দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুকের অভিশংসন শুনানি চূড়ান্ত পর্যায়ে

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল মঙ্গলবার সংবিধানিক আদালতে নিজের অভিশংসন বিচার প্রক্রিয়ার সমাপ্তিমূলক বক্তব্য প্রদান করবেন। আটজন বিচারকের রায়ের ওপর নির্ভর করছে তিনি প্রেসিডেন্ট পদে বহাল থাকবেন নাকি অপসারিত হবেন।
ইউনকে ডিসেম্বর ৩ তারিখে সংবিধানবহির্ভূতভাবে সামরিক আইন ঘোষণা করার অভিযোগে অভিশংসন করা হয়। যদি আদালত এই সিদ্ধান্ত বহাল রাখে, তবে পাঁচ বছরের মেয়াদের মধ্যে তিন বছর না পেরোতেই তাকে পদত্যাগ করতে হবে।
আদালতে ইউনের যুক্তি
ইউন তার শুনানিতে বলেছেন, তিনি সামরিক আইন জারি করার অধিকার রাখেন তবে তিনি সম্পূর্ণ সামরিক শাসন আরোপ করতে চাননি। বরং, বিরোধী ডেমোক্রেটিক পার্টির সংসদীয় ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ করতে সতর্কবার্তা দিতে চেয়েছিলেন।
বিচার প্রক্রিয়ার অগ্রগতি
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বিকেল ২টায় (০৫:০০ GMT) চূড়ান্ত শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
সংসদের বিচারবিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান জং চুং-রে ও প্রেসিডেন্ট ইউন তাঁদের শেষ বক্তব্য প্রদান করবেন।
বিচারপতিরা কয়েক দিন ধরে রায় নিয়ে আলোচনা করবেন, যা অপসারণ অথবা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নির্ধারণ করবে।
সামরিক আইন বিতর্ক ও অভিশংসনের কারণ
ইউনের “অপ্রত্যাশিত সামরিক আইন ঘোষণা” দেশে সংবিধানিক সংকট তৈরি করে, যা প্রধানমন্ত্রীরও অভিশংসনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ফলে, বর্তমানে দেশের দায়িত্ব পালন করছেন অর্থমন্ত্রী।
ইউন বলেছেন, এই সামরিক আইন ব্যর্থ হয়নি, বরং পরিকল্পনার চেয়ে আগে শেষ হয়ে গেছে। তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, সংসদ দখল করতে সামরিক কমান্ডারদের নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন কারণ কিছুই ঘটেনি এবং কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
ইউনের গ্রেপ্তার ও বিচারপ্রক্রিয়া
ইউন বর্তমানে সিউল ডিটেনশন সেন্টারে আটক আছেন। অন্য একটি মামলায় “বিদ্রোহের নেতৃত্ব” দেওয়ার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম বর্তমান প্রেসিডেন্ট, যিনি ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হয়ে বিচারের সম্মুখীন।
সংবিধানিক আদালত এখনও চূড়ান্ত রায়ের তারিখ নির্ধারণ করেনি, তবে ১৪ ডিসেম্বর থেকে ছয় মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত দিতে হবে। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট পার্ক গুয়েন-হাইয়ের অভিশংসনের চূড়ান্ত শুনানির ১১ দিনের মধ্যে আদালত রায় ঘোষণা করেছিল।