বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তির আন্দোলনের কোনো একক মাস্টারমাইন্ড নেই। দেশের মানুষ আন্দোলনে শামিল হয়েছিল। আন্দোলনের নেতৃত্বের কৃতিত্ব যুবসমাজের। যাদের জীবনের বিনিময়ে আমরা জুলুম থেকে মুক্তি পেয়েছি সেইসব বীর শহীদদেরকে জামায়াতে ইসলামী দলীয়ভাবে বিবেচনা করে না। তাঁরা জাতীয় বীর।

আজ শনিবার সকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বগুড়া শহর ও জেলা শাখার রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঐতিহাসিক আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে আয়োজিত রুকন সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জামায়াতে ইসলামীর বগুড়া শহর শাখার আমির অধ্যক্ষ আবিদুর রহমান সোহেল। সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন ও বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সহ-সভাপতি জনাব গোলাম রব্বানী।

ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, জনগণ বিভক্ত জাতি দেখতে চায় না। তারা ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে চায়। আমরাও দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে চাই। দল-মতের ভিন্নতা থাকলেও দেশের জন্য সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর বহু আগাছা-পরগাছা মাথা চাঁড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। এদেরকে প্রতিহত করতে হবে।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, শেখ হাসিনার সরকার বিচারের নামে প্রহসন করে জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে ঠান্ডা মাথায় খুন করেছে। জামায়াতের কেন্দ্রীয় অফিসসহ সারাদেশের সকল অফিস বন্ধ করে দিয়েছিল। সাড়ে ১৩ বছর আমরা আমাদের অফিসে বসে কোনো কাজ করতে পারিনি। গায়ের জোরে আমাদের নিবন্ধন এবং প্রতীক কেড়ে নেওয়া হয়েছে। বুলডোজার দিয়ে আমাদের বাড়ি-ঘর মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে। চব্বিশের ছাত্রজনতার আন্দোলনে দিশেহারা হয়ে শেষ পর্যন্ত জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। কিন্তু শেখ হাসিনাকে শুধু ক্ষমতাই ছাড়তে হয়নি, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ভয়ে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমাদের নেতা বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) মক্কা থেকে হিজরতের পরে যেভাবে ইসলামের জন্য মহান মা’বুদ দুয়ার খুলে দিয়েছিলেন, তেমনি ৫ আগস্টের পর আমাদের জন্য সম্ভাবনার অবারিত সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রতিটি ঘরে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দেওয়ার জন্য তিনি রুকনদের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, আমাদের দেশ বিপুল সম্ভাবনার দেশ। জাতি একটি ইনসাফপূর্ণ সমাজ চায়। গোটা জাতি আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। জাতিকে হতাশ করা যাবেনা। তাদেরকে আশাবাদী করতে হবে। সবার ঘরে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে। তিনি রুকনদেরকে ব্যক্তি ও পরিবার গঠনে দায়িত্ববান হওয়ার আহ্বান জানান।”

সম্মেলনে নবনির্বাচিত বগুড়া শহর আমির অধ্যক্ষ আবিদুর রহমান সোহেল ও বগুড়া জেলা আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হক সরকারকে শপথ বাক্য পাঠ করান আমিরে জামায়াত।