Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

ভয়াবহ আর্থিক সংকটেও কীভাবে যুদ্ধবিমান-সাবমেরিন কিনছে পাকিস্তান?

ডেস্ক রিপোর্ট

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৪, ০৩:৪০ এএম

ভয়াবহ আর্থিক সংকটেও কীভাবে যুদ্ধবিমান-সাবমেরিন কিনছে পাকিস্তান?

ছবি: সংগৃহীত

ভয়াবহ আর্থিক সংকটে বিপর্যস্ত পাকিস্তান। শুধু বিদেশি ঋণই আছে দেশটির ১২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও ভয়াবহ রকমের কম। কিন্তু এমন ভয়াবহ আর্থিক সংকটের মধ্যে থেকেও দেশটি ধারাবাহিকভাবে সামরিক সক্ষমতা বাড়িয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে চীনের কাছ থেকে অস্ত্র আমদানি করছে এবং সামরিক খাতে সহযোগিতা পেয়ে যাচ্ছে। টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে।   

স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এসআইপিআরআই) এক প্রতিবেদেনে বলা হয়েছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের আমদানি করা অস্ত্রের ৮২ শতাংশই চীন থেকে করেছে। যা দেশ দুটির মধ্যে সামরিক সম্পর্ক যে ক্রমশ গভীর হচ্ছে তারই ইঙ্গিত বহন করে। যুদ্ধ বিমান, ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি ও ড্রোন দিয়ে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীকে শক্তিশালী করায় চীন বড় ধরনের ভূমিকা রাখছে। 

ইউরএশিয়ান টাইমসে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়, এটা হলো কোয়াডসহ (ভারত কোয়াডের সদস্য) পশ্চিমাদের অন্যান্য আঞ্চলিক জোটের শক্তি ও প্রভাবে ভারসাম্য তৈরির চীনা কৌশলের অংশ।

 ২০১৫ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের পাকিস্তান সফরের সময় একটি চুক্তি হয়। ওই চুক্তির আওতায় পাকিস্তানকে ৮টি হাঙ্গর শ্রেণির সাবমেরিন নির্মাণ করে দেওয়ার কথা চীনের। এই সাবমেরিন প্রসঙ্গে পাকিস্তান নৌ বাহিনীর প্রধান এডমিরাল নাভিদ আশরাফ বলেন, এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এই সাবমেরিন অগ্রণী ভূমিকা রাখবে। এ ছাড়া এটি সর্বদা পরীক্ষিত পাকিস্তান-চীন বন্ধুত্বে নতুন মাত্রা যোগ করবে। বিশ্লেষকদের মত, এই চুক্তি চীনের সীমান্ত কৌশলের অংশ যার মাধ্যমে দেশটি পশ্চিমাদের কোয়াড এবং অন্যান্য জোটের প্রভাবে ভারসাম্য রক্ষা করে। 

এদিকে, সামরিক এই সক্ষমতা বৃদ্ধির মধ্যেই পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সংকট দিনকে দিন তীব্র হয়। সেই তীব্রতা আরও ঘনীভূত হয় গত বছরের দেশব্যাপী হওয়া ভয়াবহ বন্যা। যার ফলে দেশটির সম্ভাব্য প্রবৃদ্ধির হার ৫ শতাংশ থেকে শূন্য দশমিক ২৯ শতাংশে নেমে যায়। পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সংকটের একটি চিত্র পাওয়া যায় ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের এক মন্তব্য প্রতিবেদনে। সেখানে বলা হয়, জনগণের জন্য খাবার কিনতে পারেন না  পাকিস্তান, কিন্তু অস্ত্র ঠিকই কেনে। 

জাতীয় বাজেটেও সামরিক খাতে ১৫.৪ শতাংশ ব্যয় বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং মোট ১৮০৪ বিলিয়ন রুপি ব্যয় ধরা হয়েছে। যদিও দেশটিতে আকাশচুম্বী মুদ্রাস্ফীতি হিমশিম খাচ্ছে। 

দেশটির সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে ওষুধ ও খাবারের মতো মৌলিক পণ্যগুলোর ঘাটতির কথা বলা হয়েছে। সবমিলিয়ে দেশটির এই অর্থনৈতিক সংকট জনসাধারণের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি করছে প্রতিনিয়ত। পাকিস্তানের অনেকে মনে করেন দেশের প্রকৃত ক্ষমতা দেশটির সেনাবাহিনীর কাছে। কারণ তারা বাজেটের বিরাট একটা অংশ নিয়ে নেয়। আবার নিজেরা লাভজনক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালায়। আর এই ধারণা এখন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও আলোচিত হচ্ছে। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কথা বলা যায়। সংস্থাটি বেসামরিক প্রয়োজনীয়তার তুলনায় অসামজঞ্জস্যভাবে সামরিক বরাদ্দের দিকটি সামনে নিয়ে এসেছে।  

এদিকে, নতুন এক বিতর্কে জড়িয়েছে পাকিস্তান। সম্পতি বিবিসিসহ অন্যান্য সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেন সংঘাতে পাকিস্তান সরকার নিরপেক্ষ থাকলেও গোপনে দেশটি ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের চাপে পড়ে গোপন চুক্তিকে আবদ্ধ হয় দেশটি। যে চুক্তি দেশটির নিরপেক্ষ থাকার ঘোষণার লঙ্ঘন করে এবং অস্ত্র বিক্রির মাধ্যমে আর্থিক লাভও এনে দিয়েছে। 

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন