Logo
Logo
×

রাজনীতি

গণহত্যা বন্ধ করুন, রাষ্ট্র ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিন

বাংলা আউটলুক বিশেষ সম্পাদকীয়

সাইমুম পারভেজ

সাইমুম পারভেজ

প্রকাশ: ০৪ আগস্ট ২০২৪, ০৫:০৯ পিএম

গণহত্যা বন্ধ করুন, রাষ্ট্র ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিন

বাংলাদেশে চলমান নির্বিচারে হত্যা, সন্ত্রাস ও জনগণের নিরাপত্তার প্রতি রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানসমূহের নির্লিপ্ততার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে বাংলা আউটলুক। বাংলাদেশের জনগণ ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে একটি গণতান্ত্রিক কল্যাণমুখী রাষ্ট্রব্যবস্থা তৈরি করার স্বপ্ন দেখেছিলো। গত কয়েক সপ্তাহে বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণের উপর যেভাবে হামলা ও হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে তা নজিরবিহীন এবং সুস্পষ্ট ভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী। রাষ্ট্রের পুলিশ, সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনী, র্যাব ও সামরিক বাহিনীর যেসব সদস্য গণহত্যায় অংশ নিয়েছেন, শিশু, কিশোর, যুবক ও সাধারণ জনগণকে হত্যা করেছেন এবং হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি চালিয়েছেন, তাদের দেশের ও আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।  

বর্তমান গভীর রাজনৈতিক সংকট উত্তরণের জন্য এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা ও রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য আমাদের এই মুহুর্তে জনগণের কাছে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেবার ব্যবস্থা করা উচিত। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭ অনুযায়ী আমরা জানি যে, রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ এবং সংবিধান হচ্ছে জনগণের অভিপ্রায়ের পরম অভিব্যক্তি। সুতরাং, বাংলাদেশের সংবিধানের মৌলিক নীতিসমূহ এবং অনুচ্ছেদ ৭ এর আলোকে নিম্নবর্ণিত উপায়ে ক্রান্তিকালীন সময়ে জন্য জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার করা এখন সময়ের দাবি।

স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন শেষে ১৯৯১ সালে যেভাবে বাংলাদেশের জনসাধারণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি সর্বজন গ্রহণযোগ্য সরকার গঠন করা হয়েছিলো, সেভাবে অবিলম্বে নানা পেশার মানুষের সমন্বয়ে একটি নির্দলীয়  অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করতে হবে। এই সরকারে শিক্ষার্থী ও যুব সমাজের প্রতিনিধিত্ব থাকা উচিত বলে আমরা মনে করি। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত করে নবনির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে। 

অনেকেই প্রশ্ন করেন এই সরকারের বিকল্প কে? গত কয়েক সপ্তাহের চলমান আন্দোলন ও গণহত্যা এই প্রশ্নের একটি স্পষ্ট উত্তর দিয়েছে। এই সরকারের বিকল্প কে তা জনগণই ঠিক করবে। জনগণের সম্মিলিত রায়ের মাধ্যমেই প্রতিষ্ঠা হবে একটি নতুন সরকার। সেটা পুরণো-নতুন যেকোন রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তি হতে পারে। বিকল্প কে এই প্রশ্ন তুলে একটি সরকারকে প্রশ্নাতীত বৈধতা দেবার ফলাফল যে কি তা বাংলাদেশের জনগণ গত কয়েক সপ্তাহেই স্পষ্টভাবে বুঝতে পেরেছেন বলে আমরা মনে করি। তাই গণহত্যাকারী কোন সরকার বা ব্যক্তি জবাবদিহিতা ছাড়া ক্ষমতায় টিকে থাকলে তা বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের জন-আকাঙ্খার বিরোধী হবে। 

সেইসাথে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখল বা জরুরী অবস্থা জারি করার সিদ্ধান্তও বাংলাদেশের জন্য মঙ্গল বয়ে নিয়ে আসবেনা। জনগণের ক্ষমতা যত দ্রুত সময়ের মাধ্যমে জনগণের হাতে ফেরত আনা যায়, সেই চেষ্টা আমাদের করা উচিত। একটি বেসরকারী ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারই এখন দেশে শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পারে।  


Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন