লিওনেল মেসি। ছবি: সংগৃহীত
শুভ জন্মদিন এই কালের ফুটবলের মহাতারকা। আরো এক বছর বেড়ে গেল লিওনেল মেসির বয়স। আনন্দের সাথে আছে হতাশাও। তার ফুটবল জীবন যে শেষের দিকে আরো খানিকটা এগিয়ে গেল! তবে আপাতত সেসব না ভেবে উৎসবে সামিল মেসির ভক্তরা।
শুভেচ্ছা বার্তা আসছে ঘনঘন। মধ্যরাত থেকে দলের হোটেলে উৎসবের আবহ। কোপা আমেরিকায় আগামী মঙ্গলবার প্রতিপক্ষ চিলি। সমীহ করার মতো ফুটবল শক্তি। তবু সোমবার আর্জেন্টিনার ফুটবলাররা উৎসবে মেতে। কেন্দ্রে অবশ্যই লিওনেল মেসি।
৩৬ বছর পূর্ণ হলো আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী তৃতীয় অধিনায়কের। কোপাতেও দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। দেশের হয়ে আগামী বিশ্বকাপ খেলা অনিশ্চিত। জন্মদিনের সময় এত বড় ফুটবলের আসর আর নাও আসতে পারে ফুটবলার মেসির জীবনে।
কোচ লিয়োনেল স্কালোনিও তো মেসিভক্ত। এক সময় ছিলেন সতীর্থ। দলের সাফল্যের জন্য অনেকটাই নির্ভর করেন প্রবীণ ফুটবলারের ওপর। ২৪ ঘণ্টা পর গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ থাকলেও মেসিকে ঘিরে ফুটবলারদের উৎসবে বাধা দেওয়ার ক্ষমতা বা ইচ্ছা নেই তার।
বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীদের দু’ভাগ করে দিয়েছেন মেসি। এক ভাগকে নিজের ভক্ত করে তুলেছেন। আর একটি দল আছে, যারা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ভক্ত। তারা মেসিকে পছন্দ না করলেও উপেক্ষাও করতে পারেন না। বিশ্ব ফুটবলের মানচিত্রে কার দখলদারি বেশি, তা নিয়ে তর্ক হতে পারে। তুল্যমূল্য বিচার হতে পারে। কিন্তু সাফল্যের পরিসংখ্যানে রোনালদোকে পেছনে ফেলে দিয়েছেন আর্জেন্টিনার অধিনায়ক।
মেসির একটা বিশ্বকাপ আছে, রোনালদো এখনও সফল হননি। কাতারে বিশ্বকাপ জয়ের আগে এবং পরের পরিস্থিতি ভিন্ন। মেসি তখনও জাতীয় নায়ক ছিলেন আর্জেন্টিনায়। এখনো আছেন। তখন ছিলেন ‘ট্র্যাজিক হিরো’। এখন তিনি ‘সুপার হিরো’। তাই তার জন্মদিন ঘিরে মানুষের উন্মাদনা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।
আর্জেন্টিনার ফুটবল জনতা কখনো আশা ছাড়েননি মেসিকে নিয়ে। মেসি তাদের ভরসার মর্যাদা দিয়েছেন বিশ্বকাপের মঞ্চে। ১৯৮৬ সালের পর ২০২২। ৩৬ বছরের ব্যবধানে দেশকে বিশ্বকাপ দিয়েছেন মেসি। তার নিজের বয়সও এবার ৩৬।
আর একটা বিশ্বকাপ এক বছর পর। মেসি সর্বোচ্চ পর্যায় খেলার মতো ফিট থাকবেন কিনা, এখনই বলা সম্ভব নয়। তাই কোপা আমেরিকার ট্রফিটা আরো একবার তার হাতে তুলে দিতে চান আর্জেন্টিনার ফুটবলারেরা। সেটাই হবে মেসির জন্মদিনের সেরা উপহার।
গতবারের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে কোপা আমেরিকা খেলছে আর্জেন্টিনা। প্রতিযোগিতার শেষেও মেসির মাথায় বিজয়ীর তাজ দেখতে চান ফুটবলপ্রেমীরা। এবারের প্রতিযোগিতায় সবচেয়ে বড় আকর্ষণ মেসিই। তিনি না থাকলে আগ্রহও থাকবে না। পৃথিবীর অন্য প্রান্তে চলছে ইউরো কাপ। জনপ্রিয়তা, আকর্ষণ, আগ্রহের লড়াইয়ে ইউরোপের ফুটবলকে একাই চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন লাতিন আমেরিকার মেসি।
ফুটবলপ্রেমীদের প্রত্যাশার শেষ নেই। মেসি জেতাবেন, এই বিশ্বাস নিয়েই তারা মাঠে যায়। ৩৬ বছর পূর্ণ করে ফেলা মেসিকে আটকাতে এখনো প্রতিপক্ষ দলের কোচেদের মাথা খাটাতে হয়। বিপক্ষের দু’জন, তিনজন ফুটবলারকে একাই ব্যস্ত করে রাখেন মেসি। তাতে তার সতীর্থদের খেলা সহজ হয়। মাঠে তুলনায় বেশি ফাঁকা জায়গা পেয়ে যান।
আর্জেন্টিনা শিবিরকে মেসির জন্মদিন ঘিরে কী কী আয়োজন হয়েছে, তা গোপন রাখা হয়েছে। মেসিকেও আগে জানানো হয়নি। তারা আসল উপহার দিতে চান ১৪ জুলাই রাতে।
জন্মদিনে মেসি কী চান? জানা নেই ভক্তদের। তারা চান আর একটা কোপা আমেরিকা। আরো কয়েক বছর বিশ্ব ফুটবলে মেসির শাসন।