দিন দিন ভারতের কেরালায় গরুর গোস্তের প্রতি টান বাড়ছে। ২০২০-২১ সালে কেরালায় অধিকাংশ পরিবারের খাবার টেবিলে গরুর মাংসই বেশি স্থান পেয়েছে। এমনকি খাসি বা মুরগির চেয়ে গরুর মাংস বেশি খেয়েছেন তারা। এনভিস্টারস রিপোর্ট অনুযায়ী এমনটাই জানা গেছে।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২০-২১ সালে কেরালায় প্রায় ১৪ লাখ ৩৪ হাজার গবাদি পশু জবাই করা হয়। ওই বছর কেরালাবাসী ১ লাখ ৫৩ হাজার টন গোস্ত খান। একই সময়ে তামিলনাড়ুর মানুষ ৫১ হাজার টন গোস্ত খান, যা কেরালার তুলনায় তিন ভাগ কম। আবার খ্রিস্টান মেঘালয়ের বাসিন্দারা ২০ হাজার টন গোস্ত খেয়েছেন, যা কেরালার তুলনায় সাত ভাগেরও কম।

কেরালায় মানুষ শুকরের মাংসও অনেক বেশি খেয়েছেন। বলা যায় ভারতের এই রাজ্যে গরুর মাংসের পাশাপাশি শুকরের মাংস খাওয়াও বেড়েছে। ২০১৮ সালে প্রায় ৯৮ হাজার শুকরের মাংস খাওয়া হয়েছিল। মাংসের পরিমাণ ছিল ৭ হাজার টন। ২০১৮ সাল থেকে ২০২০-২১ সালে তা দ্বিগুণ বেড়ে দাঁড়ায় ১৪ হাজার টন। ওই সময় পোল্ট্রি খরচ ১১ কোটি টাকা (১ লাখ ৭৮ হাজার টন) থেকে ১০ কোটি (১ লাখ ৬০ হাজার টন) নেমে এসেছিল। এসবেরই মাঝে মানুষ খাসি খাওয়াও কমিয়ে দিয়েছে। ২০১৮ সালে ১৬ লাখ ৯১ হাজার (২২ হাজার টন মাংস) খাসি জবাই হয়েছিল, ২০২০-২১ তা কমে ১১ লাখে (১৫ হাজার টন) হয়েছে।

এদিকে, কেরালা, তামিলনাড়ু, মেঘালয়ের মতো রাজ্যগুলোর তুলনায় পশ্চিমবঙ্গের মানুষ অনেক কম গরুর মাংস খেয়েছেন। রিপোর্ট বলছে, ২০২০-২১ সালে ১৭ হাজার টন মাংস খেয়েছেন এ রাজ্যের মানুষ। যদিও একইসময়ে পশ্চিমবঙ্গের তুলনায় কর্ণাটকের মানুষ আরো কম মাংস খেয়েছেন। কর্ণাটকের মানুষ মোট ১২ হাজার টন মাংস খেয়েছেন।

এখন মানুষ এত বেশি মাংস খাচ্ছেন কেন? এই ব্যাপারে কোট্টায়ামের এমজি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ ফুড সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির অধ্যাপক এবং পরিচালক ডা. জিশা এমএস বলেন, জনসাধারণের মধ্যে একটি ধারণা রয়েছে যে সমস্ত সবজি কীটনাশক দিয়ে তৈরি হচ্ছে। এর দরুণ টাটকা জীবাণুমুক্ত সবজি খাওয়ার জন্য, অনেকেই নিজে থেকে জৈব সবজি চাষ শুরু করতে বাধ্য হয়েছিলেন। কিন্তু এর পিছনে সময় দেওয়া সম্ভব হয়নি। তাই মানুষ দ্রুতই এতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিল। তাছাড়া মানুষ এখন প্রোটিন-সমৃদ্ধ খাবার সম্পর্কে আরো সচেতন হয়েছে। আর বেশিরভাগ মানুষই এখন কাজ করছেন। মাংস রান্না করা অত্যন্ত সহজ। তাই মাংসের দিকে ঝুঁকছেন মানুষ।