ভারতে এ যেন এক টুকরো ইরান, মানে ইসরায়েলের চিরশত্রু
হাসান নাসরাল্লাহ নিহত হওয়ার পর কার্গিলে শোক, বিক্ষোভ।
ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব। যখন ভারতের ঘরে ঘরে ইসরায়েল সমর্থক তখন ভারতের পেটের মধ্যেই প্রতিদিন নিয়ম করে মানুষ ইরানের সমর্থনে রাস্তায় নামছে, ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ্ খামেনির ছবি নিয়ে মিছিল করছে এমনকি হিজবুল্লাহর পক্ষে স্লোগান দিচ্ছে।
অবস্থা এমন যে চট করে কেউ হয়ত বুঝতেই পারবেন না জায়গাটি ভারতে না ইরানে।
জায়গাটি চীন ও পাকিস্তান সীমান্তঘেঁষা লাদাখের কার্গিল। ২৫ বছর আগের এখানে ভারত ও পাকিস্তানের লড়াই হয়েছিল।
কার্গিল জেলার জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক শিয়া মুসলিম। ইরানের সঙ্গে তাদের সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক ও আত্মিক যোগাযোগ গভীর।
শহরের কেন্দ্রস্থলে ব্যস্ততম মোড়ের নাম ‘খামেনি চক’। ইরানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে-বিপক্ষে প্রচারণা চলে কারগিলে। পছন্দের প্রার্থীর পোস্টারে ছেয়ে যায় শহর। দেয়াল লিখনও চলে সমানে।
হাসান নাসরাল্লাহ নিহত হওয়ার পর কার্গিলে শোক আর বিক্ষোভ মিছিল হয়েছিল
অক্টোবরের প্রথম দিকে ইরানের সমর্থনে রাস্তায় নেমেছেন কার্গিলের শিয়া মুসলিমরা।
ইব্রাহিম রাইসি যখন হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হন তখন তাকে শেষ বিদায় জানাতেও কার্গিল চোখের জলে পথে নেমেছিল। শোকের কালো পোশাক পরে হাজার হাজার শিয়া নারী-পুরুষ ‘লাবাইক ইয়া খামেনি’ ধ্বনিতে মুখর করে তুলেছিলেন শহরের আকাশ-বাতাস।
ভারতের অন্যত্রও প্রচুর শিয়া মুসলিম আছেন, বস্তুত ইরানের বাইরে বিশ্বের যে দেশে সবচেয়ে বেশি শিয়া বসবাস করেন সেটি হল ভারত।
সংখ্যায় তারা মোট তিন থেকে চার কোটির মতো হবেন বলে ধারণা করা হয়।
কিন্তু ভারতের লখনৌ বা হায়দ্রাবাদের মতো শহরগুলোতে যে শিয়ারা থাকেন তারা কার্গিলের শিয়াদের মতো এতটা সংঘবদ্ধ বা এককাট্টা নন। ইরানের সঙ্গে তারা অতটা একাত্মতাও বোধ করেন না।
ইরান তথা ইরানের বিপ্লবের আদর্শের প্রতি সংহতি জানাতে কার্গিলের শিয়ারাকখনও দ্বিধায় ভোগেনি। আবার ভারতের প্রতি তাদের ‘দেশপ্রেম’ নিয়েও কেউ কখনও প্রশ্ন তোলার সুযোগ পায়নি!
শুধু ইরান নয়, তারা গাজার ফিলিস্তিনিদের হয়েও নিয়মিত পথে নামছেন, আওয়াজ তুলছেন। সূত্র : বিবিসি