বাংলাদেশ নিয়ে ইতালির প্রধানমন্ত্রীর ভয়ঙ্কর অভিযোগ
জর্জিয়া মেলোনি। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়া প্রসঙ্গে ভয়ঙ্কর এক অভিযোগ করেছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি। কূটনীতিকদের বরাতে বাংলাদেশে লাখ লাখ টাকায় শ্রমভিসা বেচাকেনা হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। মঙ্গলবার (৪ জুন) ইতালির মন্ত্রিসভায় বৈঠকের পর এক ভিডিও বার্তায় এই অভিযোগ করনে তিনি।
ইতালির প্রধানমন্ত্রী জানান, দেশটিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে থেকে আসা কর্মীদের সবচেয়ে বড় অংশ আসে বাংলাদেশ থেকে৷ ভিডিওতে ইতালির শ্রমভিসা নিয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন দিয়েছেন জর্জিয়া মেলোনি৷ খবর ডয়চে ভেলের।
জর্জিয়া মেলোনি বলেন, কূটনীতিকরা বাংলাদেশে শ্রমভিসা কেনাবেচার বিষয়টি তুলে ধরেছেন৷ দেশটিতে এক একটি ভিসা ১৫ হাজার ইউরো (প্রায় ১৮ লাখ টাকা) করে বিক্রি হয় বলে জানিয়েছেন তারা।
ইতালির ভিসা ব্যবস্থায় থাকা ফাঁককে কাজে লাগিয়ে বিদেশি কর্মীদের অবৈধভাবে দেশটিতে পাচার করছে অপরাধীচক্র, মাফিয়া বিরোধী প্রসিকিউটরের এ নিয়ে তদন্ত করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, অভিবাসন ইস্যুতে কঠোর অবস্থানের অংশ হিসাবে তার সরকার বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। পাশাপাশি ক্রমবর্ধমান শ্রম ঘাটতি পূরণের অংশ হিসাবেও নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
২০২৩-২০২৫ সময়কালের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের নাগরিকদের শ্রমভিসার কোটা গত বছর বাড়িয়েছে মেলোনি সরকার। এখন এই কোটা চার লাখ ৫২ হাজার৷ আগের তিন বছরের তুলনায় এ সংখ্যা প্রায় ১৫০ শতাংশ বেশি৷ ২০১৯ সালে করোনা মহামারির আগে ইতালি মাত্র ৩০ হাজার ৮৫০টি ভিসা ইস্যু করেছিল।
মেলোনি বলেন, ভিসাগুলো তদন্ত করতে গিয়ে কিছু ‘আতঙ্কজনক' তথ্য পাওয়া গেছে৷ দেখা গেছে, কিছু অঞ্চল থেকে (বিশেষ করে কাম্পানিয়ার দক্ষিণাঞ্চল) সম্ভাব্য নিয়োগকর্তার সংখ্যার তুলনায় অনেক বেশি পরিমাণে আবেদন করা হয়েছে।
মেলোনির দপ্তর থেকে পাঠানো এ সংক্রান্ত এক বক্তৃতায় বলা হয়েছে, ‘এত বেশি সংখ্যক আবেদনের বিপরীতে কাজের ভিসা পাওয়া বিদেশিদের মধ্যে খুব কম সংখ্যক কাজের চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন৷ কাম্পানিয়াতে এর হার তিন শতাংশেরও কম।’
তিনি জানান, এই ঘটনাই প্রমাণ করে যে, ‘সংগঠিত অপরাধচক্র' প্রায় ১৫ হাজার ইউরোর বিনিময়ে ইতালিতে প্রবেশের অধিকার নেই, এমন অভিবাসীদেরও ভিসা পাওয়ার জন্য আবেদনের ব্যবস্থা করেছে।
দেশটির মাফিয়াবিরোধী তদন্তকারীদের এ বিষয়ে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মেলোনি। ১৩ থেকে ১৫ জুন ইতালিতে জি-সেভেন এর শীর্ষ সম্মেলনের পর এই অনিয়ম রোধে নতুন ব্যবস্থা পাস করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি।
এদিকে, ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে এখন পর্যন্ত সমুদ্রপথে ইতালিতে পৌঁছানো অনিয়মিত অভিবাসীর সংখ্যা ২১ হাজার ৫৭৪ জন৷ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এই সংখ্যা অর্ধেকেরও কম।