উপজেলা নির্বাচনে বিজয়ীদের ৭৯ শতাংশ ব্যবসায়ী: টিআইবি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ জুন ২০২৪, ০১:১০ এএম
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন ১৫০ জন কোটিপতি প্রার্থী। এটি মোট বিজয়ী প্রার্থীর ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। আর গত ২০১৯ সালের নির্বাচনের তুলনায় নির্বাচিতদের অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে প্রায় ৩ গুণ। আর যারা বিজয়ী হয়েছেন সেসব প্রার্থীদের মধ্যে প্রায় ৭৯ শতাংশই ব্যবসায়ী। গত ৫ বছরে বিজয়ী ব্যবসায়ী প্রার্থী বেড়েছে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ।
আজ রোববার (৯ জুন) রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে হলফনামা বিশ্লেষণ ও চূড়ান্ত ফলাফল শীর্ষক এ আয়োজনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
টিআইবি জানায়, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চার ধাপে ৪৪২ উপজেলার মধ্যে তিন শতাধিক উপজেলায় নতুনরা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন। এ নির্বাচনে তিনটি পদের ভোটে এক হাজার ২১০ জন নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যানদের মধ্যে ৯৩০ জনই নতুন মুখ। তাদের মধ্যে ২৭৯ জন ৫ম উপজলা পরিষদেও জনপ্রতিনিধি ছিলেন।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, হলফনামায় প্রার্থীদের দেওয়া অনেক তথ্য নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। অনেকের করযোগ্য আয় নেই, যা বিশ্বাসযোগ্য নয়।
তিনি বলেন, নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করতে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করেনি আওয়ামী লীগ। এতে ক্ষমতাকেন্দ্রিক দ্বন্দ্ব আরও বেড়েছে। জনপ্রতিনিধি হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে সম্পদের বিকাশ হচ্ছে। এ নিয়ে অসুস্থ্য প্রতিযোগিতা চলছে। চলমান এসব সংকট উত্তরণে রাজনৈতিক দলগুলোকে উদ্যোগ নিতে হবে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, এনবিআর, দুদক যাদের এসব দেখার কথা তাদের দায়িত্বে গাফলতি রয়েছে।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে টিআইবির তথ্য কাজে লাগিয়ে সংশ্লষ্টদের ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে ইসি, এনবিআর, দুদকসহ রাজনৈতিক দলগুলোর পরামর্শ দেন ইফতেখারুজ্জামান।
টিআইবির পর্যালোচনায় বলা হয়, ভাইস চেয়ারম্যান পদে নতুন মুখ ৩১৭ জন। বিগত ৫ম উপজেলা পরিষদে ছিল ৬৫ জন। নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩১০ জন নতুন মুখ। ৮৪ জন নারী ভাইস চেয়ারম্যান রয়েছেন যারা গত উপজেলায় নির্বাচিত হয়েছিলেন।
টিআইবির তথ্য অনুযায়ী, ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনে তিন পদে মোট পাঁচ হাজার ৪৭২ জন প্রার্থী ছিলেন। চেয়ারম্যান পদে এক হাজার ৮৬৪ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুই হাজার ৯৫ জন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে অংশগ্রহণ করেছেন এক হাজার ৫১৩ জন।
আইন অনুযায়ী, দলীয় প্রতীকে ভোটের বিধান থাকলেও নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করতে এবার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলগতভাবে কোনো প্রার্থী ঘোষণা করেনি। তবে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগ দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী।
টিআইবি জানায়, প্রার্থীদের মধ্যে বর্তমানে মামলা রয়েছে ৮৫৮ জনের, অতীতে মামলা ছিল এক হাজার ১০৯ জনের। বর্তমানে ১০টিরও বেশি মামলায় অভিযুক্ত প্রার্থী ছয়জন, অতীতে ১০টিরও বেশি মামলা ছিল ৪০ জনের।
বিগত পাঁচ বছরে ১০০ শতাংশের বেশি আয় বেড়েছে নারী ভাইস চেয়ারম্যানসহ এমন জনপ্রতিনিধি রয়েছেন ২৫১ জন, আর ৫০ শতাংশের বেশি আয় বেড়েছে ৩৬০ জনের।