Logo
Logo
×

রাজনীতি

নবগঠিত জাস্টিস ফর জুলাই প্ল্যাটফর্ম

ছাত্র-জনতা হত্যার বিচারের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:১১ পিএম

ছাত্র-জনতা হত্যার বিচারের দাবি

সমাবেশ চলাকালীন একটি চিত্র। ছবি: সংগৃহীত

হাসিনা সরকারবিরোধী গণঅভ্যুথানে নির্বিচারে ছাত্র-জনতা হত্যার বিচারের দাবিতে সমাবেশ করেছে নবগঠিত জাস্টিস ফর জুলাই প্ল্যাটফর্ম। অভিনব এই সমাবেশে উপস্থিত শিক্ষার্থী ও জনতা আন্দোলনের শহীদদের মুখোশ পরে উপস্থিত হন। 

আজ শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকালে রাজধানীর শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ সমাবেশ আয়োজন করা হয়। ছাত্র জনতা ছাড়াও একাধিক শহীদের বাবারাও অংশগ্রহণ করে সমাবেশে বক্তৃতা দেন।

আন্দোলনকালে যাত্রাবাড়িতে পুলিশের গুলিতে নিহত আব্দুর রহমান জিসানের বাবা বাবুল সরদার এবং ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্র আবু বকর সিদ্দিক ‘শহীদরা ফিরে আসছে’ শীর্ষক এই সমাবেশে বক্তব্য দেন। তারা সরকারের কাছ থেকে যথাযথ সাহায্য প্রার্থনা করেন। 

বাবুল সরদার বলেন, আমার ছেলে আন্দোলনে পানি পান করাচ্ছিল, আমার ছেলেটাকে হত্যা করা হলো। আমার দুটি মেয়ের একমাত্র ভাই এই ছেলে। আজ আর্থিকভাবেও আমি দুর্বল হয়ে পড়েছি। আবার বিদেশে যাব, সব কাগজপত্র রেডি হয়েছে, কিন্তু টিকেটের টাকাটা ব্যবস্থা করতে পারছি না। 

হাসিনা সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর পালিয়ে যাওয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেন তারা। সমাবেশের অন্যতম আয়োজক এবং মুখপাত্র আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, গণহত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। শহীদদের পরিবারকে সামাজিক মর্যাদা এবং আর্থিক সহযোগতিা প্রদান করতে হবে। ৫ই আগস্টের অবদানকে বিশেষ দিবস ঘোষণার মাধ্যমে আন্দোলনের চেতনাকে সমুন্নত রাখতে হবে। আন্দোলনে আহতদের রাষ্ট্রীয়ভাবে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। 

এছাড়া সমাবেশ থেকে রাজধানীর রায়েরবাজারের নতুন কবরগুলোসহ অজ্ঞাত যত মরদেহ রয়েছে তাদের ডিএনএ প্রোফাইলিং করে পরিচয় চিহ্নিতসহ মোট ৮ দফা ঘোষণা করা হয়। ৮ দফা হলো: 

১। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ, আহত ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের তালিকা প্রণয়ন এবং তাদেরকে অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে পুনর্বাসন কল্পে সরকারিভাবে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি বিশেষায়িত কমিটি গঠন করতে হবে৷ একজন উপদেষ্টা এই কমিটির প্রধান থাকবেন এবং ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে একজন প্রতিনিধিকে উক্ত কমিটিতে যুক্ত রাখতে হবে৷ 

২। জুলাই অভ্যুত্থানের সকল শহীদদের রাষ্ট্রীয়ভাবে মর্যাদা প্রদান করতে হবে এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে শহীদ পরিবারগুলোর দায়িত্ব নিতে হবে৷ 

৩। জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের সকল আহতদের রাষ্ট্রীয়ভাবে সুচিকিৎসা নিশ্চিতকরণ ও যোগ্যতা অনুসারে প্রত্যেকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। 

৪। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিখোঁজ ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে প্রশাসনের সৎ ও চৌকস সদস্যদের সমন্বয়ে একটি স্পেশাল টাস্কফোর্স গঠন করতে হবে৷ 

৫। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও স্থানীয় ব্যক্তিদের সরেজমিনে প্রাপ্ত রায়েরবাজারে যে শতাধিক গতকবরের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে, কালবিলম্ব না করে ডিএনএ প্রোফাইলিংয়ের মাধ্যমে তাদের পরিচয় শনাক্ত করতে হবে৷ 

৬। গণহত্যার সাথে জড়িত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানসমূহকে অতিসত্বর বিচারের আওতায় আনতে হবে। 

৭। বিশেষায়িত কমিটি জনগণের নিকট দায়বদ্ধ থাকবে এবং প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাদের কাজের আপডেট জানাবে৷ 

৮। ৫ আগস্টকে একটি জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণার মাধ্যমে এই গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে সমুন্নত রাখতে হবে। 

সমাবেশ থেকে আগামীকাল শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) থেকে আগামী ২১ তারিখ পর্যন্ত ১৫ দিনের গণসংযোগ ঘোষণা করেন আরেফিন মোহাম্মদ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল আমিনের সঞ্চালনায় সমাবেশে আন্দোলনে নিহতদের স্বজন, আহত ব্যক্তি ও আন্দোলনে সক্রিয় বিভিন্ন পেশার মানুষ কথা বলেন। গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক ও ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন, স্টুডেন্ট এগেইন্সট টর্চারের পক্ষ থেকে সালেহ উদ্দিন সিফাত, শিক্ষক মিজানুর রহমান, অ্যাডভোকেট আলী নাসের খান, ছাত্রনেতা নাঈম আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন