেয়েছিলেন এটি যেন "কোনো ক্ষমতাবানের নয়, বরং খ্রিস্টের এক সাধু শিষ্যের অন্ত্যেষ্টি" হয়।

পোপ ফ্রান্সিসের ইচ্ছানুযায়ী, দরিদ্র ও আশ্রয়হীন ব্যক্তিদের একটি দল তার কফিনের সামনে দাঁড়িয়ে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করবে। এরপর তার কফিন রোমের রাস্তায় ধীরে ধীরে এগিয়ে যাবে এবং শেষমেশ সান্তা মারিয়া ম্যাজিওরে বাসিলিকায় সমাহিত করা হবে—তিন শতাধিক বছরের মধ্যে প্রথম কোনো পোপকে এখানে সমাহিত করা হচ্ছে।

প্রথম লাতিন আমেরিকান, প্রথম জেসুইট এবং আধুনিক যুগে প্রথম ইউরোপের বাইরের পোপ হিসেবে ইতিহাস গড়েছেন ফ্রান্সিস। তিনি চার্চে নারীদের ভূমিকা বৃদ্ধির মতো অনেক সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিয়েছেন, যদিও যৌন নির্যাতন ইস্যুতে সমালোচনার মুখেও পড়েছিলেন।

সমকামী সম্পর্ক নিয়ে চার্চে বিভাজন থাকা অবস্থায়, তিনি বিখ্যাতভাবে বলেছিলেন, "আমি কে যে বিচার করবো?"—যদিও চার্চের ঐতিহ্যবাহী অবস্থান বহাল রেখেছিলেন।

পোপ ফ্রান্সিস অভিবাসন ইস্যুতে ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির সমালোচনা করেছিলেন এবং সম্প্রতি মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের ধর্মতাত্ত্বিক ব্যাখ্যার বিরোধিতা করেছিলেন। ভ্যান্স ছিলেন ইস্টার রবিবারে পোপের সঙ্গে দেখা করা শেষ কয়েকজনের একজন।

এখন নতুন পোপ নির্বাচনের জন্য বিশ্বব্যাপী কার্ডিনালদের মধ্যে একটি গোপন সম্মেলন (কনক্লেভ) অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে পোপ ফ্রান্সিসের সংস্কারমুখী পথ ধরে এগোনো নাকি রক্ষণশীল ধারায় ফিরে যাওয়া—এই দ্বন্দ্বের প্রতিফলন ঘটতে পারে।

ভ্যাটিকানে জড়ো হওয়া অনেক বিশ্বাসী জানিয়েছেন, তারা পোপ ফ্রান্সিসের জীবনকর্মে গর্বিত।
জার্মানির লিপজিগ থেকে আসা লাউরা গ্রুন্ড বলেন, "তিনি গির্জাকে আরও উন্মুক্ত করেছেন। তিনি অনেক দরজা খুলে দিয়েছেন।"
মিউনিখের সিস্টার লুইসা বলেন, "তিনি ছিলেন একজন সাধারণ মানুষ, যিনি মানুষকে ভালোবাসতেন। আমরা ধন্য মনে করছি, কিন্তু একইসঙ্গে গভীর শোকাহত।" সূত্র: সিএনএন

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: banglaoutlook@gmail.com

অনুসরণ করুন