বাকশালী সংবিধানের অজুহাতে কেন সংস্কার করতে দেরি, প্রশ্ন রিজভীর
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৩ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বর্তমান সংবিধান তো বাকশালী সংবিধান, এই সংবিধান তো কর্তৃত্ববাদী সংবিধান। তাহলে এই সংবিধানের অজুহাত দিয়ে কেন আপনারা বিভিন্ন প্রদক্ষেপ নিতে, সংস্কার করতে দেরি করছেন?
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা তো বিপ্লবের মাধ্যমে তৈরি হওয়া একটি সরকার। এই সরকারের সবকিছু যে সংবিধান অনুযায়ী হতে হবে সেটার তো কোনো দরকার নেই। কারণ বিপ্লবের মধ্য দিয়ে যে সরকার গঠিত হয় সেই সরকারকে নতুন করে সবকিছু করতে হয়, নতুন করে সবকিছু রাখতে হয়। যাতে গণতন্ত্রের ইনস্টিটিউশনগুলো ডেভলপ করে, সেই প্রচেষ্টার জন্য আপনাদের অনেক কাজ করতে হবে যেটা বর্তমান সংবিধানের মধ্যে সংবিধিবদ্ধ নয়।
আজ শনিবার (৯ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা তো নিজেরাও সংবিধানের আওতায় ক্ষমতায় আসেননি। কিন্তু জনসমর্থন আপনাদের প্রতি রয়েছে। আপনাদের সবকিছু দ্রুত গতিতে পদক্ষেপ নিতে হবে। আপনাদের কাজের গতির তীব্রতা যদি কমে যায় তাহলে এটা জনগণের কাছে একাউন্টটিবিলিটির ক্ষেত্রে জনগণ মনে করবে আপনারা সঠিক কাজ করছেন না।
রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা গায়ের জোরে তার প্রভুদেরকে সন্তুষ্ট করার জন্য একের পর এক কাজ করেছেন। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সংবিধানে আল্লাহর উপর বিশ্বাস এবং আস্থা সংযুক্ত করেছিলেন এটা কি কোনো মানুষ অস্বীকার করে? আর শেখ হাসিনা যা করেছেন সবকিছুই তো গায়ের জোরে করেছেন। জিয়াউর রহমান ছিলেন একজন আধুনিক সেনাপতি, একজন আধুনিক রাষ্ট্রনায়ক, একজন আধুনিক রাষ্ট্রপতি। তিনি দেশের মানুষের ন্যূনতম চেতনাকে সম্মান দেখিয়ে সংবিধানে সংযুক্ত করেছিলেন আল্লাহর উপর আস্থা এবং বিশ্বাস।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, আমাদের দেশকে যারা পছন্দ করে না যারা, শুধুমাত্র শেখ হাসিনাকে পছন্দ করেন এই ধরনের কিছু বিদেশি শক্তি বাংলাদেশের সেনাবাহিনী শক্তিশালী হোক, বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী বিশ্বের একটি আধুনিক চৌকস বাহিনীতে পরিণত হোক এটা চায় না। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখার জন্য যে সকল প্রতিষ্ঠান বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, পার্লামেন্ট, প্রশাসন এটা ভালো হোক প্রাণবন্ত হোক এটা তারা চায় না। এবং চায় না বলেই শেখ হাসিনা শুধুমাত্র তাদেরকে খুশি করার জন্য তিনি একের পর এক দেশবিরোধী কাজগুলো করে গেছেন।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা তার মন্ত্রীদের এবং তার পছন্দের সরকারি কর্মকর্তাদের বলেছিলেন তোমরা খাও দাও ফূর্তি করো আমি কি করছি এগুলো দেখার দরকার নেই। আর যারা আমার বিরুদ্ধে কিছু করবে তাদেরকে তোমরা যেভাবে পারো দমন কর। তাদেরকে আয়নাঘরে নিয়ে যাও, তাদেরকে গুম কর, তাদেরকে খুন কর, তাদেরকে ক্রসফায়ার দাও যেভাবেই হোক দমন কর। তোমাদেরকে কেউ কিছুই বলবে না। এভাবেই তো তিনি দেশ চালিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, এই ধরনের একজন নরকঘাতক তাকে এদেশের ছাত্র-জনতা এবং গণতন্ত্রকারী মানুষ বিদায় করেছে। সেই পরিস্থিতির আবার পুনরাবৃত্তি হোক এইটা তো এদেশের মানুষ আর চায় না।
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় কৃষকদলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেনসহ কৃষকদলের কেন্দ্রীয় এবং তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।