Logo
Logo
×

রাজনীতি

চলমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে এবি পার্টির উদ্বেগ

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ১০:২৪ পিএম

চলমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে এবি পার্টির উদ্বেগ

বন্যা ও নদী ভাঙনে যারা ক্ষতিগ্রস্ত, বন্যায় যারা বার বার ঘরবাড়ি হারাচ্ছে, মৃত্যুমুখে পতিত হচ্ছে তারা সবাই রাষ্ট্রের কাঠামোগত নির্যাতন ও খুনের শিকার বলে দাবি করেছে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)। 

আজ পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত মিডিয়া ব্রিফিং থেকে এ দাবি করেছেন দলের নেতারা। পার্টির আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠিত ব্রিফিংয়ে মুল বক্তব্য উপস্থাপন করেন এবি পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমেদ ভুইয়া, দপ্তর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, কেন্দ্রীয় সহকারী সদস্য সচিব এম আমজাদ খান প্রমুখ।

মুল বক্তব্যে ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, গত কয়েক বছর ধরেই মার্চ-এপ্রিল মাসে ভারতের পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে যাচ্ছে সিলেট অঞ্চলের হাওর সহ প্রতিটি জনপদ। অন্যদিকে সারা বছর পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা অববাহিকার সকল পানি নানা খাল দিয়ে প্রত্যাহার করে নিলেও ভারত অতিরিক্ত বৃষ্টি ও বন্যার সময় সকল বাঁধের গেট খুলে দিয়ে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলকে প্লাবিত করে আসছে বছরের পর বছর। চেরাপুঞ্জির বৃষ্টির পানি প্রবাহিত হয় মূলত সুরমা ও কুশিয়ারা নদী দিয়ে কিন্তু ধরনের আকস্মিক বন্য আগে দেখা যায়নি। 

ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, পরিবেশবিদরা বলছেন, এর প্রধানতম কারণ হচ্ছে নদীর নাব্যতা কমে যাওয়া বা নষ্ট হয়ে যাওয়া যেটা মূলত: হয়ে থাকে নদীমূখে বিভিন্ন পয়েন্টে পলি, বালু জমে নদীর গভীরতা কমে গিয়ে এবং শহরে বসবাসরত মানুষের সকল ধরনের বর্জ্য নদীতে ফেলার কারণে; দেশব্যাপী এই চলমান বর্জ্য  অব্যবস্থাপনার ফলে নদীগর্ভে প্লাস্টিক জমে প্রায় নদীর গভীরতা ক্রমাগত কমে যাচ্ছে।

দ্বিতীয়ত নদীর সাথে যুক্ত বিভিন্ন খাল, বিল, পুকুর, দিঘী অবৈধভাবে ভরাট করে বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করে পানির স্বাভাবিক প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করা। 

তৃতীয়ত ৮৭৫ কোটি টাকার কিশোরগঞ্জের ইটনা-অষ্টগ্রাম- মিঠামইনের ২৯ কিলোমিটার দীর্ঘ অল-ওয়েদার সড়ক। হাওড়ের বুক চিরে মিথ্যে উন্নয়নের নামে রাস্তা তৈরি করে পরিবেশের সাথে খেলতে নামার এক আলেখ্য যেটাতে মানবজাতি কোনোদিন বিজয়ী হতে পারবে না। এর সাথে যুক্ত হয়েছে আমাদের একমাত্র বন্ধু রাষ্ট্রের সময়ে-অসময়ে দেয়া অতিরিক্ত পানির প্লাবন।

বন্যার সাথে সাথে পদ্মা, যমুনা ও তিস্তায় এখন শুরু হয়েছে তীব্র নদী ভাঙন। যার ফলে প্রতিদিন বসত ভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। কিন্তু এত কিছুর পরেও জনসমর্থনহীন ফ্যাসিবাদী সরকার বরাবরের মতই নীরব, মনে হচ্ছে তেমন কিছুই যেন তাদের করার নেই। হীরক রাজার দেশে কোন কিছুই তেমন কোন বড় সমস্যা না। 

তিনি আরও বলেন, বন্যাতে মারা যাওয়া, কিংবা নদী ভাঙ্গনে নিঃস্ব হয়ে যাওয়া দুঃখী মানুষদের ব্যাপারে সরকারের উদাসীনতার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ৪০ লক্ষ পানিবন্দি ও হাজার হাজার নদী ভাঙন কবলিত মানুষের  জন্য ১০/১৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে মনে হচ্ছে যেন সরকার অনেক বড় সাহায্য করে ফেলেছে। অথচ দেশে ৫ লক্ষ শিশুকে সাঁতার শেখানোর জন্য ২৭১ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়, সুন্দরবনের পশু গণনার জন্য ৬৬ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়, ২০ টি সিনেমা তৈরির জন্য ১০০ কোটি টাকা অনুদান দেয়া হয়!

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন; এবি পার্টি বরাবরই দাবি করে আসছে যে, বন্যা ও নদী ভাঙ্গনে যারা ক্ষতিগ্রস্ত, বন্যায় যারা বার বার ঘরবাড়ি হারাচ্ছে, মৃত্যুমুখে পতিত হচ্ছে এরা প্রকৃতির স্বাভাবিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত নয় বরং তারা সবাই রাষ্ট্রের কাঠামোগত নির্যাতন ও খুনের শিকার। রাষ্ট্রের এই ব্যর্থতার পাটাতনে দাঁড়িয়ে এবি পার্টি তাই আবারো জাতিকে মনে করিয়ে দিচ্ছে যে, অধিকারের রাজনীতি কেন এত জরুরি। বন্যা ও নদী ভাঙন জাতিকে মনে করিয়ে দিচ্ছে কেন নতুন করে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের আলোকে - সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের ভিত্তিতে রাষ্ট্রের মেরামত ও বিনির্মাণের এই উদ্যোগ নিতে হয়েছে এবি পার্টিকে।

সভাপতির বক্তব্যে সোলায়মান চৌধুরী বলেন, সরকার বিনা রশিদে জনগণের নিকট থেকে ট্যাক্স আদায় করছে। সেই ট্যাক্সের টাকা আওয়ামী লীগের লুটেরা শ্রেণি লুট করে বিদেশে পাচার করেছে। জাতির দুর্ভাগ্য এই ধরনের চোর বাটপার যারা জনগণের টাকা লুট করছে তারা সরকারের সর্বত্র দখল করে আছে। আমরা জনগণকে আহ্বান জানাই এই দখলদার সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার। এই জবরদখলকারী সরকারকে বিদায় না করতে পারলে জনগণের মুক্তি সম্ভব নয়। 

মিডিয়া ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক বিএম নাজমুল হক, যুব পার্টির আহ্বায়ক শাহাদাতুল্লাহ টুটুল, মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী নাসির, উত্তরের সদস্যসচিব সেলিম খান, দক্ষিণের যুগ্ম সদস্যসচিব সফিউল বাসার, আহমেদ বারকাজ নাসির, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হালিম নান্নু, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শাহজাহান ব্যাপারী, রিপন মাহমুদ, মশিউর রহমান মিলু, শরণ চৌধুরী, আমেনা বেগম, ফেরদৌসী আক্তার অপি, মশিউল আজম সাকিব, পল্টন থানার আহ্বায়ক আব্দুল কাদের মুন্সি, সদস্যসচিব রনি মোল্লা প্রমুখ।

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন