Logo
Logo
×

রাজনীতি

কোটাব্যবস্থা পুনর্বহাল মেধাবী শিক্ষার্থীদের সাথে প্রহসন : ছাত্রশিবির

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ জুন ২০২৪, ০৫:৩৮ এএম

কোটাব্যবস্থা পুনর্বহাল মেধাবী শিক্ষার্থীদের সাথে প্রহসন : ছাত্রশিবির

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৩০ ভাগ কোটাব্যবস্থা পুনর্বহালসংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় মেধাবী শিক্ষার্থীদের সাথে প্রহসন বলে উল্লেখ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। বৃহস্পতিবার (৬ জুন) ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম এক যৌথ বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন। 

বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, ‘১৯৭২ সাল থেকে চালু হওয়া বৈষম্যমূলক কোটাব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময়ে ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন করেছে। সর্বশেষ ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভূতপূর্ব অংশগ্রহণ এই আন্দোলনকে একটি চুড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যায়। ফলে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিল করতে বাধ্য হয় সরকার। কিন্তু সরকারি দফতরর, স্বায়ত্তশাসিত বা আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন করপোরেশনের চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলসংক্রান্ত পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সংবিধানের ১৯ (১), ২৯ (১) ও ২৯ (২) অনুচ্ছেদসমূহে চাকরির ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের সমান সুযোগের কথা বলা হয়েছে। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ। সকল স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে যারা এই মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে, জাতি তাদের আজীবন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। আমাদের স্বাধীনতার মূল চেতনা ছিল সাম্য, ন্যায় ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা।

কিন্তু স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরে এসেও মুক্তিযোদ্ধাদের বংশধরদের জন্য চাকরিতে ৩০ শতাংশ কোটাব্যবস্থা স্বাধীনতার মূল চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক বলে আমরা মনে করি। মুক্তিযোদ্ধারা কোনো স্বার্থ হাসিলের জন্য যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি। তারা একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংকল্প নিয়ে জীবনপণ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। তাই স্বয়ং মুক্তিযোদ্ধারাও এরকম বৈষম্যমূলক প্রথা চান না বলে আমাদের বিশ্বাস।’

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ক্রমাগত দুঃশাসন, লাগামহীন দুর্নীতি, অর্থপাচার আর লুটতরাজে জাতি আজ এক ক্রান্তিলগ্নে এসে উপনীত হয়েছে। শিক্ষিত তরুণসমাজ বেকারত্বের ঘানি টানতে টানতে আজ দিশেহারা। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (BBS) সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপ (২০২২) অনুযায়ী, দেশের শিক্ষিত বেকার তরুণদের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। উচ্চশিক্ষিতদের মধ্যে বেকারত্বের হার ১২ ভাগ। সংখ্যায় যা আট লাখের মতো। বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির চাকরি নিতে লাখ লাখ টাকার ঘুষ ও তদবির বাণিজ্যের কথা প্রায় শোনা যায়। সেখানে মেধার ভিত্তিতে চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরি ছিল শিক্ষিত তরুণদের ভরসাস্থল। এরকমই এক প্রেক্ষাপটে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের রায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বপ্নকে গলাটিপে হত্যা করার শামিল। এটি তাদের সাথে প্রহসন ছাড়া আর কিছুই নয়।’

নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করছি, সীমাহীন দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণে দেশের অর্থনীতি আজ সঙ্কটাপন্ন। অর্থনীতির এই বেহাল দশা থেকে দেশের মানুষের দৃষ্টি আড়াল করতেই কোটাব্যবস্থার পুনর্বহাল করে আরেকটা ইস্যু তৈরি করা হচ্ছে। তবে বাংলাদেশের সচেতন ছাত্রসমাজ ইতোমধ্যে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছে। ছাত্রশিবির সব সময় শিক্ষার্থীদের ন্যায্য নৈতিক দাবির সাথে ছিল, এখনো আছে এবং থাকবে। অনতিবিলম্বে হাইকোর্টকে সাধারণ ছাত্রদের এ অবস্থানকে বিবেচনায় নিতে হবে। এ ব্যাপারে আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

অন্যথায় ইসলামী ছাত্রশিবির ছাত্রসমাজকে সাথে নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি পূরণ করতে আবারো কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে।’

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন