বিএনপি সংস্কারের পক্ষে, তবে জনগণই মূল ভিত্তি: নজরুল ইসলাম খান

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, বিএনপি কখনোই সংস্কারের বিরোধিতা করেনি, বরং দলটি নিজেই একটি সংস্কারমুখী রাজনৈতিক শক্তি। তবে সব সিদ্ধান্তের ভিত্তি হওয়া উচিত জনগণের সম্মতি।
বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত আলোচনার শুরুতেই তিনি এসব কথা বলেন।
নজরুল বলেন, “আমরা গতকাল প্রধান উপদেষ্টাকে জানিয়েছি, বিএনপি সংস্কারের বিপক্ষে নয়, বিএনপি বরাবরই সংস্কারের পক্ষেই ছিল। কিন্তু কেউ কেউ বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দেন। অথচ যখন অন্যরা সংস্কারের কথা বলেনি, তখন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া 'ভিশন ২০৩০' উপস্থাপন করেছিলেন।”
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জাতীয় সংসদের এলডি কক্ষে এই আলোচনা শুরু হয়। এতে বিএনপির পক্ষে অংশ নেন স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ ও নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল এবং সাবেক সচিব নিরুজ্জামান খান।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, “গণতন্ত্রের জন্য আমাদের দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাস রয়েছে। এখন আবার একটি নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে। আমরা এই সুযোগ কাজে লাগাতে চাই। কমিশনের প্রতি সহানুভূতির ভিত্তিতে, সরকারের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে আমরা আলোচনায় বসেছি।”
তিনি আরও বলেন, “যদি ঐকমত্য কমিশনের কোনো চূড়ান্ত সনদ তৈরি না-ও হয়, বিএনপির কাছে নিজস্ব সংস্কারের রূপরেখা আছে। তবে মনে রাখতে হবে, সবকিছুর কেন্দ্রবিন্দু জনগণ। আর জনগণ কাদের মাধ্যমে সম্মতি দেয়, তাও আমরা জানি।”
আলোচনার শুরুতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, “আমাদের লক্ষ্য একটি জাতীয় সনদ প্রণয়ন, যার মাধ্যমে দেশে একটি স্থায়ী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভিত্তি গড়া সম্ভব হবে।”
কমিশন সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবারের এই আলোচনা পুরো দিনব্যাপী চলতে পারে। প্রয়োজন হলে আগামী সপ্তাহে আবারও বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে বসবে কমিশন।
সংস্কার ও ঐকমত্য প্রক্রিয়ার পটভূমি
জাতীয় ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কাজ শুরু করে। কমিশনটি সংবিধান, জনপ্রশাসন, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংশ্লিষ্ট ১৬৬টি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার সুপারিশ রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠিয়েছে।
৩৮টি দলের কাছে প্রেরিত এই সুপারিশমালার ওপর ১৩ মার্চ পর্যন্ত মতামত চাওয়া হয়। সেই মতামতের ভিত্তিতেই কমিশন বিভিন্ন দলের সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছে। এই আলোচনা শেষে একটি জাতীয় সনদ প্রণয়নের মাধ্যমে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করছে কমিশন।