Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে রাইসি নিহত : ইরানের বিমানখাতে সঙ্কটের পেছনে কি নিষেধাজ্ঞা?

ডেস্ক রিপোর্ট

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ২১ মে ২০২৪, ০৪:২৬ এএম

হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে রাইসি নিহত : ইরানের বিমানখাতে সঙ্কটের পেছনে কি নিষেধাজ্ঞা?

ইরানে প্রায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনা ঘটে। ১৯৭৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ইরান ২৫৩টি বিমান দুর্ঘটনা হয়েছে। এসব ঘটনায় ৩ হাজার ৩৩৫ জন নিহত হয়েছে। আর সর্বশেষ গত রবিবার যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি বেল-২১২ মডেলের হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ানসহ ৮ জন। দেশটিতে বারবার বিমান বিধ্বস্তের কারণ হিসেবে পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞাকে সরাসরি দায়ী করা হয়। 

২০ মে প্রকাশিত কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরান এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রি পরিচালনার ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরেই হিমশিম খাচ্ছে। এর অন্যতম কারণ দেশটি বিমানের পরিষেবা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পায় না। কারণ ইরানের বিমান বহরের বেশিরভাগই ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের আগে কেনা। আর ১৯৭৯ সালের বিপ্লবের পর থেকে ইরানের বিরুদ্ধে কোনো না কোনোভাবে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। পশ্চিমারা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় এই খাতে আধুনিকায়ন হয়নি তেমন।

যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি বেল-২১২ মডেলের হেলিকপ্টারটি কয়েক দশকের পুরানো। নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরান নতুন বিমান বা সরঞ্জাম কিরতে পারেনি। কেবল নতুন আকাশযান কেনায় বাধা নয়, নিষেধাজ্ঞার কারণে সংস্কার বা মেরামতও করা যাচ্ছে না হেলিকপ্টার কিংবা বিমানের বহর। হালনাগাদ করা যাচ্ছে না সফটওয়্যার। নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি বা চীন-রাশিয়া থেকে কেনা যন্ত্রাংশ দিয়ে জোড়াতালি দিয়ে পরিচালনা করা হয় বিমান বা হেলিকপ্টারগুলো। যার কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে।

যান্ত্রিকভাবে দুর্বল ও পুরোনো প্রযুক্তির কারণে গত কয়েক দশকে ভয়াবহ অনেকগুলো বিমান দুর্ঘটনা দেখেছে ইরান। এর মধ্যে, ১৯৮০ সালের ২১ জানুয়ারি ইরানের পতাকাবাহী বোয়িং 727-100 তেহরানের আলবোর্জ রেঞ্জের একটি পাহাড়ের ঢালে আঘাত হানে। ওই বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ১২৮ যাত্রী নিহত হয়। ১৯৮৬ সালের ৩ নভেম্বর ইরানের লকহিড C-130 বিমান বিধ্বস্ত হয়। এ সময় ১০৩ যাত্রী নিহত হন। এর মধ্যে সেনা সদস্য ছিলেন ৯৬ জন। 

১৯৮৮ সালের ১৩ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস ভিনসেন্স থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ধ্বংস করা হয় একটি ইরানী যাত্রীবাহী বিমান। এতে নিহত হয় ২৯০ জন আরোহীর সবাই। এছাড়া বেশ কয়েকটি বড় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ইরানের বিমান ও হেলিকপ্টার।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৭৯ সালে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর থেকে নতুন বিমান আমদানি করতে না পারার পর ইরানের বিমান খাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইরান ১০৮০, ১৯৯০ এবং ২০০০ দশকের গোড়ার দিকে মারাত্মক বিমান দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিল। 

২০১৯ সালের এপ্রিলের তথ্য অনুযায়ী, ২৩টি ইরানী এয়ারলাইন্স দেশে ৩০০টির মধ্যে বিমানের মধ্যে মাত্র ১৫৬টি পরিচালনা করছিল। প্রায় অর্ধেক বিমান মেরামতের অভাবে উড়তে পারেনি। আবার মেরামতের জন্য ঘন ঘন ইরানে বিমানের টিকিটের দাম বাড়ানো হয়েছে। এতে ছোট বিমান সংস্থাগুলোর ওপর অর্থনৈতিক চাপ ফেলেছে। 

২০২২ সালে ইরানের সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের প্রধান মোহাম্মদ মোহাম্মদী-বখশ বলেন, আমাদের সীমিত বিশেষজ্ঞ জনবল রয়েছে। আবার বিমানগুলো মেরামতের জন্য বিদেশে পাঠানো যাবে না। নিষেধাজ্ঞার কারণে তারা সমস্যায় রয়েছে। 

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন