পবিত্র কাবাঘরের চাবি রক্ষক ড. শায়েখ সালেহ আল শাইবা মারা গেছেন ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন। স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার (২২ জুন) সকালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

মক্কা ও মদিনার সংবাদ পরিবেশনকারী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসুবুকের ভেরিফায়েড পেজ ‘ইনসাইড দ্য হারামাইন’-এ এই খবর জানানো হয়েছে। খবর আরব নিউজের। 

পেজে দেওয়া এক পোস্টে বলা হয়েছে, মক্কা বিজয়ের পর থেকে ড. সালেহ বিন শাইবা কাবাঘরের ১০৯তম অভিভাবক ছিলেন। তিনি হজরত উসমান ইবনে তালহা রা.-এর বংশধর ছিলেন। বায়তুল্লাহয় জানাজা শেষে তাকে জান্নাতুল মুআল্লায় দাফন করা হবে।

জাহেলি যুগ থেকেই কাবাঘরের চাবি শায়বা গোত্রের কাছে থাকত। মক্কা বিজয়ের দিন রাসুলুল্লাহ সা. নিজেই ওই গোত্রের উসমান ইবনে তালহার (রা.) কাছে চাবি হস্তান্তর করে তাকে সম্মানিত করেন। 

এসময় তিনি বলে দেন, ‘এখন থেকে এ চাবি তোমার বংশধরের হাতেই থাকবে, একেবারে কেয়ামত পর্যন্ত। তোমাদের হাত থেকে এ চাবি কেউ নিতে চাইলে সে হবে জালিম।’

সেই ধারা এখনো চলমান। উসমান ইবনে তালহা রা.-এর বংশধররা পর্যায়ক্রমে চাবি বহন করে আসছেন। তাদের কাছ থেকে চাবি নিয়েই বিভিন্ন সময় সৌদি আরবের বাদশাহ এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ পবিত্র কাবা ঘরে প্রবেশ করে থাকেন। তারাই কাবার দরজা খুলে দেন। নিয়ম অনুযায়ী শায়খ সালেহের মৃত্যুর পর তাই আল শাইবা পরিবারের কাউকেই চাবি রাখার দায়িত্ব দেওয়া হবে। তবে এখন পর্যন্ত এই গোত্র থেকে সুনির্দিষ্ট করে কারও নাম ঘোষণা করা হয়নি। 

উল্লেখ্য, এ পর্যন্ত অসংখ্যবার কাবার তালা-চাবি পরিবর্তন করা হয়েছে। কাবাঘরের চাবি একটি বিশেষ ব্যাগে রাখা হয়। এই ব্যাগটি পবিত্র কাবাঘরের গিলাফ নির্মাণ কারখানায় বানানো হয়। কাবাঘরের চাবি কখনো হারায়নি। তবে বহু বছর পূর্বে এক ব্যক্তি এই চাবি চুরি করেছিল। পরে তাকে আটক করা হয় এবং তার কাছ থেকে কাবাঘরের চাবি ফেরত নেওয়া হয়।

আব্বাসী, আইয়ুবী, মামলুক ও ওসমানিয়া যুগে কয়েকবার কাবাঘর মেরামত করা হয়েছে। তখন প্রয়োজনমতো নতুন তালা-চাবিও বানানো হয়েছে। ২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর সর্বশেষ কাবাঘরের চাবি পরিবর্তন করা হয়। এখনো ওই তালা-চাবি ব্যবহার করা হচ্ছে।