Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশিদের কটাক্ষ করা লেবার নেতা এখন যা বলছেন

ডেস্ক রিপোর্ট

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৪, ১২:৫৬ পিএম

বাংলাদেশিদের কটাক্ষ করা লেবার নেতা এখন যা বলছেন

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাজ্যে এক নির্বাচনী বিতর্কে অংশ নিয়ে অবৈধ অভিবাসী বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে বাংলাদেশিদের কটাক্ষ করে ব্যাপক তোপের মুখে পড়েছেন লেবার পার্টির নেতা স্যার কিয়ার স্টার্মার।

পরে বাংলাদেশি একটি টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দেন স্টার্মার। বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলকভাবে কিছু বলেননি দাবি করেন লেবার এই নেতা বলেন, ‘আমার দ্বারা কোনো ধরনের মন খারাপের ঘটনা তৈরি হওয়ার বিষয়ে আমি খুবই উদ্বিগ্ন। নিশ্চিত করে বলতে পারি সেটা আমার উদ্দেশ্য ছিল না। আমি কাউকে উদ্দেশ্য করে বা কাউকে আঘাত করতে চাইনি। তারপরও যা ঘটেছে তার ব্যাপারে আমি উদ্বিগ্ন।’ গতকাল শুক্রবার (২৮ জুন) যুক্তরাজ্যের দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশি কমিউনিটি ও লেবার পার্টির সম্পর্ক নিবিড়। ঐতিহাসিকভাবে সে সম্পর্ক নিবিড় এবং আমার সঙ্গেও বাংলাদেশি কমিউনিটির সম্পর্ক নিবিড়। বিশেষ করে আমার নিজের নির্বাচনী আসনেও বাংলাদেশি কমিউনিটির সঙ্গে আমার সুদৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে। যেখানে আমরা সহকর্মী হিসেবে কাজ করি এবং অনেক বন্ধু আছে যাদের সঙ্গে আমি কাজ করি।

নিজের করা মন্তব্যের ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, আমি কেবল ইঙ্গিত করছিলাম যে যদি লেবার পার্টি সরকার গঠন করে তবে সত্যিই আমি মনে করি আমাদের দুই দেশের একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।"

স্যার কিয়ার স্টার্মার আরও বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে আমরা আমাদের সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারব বলে আমি আশা করি। যুক্তরাজ্য এবং বাংলাদেশ কয়েকবছর ধরে একসঙ্গে করা কাজ ইউকে এবং এখানকার বাংলাদেশি কমিউনিটির জন্য উপকারী হবে। এটিই ছিল আমার বক্তব্যের মূল্য কথা এবং আমার সত্যিই এটিই ছিল, অন্য কোনো কারণ ছিল না। 

প্রসঙ্গত: স্থানীয় সময় গত সোমবার (২৪ জুন) যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী দৈনিক ‘ডেইলি সান’নির্বাচন ঘিরে একটি বিতর্ক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেই অনুষ্ঠানে পাঠকদের এক প্রশ্নের জবাবে লেবার পার্টির নেতা কিয়ার স্টার্মার বলেন, এই মুহূর্তে বাংলাদেশের মতো দেশগুলো থেকে যদি কেউ আসে, তাদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে না। কারণ, বর্তমান সরকারের তেমন কোনো প্রক্রিয়া নেই। ক্ষমতায় এলে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে।

স্টার্মারের ওই বক্তব্যের একটি এডিটেড ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যা দেখে মনে হয়েছে তিনি ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের প্রত্যাবাসনের পরামর্শ দিচ্ছেন। মূলত এরপরই সমালোচনা শুরু হয়। 

এদিকে, তার কটাক্ষের প্রতিবাদে পূর্ব লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলে দলটির ডেপুটি লিডার বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সাবিনা আখতার পদত্যাগ করেছেন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পদত্যাগ করে সাবিনা আখতার বলেছেন, ‘দলের নেতা যখন আমার সম্প্রদায়কে একঘরে করে, আমার বাংলাদেশি পরিচয়কে অপমান করে, তখন আমি আর দল নিয়ে গর্ব করতে পারি না।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) পোস্ট করা এক বিবৃতিতে সাবিনা আখতার লিখেছেন, ‘আমি কেবলই লেবার পার্টি থেকে পদত্যাগ করেছি। আমি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কাউন্সিলের প্রথম নারী স্পিকার এবং লেবার পার্টির একজন গর্বিত সদস্য ছিলাম। তবে আমি এই দলটি নিয়ে আর গর্ব করতে পারি না, যখন দলটির নেতা আমার সম্প্রদায়কে একঘরে করে দেয় এবং আমার বাংলাদেশি পরিচয়কে অপমান করে।’ 

তিনি লিখেছেন, ‘আমি সারা জীবন দলকে রক্ষা করেছি এবং এর জন্য খুব গর্বিত ছিলাম। কিন্তু এটা স্পষ্ট, আমার এবং আমার সম্প্রদায়ের কাছে এটি (দলের নেতার মন্তব্য) গ্রহণযোগ্য নয়।’

অন্যদিকে, ব্রিটিশ এমপি জর্জ গ্যালাওয়ে লেবার নেতার এমন মন্তব্যকে বর্ণবাদী আখ্যা দিয়েছেন। এ ছাড়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত লেবার এমপি রুশনারা আলী ও আফসানা বেগমও নিজ দলের নেতার এমন বেফাঁস মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন