Logo
Logo
×

রাজনীতি

দল নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত বেআইনি : জামায়াত আমীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০২৪, ০২:২৮ পিএম

দল নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত বেআইনি : জামায়াত আমীর

১৪ দলীয় জোটের বৈঠকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে দলটি। বলেছে, এ সিদ্ধান্ত বেআইনী ও সংবিধান পরিপন্থী।

জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) এক বিবৃতি এ কথা বলেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, '২৯ জুলাই ১৪ দলের বৈঠকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধের যে বেআইনি, এখতিয়ার বহির্ভূত ও  সংবিধান পরিপন্থি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট একটি রাজনৈতিক প্লাটফর্ম। একটি রাজনৈতিক দল বা জোট অন্য একটি রাজনৈতিক দলের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। বাংলাদেশের আইন ও সংবিংধান কাউকে এ এখতিয়ার দেয়নি। কোনো দল বা জোট অন্য কোনো দলকে নিষিদ্ধ করার ধারা চালু হলে এক দল অন্য দলকে নিষিদ্ধ করতে থাকবে।  তখন রাষ্ট্রের শৃঙ্খলা বলে কিছু থাকবে না। জামায়াতে ইসলামী একটি প্রতিষ্ঠিত গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংগঠন, যা বাংলাদেশের সকল গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছে। প্রতিটি গণতান্ত্র্রিক আন্দোলনে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছে। আওয়ামী লীগ জামায়াতের সাথে বসে অতীতে অনেক আন্দোলন করেছে। দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য কেয়ারটেকার সরকারব্যবস্থার ফর্মূলা জাতির সামনে উপস্থাপন করেছে এবং তার ভিত্তিতে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরকম একটি গণতান্ত্রিক সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার দাবি বেআইনি, এখতিয়ার বহির্ভূত ও সংবিধান পরিপন্থি। জনগণ ১৪ দলের এই দাবি গ্রহণ করবে না।'

 

বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি ছাত্রদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ব্যাপক রূপ লাভ করলে সরকার প্রধান, সেতুমন্ত্রী, মুক্তিযদ্ধ মন্ত্রী আক্রমণাত্মক ও উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখার পর ছাত্রলীগ বৈষম্যবিরোধী ছাত্রসমাজের ওপর হামলা চালায়। পরবর্তীতে রাষ্ট্রের বিভিন্ন বাহিনী দিয়ে দেশে গণহত্যা চালানো হয়। বাংলাদেশের ইতিহাসে অতীতে কোনো আন্দোলন দমনের জন্য এভাবে নির্বিচারে গণহত্যা চালানো হয়নি। গোটা জাতি এবং বিশ্ব বিবেক এই গণহত্যার জন্য সরকারকে ধিক্কার দিচ্ছে। গোটা জাতি এ গণহত্যার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ। এমন পরিস্থিতিতে নিজেদের অপকর্মের দায় এড়ানোর জন্য সরকার শুরু থেকেই মিথ্যাচার চালাচ্ছে। রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে জামায়াত ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের উপর দোষারোপ করে বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে। দেশের শিক্ষকসমাজ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক ও সচেতন নাগরিকগণ সরকারের এ ভূমিকার প্রতিবাদ ও সমালোচনা করছেন। বিভিন্ন মহল থেকে আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। এহেন অরাজক পরিস্থিতিতে সরকার দেশ ও বিশ্ববাসীর দৃষ্টি ভিন্নদিকে প্রবাহিত করার জন্য এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে ১৪ দলের বৈঠকে জামায়াত নিষিদ্ধের এ হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের এ সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক, বেআইনী এবং সংবিধান বিরোধী। দেশের জনগণ ১৪ দলের এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছে।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই দেশ ও জাতির কল্যাণে নিয়মতান্ত্রিক, গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে সকল কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও যাবে ইনশাআল্লাহ। এদেশের উন্নয়নে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি ও সামাজিক কাজে অবদান রেখে চলেছে। দেশে আইনের শাসন, ন্যায় বিচার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জামাায়াত নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জামায়াতের সাথে কোটি কোটি মানুষের সম্পৃক্ততা রয়েছে।

জামায়াতের আমীর বলেন, অতীতে যত অঘটন ঘটেছে কোনো রকম তদন্ত ছাড়াই তার জন্য জামায়াতকে দোষারোপ করা হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে প্রমাণিত হয়েছে যে, জামায়াত কোনো ঘটনার সাথেই জড়িত নয়। বরং দেখা গেছে, সব ঘটনার সাথে শাসকগোষ্ঠীই জড়িত। এবারও সরকারের সব অপপ্রচার মিথ্যা প্রমাণিত হবে।

তিনি দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে দেশপ্রেমিক জনগণকে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে এবং গণহত্যার প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ার আহবান জানান। 

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন