সংবাদ সম্মেলনে জি এম কাদের
অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েও আমাদেরকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র চলছে
সংবাদ সম্মেলন চলাকালীন একটি চিত্র।
জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, আমাদের ধ্বংস করার যে ষড়যন্ত্র, সেটা ১৯৯০ সাল থেকে শুরু হয়েছে। এটা সেই ষড়যন্ত্রেরই অংশ। মনে করেছিলাম অন্তর্বর্তী সরকার আসার পর এটা হয়ত শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু সেই ষড়যন্ত্র এখনো চলছে।
আজ শুক্রবার (১ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জাপার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর ও আগুনের ঘটনায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
জি এম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের দোসর অপবাদ দিয়ে জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে বড় ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা বিগত সরকারের কোনো অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিলাম না।’
তিনি বলেন, আমাদের দেশে আমরা কী রাজনীতি শুরু করেছি! আমি রাজনীতি করবো আমার দল নিয়ে। আমার দল বিবেচনা করবে আমি কার সঙ্গে যাবো, কার সঙ্গে যাবো না। আমার দল বিবেচনা করবে নির্বাচন করবো, নাকি করবো না।
জি এম কাদের বলেন, জাতীয় পার্টি জাতীয় পর্যায়ের একটি রাজনৈতিক দল। বারবার আমাদের কবরস্থ করার পরেও আমরা কবর থেকে উঠে এসেছি। কেউ আমাদের ধ্বংস করতে পারেনি। যেহেতু আমরা সহাবস্থানের রাজনীতি করি, আমরা দখলদারি করিনি, সন্ত্রাসের রাজনীতি করি না, হাট-মাঠ-ঘাট দখল করিনি, মানুষকে অত্যাচার-দলীয়করণ করিনি।
তিনি বলেন, আমরা মানুষকে সুশাসন দিয়েছি, উন্নয়ন দিয়েছি, সংস্কার দিয়েছি, গণতান্ত্রিক অধিকার দিয়েছি। মানুষ তা স্মরণ করে।
নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে জি এম কাদের বলেন, আমরা বারবার বলেছি, ২০১৪ সালের নির্বাচন আমরা বর্জন করেছি। এরশাদ সাহেবকে জোর করে সিএমএইচে ভর্তি করে, দলে ভেতরে বিভক্তি সৃষ্টি করে ক্ষুদ্র একটি অংশকে নির্বাচনে নেওয়া হয়েছে। বিএনপি নির্বাচনে না গেলেও তারা একই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীন স্থানীয় সরকার নির্বাচন করেছে। এটা কী সরকারকে বৈধতা দেওয়া হয়নি? ২০১৮ সালের নির্বাচনে সব দল অংশ নিয়েছে।
২০২৪ সালের নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনও আমরা করতে চাইনি, জোর করে নির্বাচনে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। এ ঘটনা অনেকে দেখেছেন এবং জানেন।
জীবন গেলেও অন্যায় ও বৈষম্যের প্রতিবাদ করবেন উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও আগামীকাল শনিবার কাকরাইলে জাতীয় পার্টি সমাবেশ করবে।
প্রসঙ্গত: ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র-শ্রমিক-জনতার মিছিলে জাতীয় পার্টির (জাপা) নেতা-কর্মীদের হামলার জেরে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর রাজধানীর বিজয়নগরে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য এলাকা থেকে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-শ্রমিক-জনতার’ ব্যানারে মশাল মিছিল বের হয়। জাতীয় পার্টিকে ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ আখ্যা দিয়ে দলটির কার্যালয় ঘেরাও করতে বিজয়নগর এলাকায় মিছিল নিয়ে যায় ছাত্র-জনতা। এসময় জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে থাকা নেতাকর্মীরা মিছিলে হামলা করেন। কার্যালয় থেকে মিছিলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন মিছিলকারী আহত হন।