সমমনা দলের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক
সরকারকে স্থিতিশীল রাখতে সহযোগিতা করার সিদ্ধান্ত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৫২ পিএম
গণঅধিকার পরিষদ ও বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপির পক্ষে লিয়াজোঁ কমিটি। আজ মঙ্গলবার বিকেলে দলের চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে স্থিতিশীল রাখার জন্য বিএনপিসহ যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলো সহযোগিতা করবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে বলা হয়, এই সরকারের সময় নিয়ে প্রায়ই প্রশ্ন হয়, তবে যুগপৎ আন্দোলনের দলগুলো সরকারকে যৌক্তিক সময় দেওয়ার বিষয়ে পুনর্বিবেচনা করবে। পাশাপাশি যুগপৎ আন্দোলনের দল ও জোটের বক্তব্যে একই রকম হওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়।
বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের বৈঠকে সংগঠনের আহ্বায়ক ইসমাইল সম্রাটের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল অংশ নেন। এরমধ্যে সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনে ৪ জন সমন্বয়ক ছিলেন।
পরে বিকেল ৫টার দিকে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। দলের সভাপতি সভাপতি নুরুল হক ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি এই বৈঠকে অংশ নেন। দুই বৈঠকেই বিএনপির পক্ষে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও লিয়াজোঁ কমিটি প্রধান আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান এবং লিয়াজোঁ কমিটি সদস্য বরকত উল্লাহ বুলু উপস্থিত ছিলেন।
পরে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করেছি। শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। আগামীর বাংলাদেশের যে স্বপ্ন আমরা সবাই মিলে দেখেছি, সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কয়েকটি ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে, আমরা ঐক্যভাবে বিগত দিনে যেভাবে আন্দোলন করেছি, ঐক্যবদ্ধভাবে আগামীদিনে আমাদের যে ৩১ দফা সংস্কারের বিষয় আছে- এরমধ্যে রাষ্ট্রের প্রায় সব সংস্কারের কথা বলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এখানে যদি দুই-একটা সংযোজন করার প্রয়োজন হয়, আলোচনার মাধ্যমে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি- সেগুলো আমরা আগামীদিনে সংযোজন করব। এটা নিয়ে আমরা জনগণের কাছে যাবো, দেশের মানুষের কাছে যাবো। আগেও গিয়েছি। যেহেতু সংস্কারের বিষয় আছে, এটা আমরা মানুষের কাছে তুলে ধরব।
আমীর খসরু মাহমুদ বলেন, আজকে যে সরকার আছে- এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আমরা সহযোগিতা করছি, কারণ জাতি একটা বড় ধরনের রক্তপাতের মধ্যে দিয়ে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। এই সরকার যাতে দ্রুত তাদের কাজগুলো সম্পূর্ণ করতে পারে এবং নির্বাচনী কার্যক্রমের মধ্যে নিয়ে গিয়ে একটি স্বৈরাচারী প্রথা থেকে গণতান্ত্রিক পথে ফিরে আসে এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও গণতন্ত্রের মাধ্যমে দেশে নির্বাচন হয়-এখানে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য ঐকমত্য হয়েছি।
আমীর খসরু মাহমুদ আরও বলেন, আমরা শুধু আন্দোলন করি নাই, আমরা শুধু ৩১ দফা সংস্কার দেই নাই। আমরা কিন্তু একত্রে এখনো কাজ করে যাচ্ছি। আগামী নির্বাচন পরবর্তীতে যে জাতীয় সরকারের কথা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন- সেখানে আমরা সবাইকে নিয়ে এই ৩১ দফা বাস্তবায়ন করব, ইনশাআল্লাহ। এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, এটা তো পরিষ্কার বলা আছে- তারেক রহমান সাহেব পরিষ্কার বলেছেন, নির্বাচনের পরে যারা আমাদের সাথে একসঙ্গে আন্দোলন করেছেন তাদের সকলকে নিয়ে আগামীদিনে জাতীয় সরকার গঠিত হবে। যার মাধ্যমে এই ৩১ দফা সংস্কার বাস্তবায়ন করা হবে।
বৈঠক শেষে নুরুল হক বলেন, এখন সবাই রাষ্ট্র সংস্কারের দাবি তুলছে। এটা কিন্তু আমরা এক বছর আগেই দিয়েছি। এটাকে কীভাবে জনগণের কাছে, রাজনৈতিক মহল এবং সরকারের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়, এটার পক্ষে জনমত গঠন করা যায়-সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করব। বর্তমান সরকারকে স্থিতিশীল রাখার জন্য বিএনপিসহ যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলো সহযোগিতা করবে। আর এই সরকার কতদিন থাকবে, সেটা নিয়ে প্রায়ই প্রশ্ন হয়। এবিষয়ে আলোচনা হয়েছে, আমরা বলেছি- এতদিন আমরা ৪২টি দল মৌলিক দাবিতে একমত হয়ে আন্দোলন করেছি। যুগপৎ আন্দোলনের দলগুলো সরকারের যৌক্তিক সময় দেওয়ার বিষয়ে পুনর্বিবেচনা করবে।