আগামী শনিবার তৃতীয়বারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ জন্য আজ বুধবার রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন মোদি। শনিবার শপথ নিলে ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর পর মোদিই হতে যাচ্ছেন তিন মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা ব্যক্তি।
এবারের নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি নরেন্দ্র মোদির বিজেপি। ২০১৪ সালে ২৮২ এবং ২০১৯ সালে ৩০৩টি আসন পাওয়া বিজেপি এবার পেয়েছে ২৪০টি আসন। তাই মোদিকে এবার সরকার গঠনের জন্য আরও ৩২টি আসন নিশ্চিত করতে শরিকদের কাছে যেতে হবে। জোট সঙ্গীরা বড় ভূমিকা পালন করবে। বিজেপির জোট এনডিএ পেয়েছে ২৯৫টি আসন।
উত্তর প্রদেশের বারাণসিতে মোদি তাঁর লোকসভার আসন ধরে রেখেছেন। কংগ্রেসের অজয় রাইকে দেড় লাখের কম ভোটে পরাজিত করে বারাণসি থেকে তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য হলেন তিনি।
ভোটের প্রচারে নরেন্দ্র মোদি বারবার ‘আবকি বার, ৪০০ পার’ স্লোগান তুলেছেন। কিন্তু সে আশা পূরণ হয়নি। আড়াই শও পার করতে পারেনি বিজেপি। এবারের নির্বাচনে বেশ চমক দেখিয়েছে গত দুই লোকসভা নির্বাচনে বাজে ফলাফল করা কংগ্রেসও। দলটি ৯৯টি আসন পেয়েছে।
তবে কোনো দলই এক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়া জোট সরকার গঠনের দিকেই যেতে হচ্ছে। আর এ ক্ষেত্রে বিহারের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ও জনতা দলের (ইউনাইটেড) নেতা নিতীশ কুমার এবং অন্ধ্র প্রদেশের তেলেগু দেশাম পার্টির নেতা চন্দ্রবাবু নাইড়ু ‘কিং মেকারের’ ভূমিকা পালন করবেন বলে জল্পনাকল্পনা ছিল।
তবে এনডিএ শিবিরের প্রতি সমর্থনের স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন টিডিপি প্রধান চন্দ্রবাবু নাইডু। আজ বুধবার নয়াদিল্লিতে এনডিএ শিবিরের বৈঠকে যোগ দেওয়ার আগে অন্ধ্র প্রদেশের বিজয়ওয়াড়াতে সংবাদ সম্মেলন করে নাইডু ঘোষণা দেন, ‘আমরা এনডিএ জোটেই আছি।’
জোট হিসেবে এনডিএর দখলে গেছে ২৯৫টি আসন এবং বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়ার’ দখলে গেছে ২৩১টি আসন। এ ছাড়া অন্য দলগুলো ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মিলে পেয়েছে ১৭টি আসন। তবে দল হিসেবে এককভাবে সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছে বিজেপি। দলটির দখলে গেছে ২৪২টি আসন। এরপর জোটসঙ্গী দলগুলোর মধ্যে তেলেগু দেশম পার্টি পেয়েছে ১৬টি এবং বিহারের নিতীশ কুমারের দল জনতা দল (ইউনাইটেড) পেয়েছে ১২টি আসন।
হিন্দুত্ববাদের ধার আর মোদি ম্যাজিকে ধস, একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাতে বসেছে বিজেপিহিন্দুত্ববাদের ধার আর মোদি ম্যাজিকে ধস, একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাতে বসেছে বিজেপি
কংগ্রেসের নেতৃত্বে বিরোধী জোট ইন্ডিয়া পেয়েছে ২৩১টি আসন। এই ২৩১ আসনের মধ্যে কংগ্রেস এককভাবে পেয়েছে ৯৮টি আসন। জোট শরিক উত্তর প্রদেশের সমাজবাদী পার্টি পেয়েছে ৩৬টি, পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছে ২৯টি, দ্রাবিড়া মুনেত্রা কাজাগাম পেয়েছে ২২টি আসন। এর বাইরে শিব সেনা (উদ্ধব ঠাকরে) পেয়েছে ৯টি আসন। শারদ পাওয়ারের ন্যাশনাল কংগ্রেস পার্টি পেয়েছে ৮টি আসন।