Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

কাশ্মীরে নির্বাচনে বড় পরিবর্তন

ডেস্ক রিপোর্ট

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৪৮ পিএম

কাশ্মীরে নির্বাচনে বড় পরিবর্তন

মাসচারেক আগে ভারত-শাসিত কাশ্মীরে যখন লোকসভা নির্বাচন হয়, তখনই বোঝা যাচ্ছিল ওখানে কিছু একটা বড়সড় পরিবর্তন অবশ্যই ঘটছে!

কারণ যে কাশ্মীর একদা ‘ভোট বয়কট’ আর ‘সেনা জবরদস্তি’র জন্য পরিচিত ছিল, সেখানে মে মাসে গোটা রাজ্যেই শান্তিপূর্ণভাবে ভোট পড়ে প্রায় ৫৯ শতাংশের কাছাকাছি! ভোটে সেই অকল্পনীয় সাড়া মেলার পর এখন সেপ্টেম্বরে এসে বিধানসভা নির্বাচনে দেখা যাচ্ছে, প্রথম দফায় ভোট পড়ার হার প্রায় ৬২ শতাংশে পৌঁছে গেছে – বিগত প্রায় চল্লিশ বছরের মধ্যে যে জিনিস কখনও ঘটেনি।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর প্রথম দফার ভোটের পরই রাজ্যের প্রধান নির্বাচনী কর্মকর্তা পি কে পোলে জানান, কাশ্মীরে লোকসভা আর বিধানসভা নির্বাচন মিলিয়ে গত সাতটা ভোটের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে এই হিসেব। আর বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণেও অভাবনীয় সাড়া মিলেছে, প্রাথমিক হিসেবে সে দিনও ভোট পড়েছে ৫৬ শতাংশর বেশি।

এর মধ্যে জম্মুর মুসলিম-অধ্যুষিত এলাকা কিশতওয়ারে ভোটদানের হার তো ৮০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। জম্মুর রামবান জেলায় ৭০ শতাংশ বা কাশ্মীরের কুলগামেও ৬৫ শতাংশ ভোটার পোলিং বুথে এসেছেন – আর সর্বত্রই ভোট হয়েছে রীতিমতো উৎসবমুখর পরিবেশে।

অথচ এই কাশ্মীরেই মাত্র কিছুকাল আগেও নির্বাচন মানেই ছিল হুরিয়ত কনফারেন্স বা বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদীর গোষ্ঠীর ভোট বয়কটের ডাক। ভোট দিতে গেলে জঙ্গী হামলার মুখে পড়তে হবে, ছিল এই আতঙ্কের চোরা স্রোতও।

আর পাশাপাশি অভিযোগ উঠত, বয়কটের ডাক ব্যর্থ করতে ভারতীয় সেনাবাহিনী জোর করে এক-আধটা আস্ত গ্রামকে বন্দুকের মুখে পোলিং বুথে নিয়ে গেছে – যাতে অন্তত এই ছবিটা তুলে ধরা যায় যে কাশ্মীরে ভোট দিতেও মানুষের লাইন পড়ছে!

কিন্তু আজ জম্মু ও কাশ্মীরের ভোটাররা যে স্বত:স্ফূর্তভাবে ভোট দিতে আসছেন, তাতে কোনও সংশয় নেই। চেনা-অচেনা কোনও গোষ্ঠীই ভোট বয়কটের ডাক দেয়নি, সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধেও জোর খাটানোর কোনও অভিযোগ ওঠেনি।

তবে যে কোনও ‘সাফল্যে’র যেমন একাধিক দাবিদার থাকে – তেমনি কাশ্মীরের এই নাটকীয় পটপরিবর্তনের নেপথ্যে কী, তা নিয়েও অনেকগুলো মতবাদ আছে।

ভারতের শাসক দল বিজেপি যেমন পরিষ্কার বলছে, পাঁচ বছর আগে ৩৭০ ধারা বিলুপ্ত করে তারাই কাশ্মীরকে দেশের মূল ধারায় ফিরিয়ে এনেছে এবং সে কারণেই গোটা অঞ্চলে এখন শান্তি ও সুস্থিরতা বিরাজ করছে। ব্যালট বাক্সে কাশ্মীরিদের সেই আস্থারই প্রতিফলন ঘটছে বলে তাদের দাবি।

শ্রীনগর ও তার আশেপাশে গত সপ্তাহে বহু সাধারণ কাশ্মীরির সঙ্গে কথা বলেছি, তারা আবার অনেকেই বলছেন হ্যাঁ, পরিস্থিতির বেশ অনেকটা উন্নতি হয়েছে এতে কোনও ভুল নেই!

“কিন্তু বিজেপির এতে কোনও কৃতিত্ব নেই! বছরের পর বছর ধরে টানা অস্থিরতা আর সহিংসতায় ক্লান্ত হয়ে কাশ্মীরের আমজনতাই এবার স্থির করেছে, ঢের হয়েছে, আমরা নিজেরাই উপত্যকায় শান্তি ফিরিয়ে আনব আর ভোট দিতে যাব”, বলছেন তারা।

কাশ্মীরে ন্যাশনাল কনফারেন্স বা পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টির মতো পুরনো ও প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলো আবার বিশ্বাস করে ৩৭০ ধারা এখনও ফিরিয়ে আনা সম্ভব – আর বিপুল সংখ্যায় ভোট দিয়ে উপত্যকার মানুষ বিজেপির সেই চরম বিতর্কিত পদক্ষেপের বিরুদ্ধেই প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। সূত্র : বিবিসি

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন