গরমে শিশুদের জন্য কী করবেন
অল্পকিছু পদক্ষেপই অনেক উপকারী
আরামদায়ক পোশাক। কটন বা সুতি কাপড়ের শার্ট/টি-শার্ট বেশি আরামদায়ক। হাল্কা বুনন, হাল্কা রঙ, এক রঙের কাপড় বিশেষ উপযোগী। বাসায় বা স্কুলে বা ঘরের বাইরে যেকোনো উপলক্ষে। হাতাকাটা শার্ট/গেঞ্জি ও হাফ প্যান্ট।
প্যান্ট বা
হাফ প্যান্ট যা-ই হোক
না কেন, তা হবে হাল্কা বুনন,
হাল্কা রঙ, এক রঙের। এতে সহজে বাতাস চলাচল করতে পারে।
পাতলা হবে
অবশ্যই। মোটা কাপড়ে গরম জমে। কটন বা সুতি কাপড় বা অন্য কোনো গরমের আরামদায়ক কাপড় হতে
পারে।
কাপড়
ঢিলেঢালা হলে তা বাতাস চলাচলের
জন্য বেশি উপযোগী হয়।
বাইরে গেলে
রোদ এড়িয়ে চলতে হবে। এ ক্ষেত্রে ফুল হাতা শার্ট/প্যান্ট ভাল হয়। ছাতা ব্যবহার করা যেতে
পারে।
রোদ
এড়ানোর জন্য ইনডোর গেমের ব্যবস্থা চাই। স্কুলে বা বাসায়।
স্কুলে
যাওয়ার অন্তত ৩০ মিনিট আগে
বাচ্চার শরীরের উন্মুক্ত অংশে সানস্ক্রিন লাগিয়ে দিতে পারেন। ছোট থেকে অভ্যাস করানো হলে তারা নিজেরাই সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে শিখবে।
প্রতিবার
ঘর্মাক্ত হওয়ার দুই ঘণ্টা পর সানস্ক্রিন দিতে
পারেন। স্কুলে খেলাধুলার পর যাতে শিশুরা সানস্ক্রিন
ব্যবহার করে তা তাদের
মনে করিয়ে দিন।
কানের
পেছনটা, ঘাড়, হাত ও পায়ের উল্টো
পিঠে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে
ভুলবেন না।
ছাতা
স্কুলে
যাওয়া ও আসা নিয়ে
প্রতিদিনই বাচ্চাদের একটি উল্লেখযোগ্য সময় রোদে কাটাতে হয়। এই সময়টিতে শুধু
সানস্ক্রিনের উপর নির্ভর করা যথেষ্ট নয়। ছাতা বিশেষ উপকারী। হালকা রঙের ছাতাই ভালো।
ঘর
ঠান্ডা রাখুন
হলুদ
ও হ্যালোজেন বাল্ব প্রচুর তাপ উৎপন্ন করে। এলইডি লাইট ঘর ঠান্ডাও রাখে
বৈদ্যুতিক খরচের দিক থেকেও সাশ্রয়ী।
দিনের
উত্তপ্ত সময়ে জানালার পর্দা টেনে দিন। তবে জানালাটা সামান্য খোলা রাখুন যাতে ভেতরে
বাতাস চজলাচল করতে পারে। সন্ধ্যার
দিকে পর্দা সরিয়ে জানালা খুলে দিন। বাইরের ঠান্ডা বাতাস ভেতরে আসুক। তবে ঢাকার যে এলাকায় বায়ু দূষণ বেশি
সেখানে জানালা একটানা বেশিক্ষণ খোলা না রাখা ভালো।
বেশি
বেশি পানি
গরমে পানিশূন্যতার
মতো নানা ধরনের রোগবালাই থেকে বাঁচতে পানির বিকল্প নেই। স্কুল বা বাড়ি যেখানেই
থাকুক না কেন, বাচ্চাদের
পড়াশোনা ও খেলাধুলার সময়
নির্দিষ্ট সময় পরপর পানি দিন। এমনকি তারা তৃষ্ণার্ত না হলেও। বেশি
পানি শুধু পানিশূন্যতাই প্রতিরোধ করে না, বাচ্চাদের দাঁতের ক্ষয়ের ঝুঁকিও কমায়।
আমেরিকার
জাতীয় একাডেমি মেডিসিন ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুসারে, ৯ থেকে ১৩
বছরের ছেলেদের জন্য প্রতিদিন পানি পান করতে হবে অন্তত ৮ কাপ। একই
বয়সের মেয়েদের অন্তত ৭ কাপ পানি
পান করা উচিত। ১৪ থেকে ১৮
বছরের ছেলেদের জন্য ১১ কাপ এবং
মেয়েদের ক্ষেত্রে ৮ কাপ।
ফল
ও সবজি
গ্রীষ্মের
খরতাপ থেকে স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য সেরা উপায় হচ্ছে সর্বাধিক পানি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া। তরমুজ হবে খুব উৎকৃষ্ট। এতে রয়েছে ৯১ শতাংশ পানি।
তাছাড়া বাঙ্গি, পেঁপে, বেদানা,
কলাসহ দেশি যেকোনো মৌসুমি ফল। শশা, গাজর, টমোটো কাঁচা বা সালাদ বা রান্না।
সব ধরনের
কালারফুল সবজি সবার জন্য বিশেষ দরকারি খাবার। পালং শাক, টমেটো,
শসা, মুলা, ফুলকপি, গাঁজর, পুদিনাপাতা, পেঁয়াজকলি, ঢেঁড়শ এবং লাউ।
প্রতিদিনের
খাদ্য তালিকায় এই ফল এবং
শাকসবজি থাকা মানে যথেষ্ট পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন পাওয়া। এই পুষ্টি উপাদান
পানিশূন্যতা রোধের পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতেও সহায়তা করে।
কখন
গোসল হবে
বাইরে
থেকে ঘরে ফেরার পরপরই গোসল করা একটি স্বাস্থ্যবিধি। এমনকি একাধিকবার। গোসলের পানি বাচ্চার ত্বক ভিজিয়ে দেয়। তখন শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলোর কার্যকলাপের জন্য নির্ধারিত তাপমাত্রা বজায় থাকে। তাতে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়ে শরীরকে সতেজ করে তোলে।
গোসলের পানি
হবে আরামদায়ক
তাপমাত্রার। বেশি গরম বা বেশি ঠান্ডা
নয়।
ভিড়
এড়িয়ে চলা
রাস্তাঘাটে
চলাচলের সময় পারতপক্ষে অতিরিক্ত ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে। ভিড়ের মধ্যে অন্যের দেহের তাপ এবং অনেকে দেহের তাপ একত্রিত হয়ে পরিবেশকে অস্বস্তিকর করে তোলে।
এমনকি
এক জায়গা একসঙ্গে অনেক শিক্ষার্থী গাদাগাদি করে বসলেও সেটা
অস্বাস্থ্যকর। ক্লাসরুমের, স্কুল
ভ্যান বা গাড়ির প্রশস্ততা
বিবেচনায় নেওয়া আবশ্যক।
ইঞ্জিনচালিত
গাড়ি থেকে উত্তাপ সৃষ্টি হয়। বেশি গাড়ি চলে এমন রাস্তায়
বাচ্চাকে নিয়ে হাঁটলে তা অস্বাস্থ্যকর। যত দূর সম্ভব
এড়িয়ে চলুন।