চীনের পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিনের সলিল সমাধি
উচাং শিপ ইয়ার্ড
চীনের পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন ডুবে গেছে। বিষয়টি বেইজিংয়ের জন্য বিব্রত। সাবমেরিনটি এই বছরের শুরুর দিকে ডবলেও সাংবাদিকরা খবর পান সাম্প্রতিককালে।
একজন সিনিয়র মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তার বরাতে রয়টার্স বলছে, চীনের ইতিমধ্যেই বিশ্বের বৃহত্তম নৌবাহিনী রয়েছে, যেখানে ৩৭০ টির বেশি যুদ্ধজাহাজ রয়েছে। এবং দেশটি এখন নতুন প্রজন্মের পারমাণবিক সশস্ত্র সাবমেরিন তৈরির কাজ শুরু করেছে।
একজন ঊর্ধ্বতন মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, চীনের পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিনটি গত মে ও জুনের মাঝামাঝি কোনো সময়ে ডুবে যায়।
ওয়াশিংটনে চীনা দূতাবাসের একজন মুখপাত্র বলেছেন, “আমাদের কাছে এ বিষয়ে বলার মতো কোনো তথ্য নেই। আপনি যা বলছেন, সে রকম কোনো পরিস্থিতির সাথে আমরা পরিচিত নই।’
সাবমেরিনটি কেন ডুবে গেছে তার কারণ বলতে পারেননি মার্কিন কর্মকর্তারা। ডোবার সময়ে সাবমেরিনটিতে পারমাণবিক জ্বালানি ছিল কিনা তাও স্পষ্ট নয়।
তবে চীনা নেভির প্রশিক্ষণের মান এবং সাবমেরিন সরঞ্জামের গুণমান সম্পর্কে প্রশ্ন উঠেছে। চীনের প্রতিরক্ষা শিল্পের তত্ত্বাবধান সম্পর্কেও গভীর প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
সিঙ্গাপুরের এস রাজারত্নম স্কুলের চীনবিষয়ক প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ জেমস চার বলেছেন, এ দুর্ঘটনাটি চীনা নেভি চীনা প্রতিরক্ষা শিল্পের সবচেয়ে উন্নত প্ল্যাটফর্মগুলির মধ্যে একটি। তাদের নতুন সাবমেরিন টিকে থাকার বিষয়ে সন্দেহের বীজ বপনের পাশাপাশি, এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন বিশ্বজুড়ে সশস্ত্র বাহিনী জন্য সমস্যা বয়ে আনতে পারে।
চীনা সাবমেরিন ডোবার খবর প্রথম প্রকাশিত হয় ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল দ্বারা। সেখানে বলা হয়, জুন থেকে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে একের পর এক ছবি আসতে থাকে। সিরিজ চিত্রগুলোতে উচাং শিপইয়ার্ডের ক্রেন দেখা যায়, যেখানে সাবমেরিনটি নোঙর করা হত।
২০২২ সাল পর্যন্ত, চীনের ছয়টি পারমাণবিক শক্তিচালিত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সাবমেরিন, ছয়টি পারমাণবিক শক্তিচালিত যুদ্ধ সাবমেরিন এবং ৪৮টি ডিজেলচালিত যুদ্ধ সাবমেরিন ছিল। চীনের সামরিক শক্তি সম্পর্কে পেন্টাগনের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য এসেছে। সেই সাবমেরিন সংখ্যা 2025 সালের মধ্যে ৬৫ এবং ২০৩৫ সালের মধ্যে ৮০ হবে বলে মনে করছে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ।
সাবমেরিন ডোবার এই ঘটনা পশ্চিমা গণমাধ্যমসহ ভারতের সংবাদ সংস্তাগুলো খুব উদ্দীপনা নিয়ে ছেপেছে। আনন্দবাজার পত্রিকায় বলা হয়েছে, ‘বেজিংয়ের মুখে চুনকালি! চিনের অত্যাধুনিক পরমাণু ডুবোজাহাজ ডুবেই গেল, ঘনাচ্ছে রহস্য!’ পত্রিকাটিতে আরও বলা হয়েছে, ‘তাইওয়ান, জাপানকে চোখরাঙানি। কিংবা আমেরিকাকে চ্যালেঞ্জ। ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় দাদাগিরি চালানো চীনের মুখেই এবার পড়ল চুনকালি।’