প্রথম দফায় ফ্রান্সের পার্লামেন্ট নির্বাচনে উগ্র ডানপন্থীরা বড় ব্যবধানে জয়ী হয়েছে। প্রথম ধাপের ভোটের পর প্রাথমিক জরিপে দেখা যায়, মারিন লে পেনের উগ্র ডানপন্থী ন্যাশনাল র‍্যালি (আরএন) পেয়েছে ৩৪.৫ শতাংশ ভোট। 

দ্বিতীয় স্থানে বামপন্থী নিউ পপুলার ফ্রন্ট অ্যালায়েন্স ২৮.৫ থেকে ২৯.১ শতাংশ। আর ক্ষমতাসীন ম্যাক্রোঁর জোট পেয়েছে মাত্র ২০.৫ থেকে ২১.৫ শতাংশ। ক্ষমতাসীনদের যে কি পরিণতি হতে চলছে তা ভালোভাবেই অনুমেয়।

এদিকে, ফ্রান্সের নির্বাচনের প্রথম ধাপের ফলাফলের পর দেশটিতে বসবাসকারী ইহুদিদের মধ্যে ভয়ংকর রকমের অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছে। এই অস্থিরতার ফলে তারা এখন দলে ইসরাইলে চলে যেতে পারে বলে প্রখ্যাত এক বিশেষজ্ঞ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

জরিপ সংস্থাগুলোর হিসাব অনুযায়ী, আরএন ৫৭৭ আসনের পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পাবে। কিন্তু দ্বিতীয় রাউন্ডের পর তারা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় ২৮৯ আসন পাবে কি না, তা এখনো পরিষ্কার না।

যদিও সংস্থাগুলোর হিসাবে ভিন্নতা আছে। ইপসসের পূর্বাভাস অনুযায়ী আরএন পাবে ২৩০ থেকে ২৮০ আসন; ইফপের হিসাব হচ্ছে ২০৪ থেকে ২৭০; এবং এলাব একমাত্র সংস্থা যারা আরএনের আসন সংখ্যা ২৬০ থেকে ৩১০-এর মধ্যে দেখেছে।

আর ফলাফলের পরিপ্রেক্ষিতে কোয়েলিটা অ্যাসোসিয়েশন ফর দি এবজরবেশন অ্যান্ড এনকারেজমেন্ট অব জিউশ ইমিগ্রেশন বা আলিয়াহর সিইও অ্যারিয়েল কান্ডেল টাইমস অব ইসরাইলকে বলেছেন, 'এখন প্রায় ৫০ হাজার ফরাসি ইহুদি ফ্রান্স ত্যাগের কথা ভাবছে।' খবর টাইমস অব ইসরাইল, ভয়েস অব আমেরিকা এবং অন্যান্য।

উল্লেখ্য, আরএনের সভাপতি জর্ডান বরদেল্লা এবং এর শীর্ষ আইনপ্রণেতা মারিন লে পেন ধর্মীয় উপাসনায় সরকারি অবস্থান সীমিত করতে চান। দলটির মুসলিমবিরোধী অ্যাজেন্ডার অংশ হিসেবেই তারা ইহুদিদেরও সংযত করতে চায়। তারা বিদেশে বসবাসকারী নাগরিকদের পেনসন সুবিধাও সীমিত করতে চায়।

শুধু তাই নয়, অনেক সমালোচক আরএনকে অ্যান্টিসেমিটিক হিসেবে অভিহিত করেছেন। তবে অনেকে এই অভিমতের সঙ্গে একমত নয়।

যেমন কান্ডেল বলেন, যদি জ্যাঁ-লাক মেলেনচোনের নেতৃত্বে উগ্র বামরা ক্ষমতায় আসে, তবে ইহুদিদের ফ্রান্স ত্যাগের আরো প্রবল তাগিদ সৃষ্টি হবে। কারণ অনেক ইহুদিই মেলেনচোনকে অ্যান্টিসেমিটিক বিবেচনা করে।

আরএনের মূল এজেন্ডা, দলটি তীব্রভাবে অভিবাসন-বিরোধী। দুই রাউন্ডের ভোট দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ফ্রান্সে প্রথমবার উগ্র ডানপন্থীদের ক্ষমতায় আনতে পারে। এতে করে দলটির নেতা লে পনের শিষ্য ২৮-বছর বয়স্ক জর্ডান বরদেল্লা সরকার গঠনের সুযোগ পেতে পারেন।