কাশ্মীরে হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা, গোলাগুলি বিনিময়

কাশ্মীরের পেহেলগামে জঙ্গি হামলার তৃতীয় দিনেই নিয়ন্ত্রণ রেখায় ভারত ও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মধ্যে গোলাগুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটি জানায়, বৃহস্পতিবার রাতের দিকে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর ভারতীয় পোস্ট লক্ষ্য করে পাকিস্তান সেনাবাহিনী 'আনুমানিক' গুলিবর্ষণ শুরু করে। এর জবাবে ভারতীয় সেনাও পাল্টা গুলি চালায়।
সামরিক সূত্রে জানা গেছে, ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানকে "কার্যকর জবাব" দিয়েছে এবং এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
এনডিটিভিকে দেওয়া এক বিবৃতিতে একজন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তার ভাষ্য, “গত রাতে নিয়ন্ত্রণ রেখার একাধিক এলাকায় পাকিস্তানের দিক থেকে হালকা অস্ত্র ব্যবহার করে গুলিবর্ষণ চালানো হয়। তার উপযুক্ত জবাব দিয়েছে ভারতীয় সেনারা।”
এ পরিস্থিতি জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার প্রেক্ষাপটে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনার জন্ম দিয়েছে। মঙ্গলবারের ওই হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত এবং ডজনাধিক আহত হন, যার দায় স্বীকার করেছে 'দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট' (TRF)।
উল্লেখ্য, TRF পাকিস্তান-ভিত্তিক নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার একটি শাখা হিসেবে পরিচিত। ধারণা করা হয়, পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এই সংগঠনটির পেছনে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।
লস্কর-ই-তৈয়বার প্রতিষ্ঠাতা ও ২৬/১১ মুম্বাই হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হাফিজ সাঈদের তত্ত্বাবধানে যে ছায়া সংগঠনগুলো গঠিত হয়েছিল, TRF তাদের একটি বলেই মনে করা হয়।
এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারত বুধবার সার্ক ভিসা স্কিমের আওতায় পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করে এবং ভারতে অবস্থানরতদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশত্যাগের নির্দেশ দেয়। একইসাথে আটারি সীমান্ত বন্ধের ঘোষণা এবং ঐতিহাসিক সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে।
ভারতের এসব পদক্ষেপের পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইসলামাবাদ বৃহস্পতিবার ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দেয় এবং ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করে দেয়। একইসাথে ভারতীয় উড়োজাহাজের জন্য আকাশসীমা বন্ধের কথা জানায় এবং ভারতের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য স্থগিত করে দেয়। তৃতীয় কোনো দেশের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যে পাকিস্তানের ভূখণ্ড ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করে।