আইসিসির প্রসিকিউটরকে হুমকি দিয়েছিলেন মোসাদ প্রধান
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান প্রসিকিউটর ফাতৌ বেনসুদাকে হুমকি দিয়েছিলেন ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সাবেক প্রধান ইয়োসি কোহেন। সূত্রের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (২৮ মে) দ্য গার্ডিয়ান এ তথ্য জানিয়েছে। আর মোসাদের এ কর্মকাণ্ডে ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর সাবেক প্রেসিডেন্ট জোসেফ কাবিলা সহযোগিতা করেছিলেন বলে জানা গেছে।
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, বেশ কয়েক বছর ধরে একাধিক গোপন বৈঠকে আইসিসির প্রধান প্রসিকিউটর ফাতৌ বেনসুদাকে হুমকি দিয়েছিলেন ইয়োসি কোহেন। বেনসুদা এসব হুমকির কারণে ২০২১ সালে গাজা, পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে যুদ্ধাপরাধের তদন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে শুরুর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। গত সপ্তাহে এই তদন্ত শেষ হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ আইসিসির প্রসিকিউটর করিম খান ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট এবং তিন হামাস নেতার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছেন।
মোসাদের সাবেক প্রধানের এই হুমকির পেছনে ইসরায়েল সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সায় ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ ইসরায়েলি সেনাদের বিচারের মুখোমুখি করতে আইসিসিকে একটি হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে তেল আবিব। ফলে এই হুমকি তাদের নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
অপর এক ইসরায়েলি সূত্র দাবি করেছে, এই হুমকির উদ্দেশ্য ছিল বেনসুদাকে তদন্ত না করতে রাজি করানো অথবা তার সহযোগিতা লাভ করা।
চারটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, বেনসুদা কোহেনের ক্রমাগত এবং হুমকিমূলক আচরণ সম্পর্কে আইসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেছেন।
অভিযোগ রয়েছে, কোহেন বেনসুদাকে বলেছেন, ‘আপনার উচিত আমাদের সহযোগিতা করা। এমন কিছুতে আপনার জড়ানো উচিত হবে না যার ফলে আপনার বা আপনার পরিবারের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ে।’
একটি সূত্র কোহেনের এই কৌশলকে ‘ঘৃণামূলক’ হিসেবে বর্ণনা করেছে। মোসাদ কর্মকর্তার কৌশলের মধ্যে ছিল, বেনসুদার বদনাম করার জন্য তার পরিবার সম্পর্কে গোপনে পাওয়া তথ্য ব্যবহারের হুমকি।
এদিকে এ খবর সামনে আসার পর আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। অপরদিকে ইসরায়েল সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা একে ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করেছে। আর কোহেন ও বেনসুদার কেউ এই বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি।