Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশে অস্থিরতা: বৈশ্বিক পোশাক ব্র্যান্ডের অর্ডার ভারতে সরে যাচ্ছে

ডেস্ক রিপোর্ট

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:২৩ পিএম

বাংলাদেশে অস্থিরতা: বৈশ্বিক পোশাক ব্র্যান্ডের অর্ডার ভারতে সরে যাচ্ছে

ছবি: সংগৃহীত

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতন হয়। পরে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্ব অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি টালমাটাল অবস্থায় রয়েছে। আর এই অস্থিরতায় যেন পোয়াবারো ভারতের পোশাক ব্যবসায়ীদের।

বাংলাদেশের অস্থিরতার কারণে বৈশ্বিক পোশাক ব্র্যান্ডগুলো ভারতের দিকে ঝুঁকছে। ভারতের বিভিন্ন পোশাক কারখানায় এখন হঠাৎ করে বাড়ছে পশ্চিমা বিশ্বের ক্রয়াদেশ। গত দুই সপ্তাহে দেশটির তামিল নাড়ু তিরুপুর নিটওয়্যার এক্সপোর্ট ইন্ডাস্ট্রি ৪৫০ কোটি রুপিরও বেশি মূল্যের রপ্তানি আদেশ পেয়েছে। বাংলাদেশে অস্থিরতার কারণে জার্মানি, নেদারল্যান্ডস ও পোল্যান্ডের মতো দেশগুলোর ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলো ভারতের দিকে ঝুঁকছে। দি ইকোনোমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে। 

তিরুপুর এক্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের  প্রেসিডেন্ট কেএম সুব্রমানিয়ানকে উদ্ধৃত করে দি ইকোনোমিক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, কিক, জীম্যান ও পেপকোর মতো প্রধান প্রধান খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো জরুরি ভিত্তিতে তৈরি পোশাকের ক্রয়াদেশ দিয়েছে। প্রতি পিস প্রায় ৩ মার্কিন ডলার মূল্যের এসব পোশাক বড়দিন (ক্রিসমাস) ও নতুন বছরের আগেই সরবরাহ করতে হবে।  

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়,ভারতে বৈশ্বিক ব্র্যান্ডগুলো থেকে বিভিন্ন ধরনের তৈরি পোশাকের ক্রয়াদেশ নজিরবিহীনভাবে বেড়েছে। আর এসব ক্রয়াদেশের মধ্যে শিশুদের পোশাক, নিটওয়্যার, টপস ও পায়াজামাও রয়েছে। সুব্রমানিয়ান এই অবস্থাকে ‘অস্বাভাবিক পরিস্থিতি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, সাধারণত ব্র্যান্ডগুলো বসন্ত/শরতের জন্য ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে এবং ছুটির মৌসুমের জন্য জুন ও জুলাইয়ে তাদের ক্রয়াদেশগুলো করে থাকে। ক্রিসমাসকে সামনে রেখে এইরকম হঠাৎ বিপুল চাহিদা তিরুপুর হাবের ক্ষেত্রে প্রথমবার ঘটল। 

তিনি জানান, তিরুপুরের নতুন ১০টি কারখানাতেও বৈশ্বিক ব্র্যান্ডগুলো অডিট করছে। মধ্য সেপ্টেম্বরে এই অডিট শেষ হবে। এই নিটওয়্যার কারখানাগুলো যদি বৈশ্বিক মান পূরণ করতে পারে তবে নতুন বছরে আরও ক্রয়াদেশ পাওয়া যাবে। 

একই প্রতিবেদনে জানানো হয়, উত্তরপ্রদেশের নয়দার অ্যাপারেল ইন্ডাস্ট্রিতে গত বছরের আগস্টের তুলনায় চলতি বছরের আগস্টে বৈশ্বিক ব্র্যান্ড জারার ক্রয়াদেশ ১৫ শতাংশ বেড়েছে। নারীদের টপস এবং অন্যান্য পোশাকগুলো প্রতি পিস ৫ থেকে ৯ মার্কিন ডলার মূল্যের এবং ৬০ দিনের মধ্যে এসব সরবরাহ করতে হবে। এই সময়ে এমন ক্রয়াদেশ অস্বাভাবিক বলছেন নয়দার পোশাক ব্যবসায়ীরা। 

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ থেকে ভারতে স্থানান্তরিত হচ্ছে

অ্যাপারেল এক্সপোর্ট প্রমোশন কাউন্সিলের দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান এ শক্তিভেল উল্লেখ করেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে কিছু ব্র্যান্ড তাদের অর্ডার বাংলাদেশ থেকে তিরুপুরে স্থানান্তরিত করেছে। ভারত আরও অর্ডার পাবে যদি সরকার ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) চূড়ান্ত করে। কারণ বাংলাদেশ ইউরোপের বাজারে এফটিএ চুক্তির সুবিধা পায়। 

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির ব্যবধান বেশি না 

ভারত গেল অর্থ বছরে ১৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পোশাক রপ্তানি করেছে। সেখানে বাংলাদেশ রপ্তানি করেছিল ৯ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ভারত পোশাক রপ্তানি করেছে ৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের। বিশ্লেষণী সংস্থা কেয়ারএজ রেটিং উল্লেখ করেছে, গত অর্থ বছরে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ভারতের তুলনায় ৩ দশমিক ২ গুণ বেশি ছিল। কিন্তু চলতি অর্থ বছরের প্রথম প্রান্তিকে সেই অনুপাত ২ দশমিক ৫ গুণ কমেছে। আর এতেই বুঝা যায় বিশ্ব বাজারে ভারতের পোশাক রপ্তানির হার বাড়ছে। 

বাংলাদেশের টেক্সটাইল শিল্পের উপর প্রভাব

বাংলাদেশে অস্থিরতার কারণে ভারত সরকার ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন (আইবিএফপি) নির্মাণ প্রকল্প বন্ধ করে দিয়েছে। ভারতের এই সিদ্ধান্তের কারণে বাংলাদেশের টেক্সটাইল খাতের প্রধান সম্পদ ডিজেল সরবরাহ হয়তো বিঘ্ন ঘটতে পারে। আর তা হয়তো বাংলাদেশের পোশাক উৎপাদনে ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে পারে বলে দি ইকোনোমিক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়। 

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন