কওমির ছাত্রদের কাউন্সেলিং করাতে ছাত্রলীগকে নির্দেশ শিক্ষামন্ত্রীর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২৪, ০১:১২ এএম
কওমি মাদ্রাসাগুলোয় ছাত্রলীগকে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। আজ বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) রাজধানীর বকশিবাজারে সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগ আয়োজিত গ্রিন, ক্লিন ও স্মার্ট ক্যাম্পাস বিনির্মাণে বৃক্ষরোপণ ও পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ছাত্রলীগের নেতাদের বিশেষভাবে বলবো, কওমি মাদ্রাসার সন্তানরাও আমাদের সন্তান, তারাও এদেশের নাগরিক। রাজনৈতিকভাবে মতাদর্শের দিক থেকে তারা দেশের সংবিধান ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে যাতে বিচ্যুত না হয়। আমি বলবো তাদের (শিক্ষার্থীদের) কাউন্সেলিং করার জন্য বিশেষ সেল গঠন করা উচিত।
দেশের প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলোকেও কওমি মাদ্রাসায় সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার আহ্বান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ও অন্যান্য ছাত্র সংগঠনকে বলতে চাই— আমাদের অনেক প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন আছে আছে। তারাও যাতে করে কওমি মাদ্রাসাসমূহে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, স্বাধীনতার অনুপ্রেরণা, সংবিধানে যে চার মূলনীতি সেগুলোর বিষয়ে তাদের কাউন্সেলিং করান। দেশপ্রেম দেশের প্রতি আনুগত্য এবং সমাজে ধর্মনিরপেক্ষ একটি অসম্প্রদায়িক সমাজ তৈরির কাজে অবশ্যই তাদের আনতে এবং তারা যেন বিচ্যুত না হয় অপপ্রচারকারীদের মাধ্যমে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কিছু কিছু রাজনৈতিক দল ইতোমধ্যে কওমি মাদ্রাসাগুলোয় তারা তাদের ছাত্র সংগঠনের কার্যক্রম চালাচ্ছে। একটি রাজনৈতিক দল পরিপূর্ণভাবে রাজনৈতিক কার্যক্রমের পাশাপাশি ছাত্র সংগঠন নিয়েও কাজ করছে। রাজনৈতিকভাবে মতাদর্শের দিক থেকে তারা দেশের সংবিধান ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে যাতে বিচ্যুত না হয় তাই কাউন্সেলিং করার জন্য বিশেষ সেল গঠন করা উচিত।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের মধ্যে নাগরিক চিন্তা-চেতনা যদি তৈরি করতে না পারি তাহলে পরিণত বয়সে গিয়ে সেটা যথাযথভাবে হয় না। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মূল্যবোধের বিষয়ে কাজ করছে। মহান স্বাধীনতার অঙ্গীকার ও প্রত্যাশা পেয়েছি বাংলাদেশ স্বাধীন করার মাধ্যমে। জাতির পিতা সোনার বাংলা গড়ার যে স্বপ্ন আমাদের দেখিয়েছেন সেটার লক্ষ্যে কাজ করে যাওয়া, পাশাপাশি নাগরিক হিসেবে আমাদের যে দায়িত্ব সেটা মেনে চলা থেকে শুরু করা আইনশৃঙ্খলা মেনে চলা, পরিবেশের বিষয়টি মেনে চলার কাজটি সবাই যেন করতে পারি।
শিক্ষার্থীদের মূল্যবোধ তৈরির আহ্বান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, মূল্যবোধের জায়গায় আমি বলবো—ছাত্রলীগ আলেয়া মাদ্রাসাগুলোয় সাংগঠনিক কার্যক্রম করছে সেটা খুবই ভালো বিষয়। আলেয়া মাদ্রাসা শিক্ষা আমাদের মূল ধারার শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে এখন কিন্তু বেশ সমপর্যায়ে এসেছে। এখন মাদ্রাসাগুলো যাতে করে বেশি করে আরবি ভাষা শেখায়, শিক্ষার্থীরা দেশে-বিদেশে চাকরির যোগ্য হয়, পাশাপাশি এই দক্ষতার জায়গায় উন্নত হবে এবং মূল্যবোধ ও আদর্শের জায়গায়ও। দক্ষতার সঙ্গে আদর্শ যদি না থাকে সেটা বিপজ্জনক। সেই দক্ষতা তখন আদর্শবিরোধী কাজে ব্যবহৃত হবে।
তিনি আরও বলেন, কওমি মাদ্রাসাগুলোতেও ছাত্র সংগঠনগুলো যদি সুশৃঙ্খলভাবে, সৃষ্টিশীলভাবে তাদের কার্যক্রমগুলো করে তাহলে মনে হয় এটা সবার জন্য ভালো ফল বয়ে আনবে। নয়তো একটি বিশাল জনগোষ্ঠীকে ব্রেইন ওয়াশ করে সরকারে বিরুদ্ধে, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জনগণের বিরুদ্ধে, সমাজের বিরুদ্ধে, সংস্কৃতির বিরুদ্ধে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তাদের অনেক সময় লেলিয়ে দেওয়া হয় কমেন্ট করার জন্য। এখানে ওখানে গিয়ে নানানভাবে তাদের মোটিভেট করা হয়, উৎসাহিত করা হয়, সেগুলো আমাদের মাথায় রাখতে হবে। সে জন্য অবশ্যই একটি বিশেষ সেল গঠন করুন। আপনারা তাদের সঙ্গে বসেন, তাদের নিয়ে একটি বিশেষ সেল করেন। কীভাবে তাদের ওরিয়েন্টেশন করানো যায়, সেটা আমাদের জন্য ভালো হবে, বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
এদিকে মাধ্যমিক বিদ্যালয় শনিবার খোলা বা বন্ধ রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত পবিত্র ঈদুল আজহার পর নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মুহিবুল ইসলাম চৌধুরী নওফেল। তিনি বলেন, বলেন, ‘ঈদুল আজহার পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শনিবার খোলা বা বন্ধ রাখার বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। এখন পর্যন্ত শনিবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা আছে। আমরা চেষ্টা করছি, শনিবার যে বন্ধ পূর্বে ছিল, সেটা যাতে করে বলবৎ রাখতে পারি। ইতোমধ্যে আমরা (শিক্ষাবর্ষের) ক্যালেন্ডারের হিসাব নিয়েছি।