পশু কুরবানি ছাড়াই ঈদুল আজহা পালন নাইজেরিয়ার লাখ লাখ মুসল্লির
প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২৪, ০৭:০৮ এএম
ছবি: সংগৃহীত
জীবন ধারণের ব্যয় বহুগুণ বেড়ে যাওয়ায় নাইজেরিয়ার অনেক মুসল্লির পক্ষে এবার কুরবানি করা সম্ভব হয়নি। ৭৮ বছর বয়সী মাললাম কবিরু টুডুন ওদা তাদের একজন। নাইজেরিয়ার সবচেয়ে বড় শহর কানোতে বসবাস করেন ওদা।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে তিনি বলেন, প্রতিবছরই কুরবানিতে আমি একটি পশু কুরবানি দিয়ে থাকি। কিন্তু এবছর কুরবানি দেয়া আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি।
ওদা বলেন, প্রতি বছরই আমি পবিত্র কুরবানিতে একটি পশু কুরবানি করি। ১৯৭৬ সাল থেকেই আমি এটা করি। কিন্তু এ বছর সম্ভব হয়নি। নাইজেরিয়া অনেক মুসল্লিদের অবস্থা এরকমই।
নাইজেরিয়ার কানোতেই বেশিরভাগ মুসল্লিদের বসবাস। দেশটিতে গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ আর্থিক সংকট চলছে। এর ফলে অনেকের মাঝে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। দেশটিতে বার্ষিক মূল্যস্ফীতি গত তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি এখন, যা বেড়েছে ৩০ শতাংশ। আর খাবারের দাম বেড়েছে ৫০ শতাংশ।
নাইজেরিয়ায় একটি ভেড়ার দাম ১ লাখ নায়রা বা ৬৩ ডলার। যা অনেকের পক্ষে কেনা সম্ভব নয়। ৬৬ বছর বয়সী মাললাম আউয়াল ইয়াসাই বলেন, এ বছর কুরবানি দেওয়ার জন্য একজনকে খুঁজছিলাম। কারণ একার পক্ষে একটি পশু ক্রয় করা সম্ভব নয়। তাই ভাগে কুরবানি দিতে চেয়েছিলাম। শেষ পর্যন্ত দুই জনে মিলে একটি উট কিনেছি।
বর্তমানে নাইজেরিয়ার অর্থনৈতিক অবস্থা এমন করুণ দশায় দাঁড়িয়েছে যে, দেশটির মানুষ শুধুমাত্র খাবারের সন্ধান করছে। তাদের কাছে এখন একটি পশু ক্রয় করা বিলাসিতার সামিল।
নাইজেরিয়ার সরকার বলছে, তারা অর্থনীতিকে ভালো অবস্থার দিকে নিতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। দেশটির ১ কোটি ৫ লাখ দারিদ্র পরিবার জীবন ধারনের জন্য সরকারের কাজ থেকে ২৫ হাজার নায়রা বা ১৬ ডলার পাচ্ছে। তা দিয়ে জীবন ধারণ করা খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে।