প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও হজের আগে পবিত্র কাবা শরিফের কিসওয়া (গিলাফ) মাটি থেকে তিন মিটার ওপরে উঠানো হয়েছে। আর সেই অংশটুকু সাদা কাপড়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার (২২ মে) সন্ধ্যায় ১০ ক্রেন, ৩৬ বিশেষ কর্মী দিয়ে কিসওয়া উপরে তুলে সেই অংশটুকু সাদা কাপড়ে ঢেকে দেওয়া হয়।
প্রতিবছরের মতো ১৫ জিলকদ গতকাল বুধবার হজের প্রস্তুতি হিসেবে এটি করা হয়েছে। মূলত হজের সময় পবিত্র মসজিদে হারামে বেশ কিছু পরিবর্তন আসে। কাবা ঘরের কালো গিলাফের কিছু অংশ ওপরে উঠিয়ে রাখা এর অন্যতম। এর বদলে একটি সাদা কাপড় ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। সেই কাপড়টি আড়াই মিটার চওড়া এবং চার দিকে ৫৪ মিটার দীর্ঘ।
জানা গেছে, ইসলামের সূচনাকাল থেকে হজের সময় কাবার গিলাফ সুরক্ষায় এই রীতি চলে আসছে। অতীতে গিলাফের কিছু অংশ হাতের কাছে পেয়ে কিছু অংশ কেটে ফেলার ঘটনা ঘটে। গিলাফটি যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য প্রতিবছর হজের আগে এটি ওপরে তুলে দেওয়া হয়। কারণ কাবা প্রদক্ষিণের সময় অনেক হাজি এটি স্পর্শ করার চেষ্টা করেন। তাদের অনেকে একটি ভুল ধারণা পোষণ করেন যে, যদি কাবার গিলাফ স্পর্শ করা যায় তাহলে বাড়তি সওয়াব পাওয়া যাবে।
রীতি অনুযায়ী ৯ জিলহজ পর্যন্ত সাদা কাপড় থাকবে। এরপর হজের দিন নতুন গিলাফ লাগানো হয়।
কিসওয়া:
প্রতিবছর কিসওয়া তৈরিতে বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয় হয়। এতে ৬৭০ কেজি বিশুদ্ধ সিল্ক, ৭২০ কেজি রং ও অ্যাসিড ব্যবহার করা হয়। কিসওয়ার ৪৭টি অংশ আলাদাভাবে তৈরি হয়ে থাকে। একেক অংশ ১৪ মিটার লম্বা ও ৯৫ সেন্টিমিটার চওড়া হয়ে থাকে। পুরো কিসওয়ার ক্ষেত্রফল ৬৫০ বর্গমিটার। প্রতি পাশে সুরা ইখলাস স্বর্ণাক্ষরে খচিত থাকে। বাকি আয়াতের অংশগুলো তার নিচে বোনা হয়। প্রায় ১২০ কেজি সোনা-রূপা ব্যবহার করা হয়।