ইন্ডিয়া আউট সমর্থনে জার্মানিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ
‘ভারতীয় দূতাবাসের আচরণ কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত’

ভারতীয় পণ্য বর্জন ও বাংলাদেশের সকল ক্ষেত্র থেকে ইন্ডিয়া আউটের সমর্থনে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের পর এবার জার্মানির রাজধানী বার্লিনে ভারতীয় দূতাবাস অবরোধ করে সমাবেশ ও বিক্ষোভ করেছেন প্রবাসী বাংলাদেশীরা। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২১ মে) বাংলাদেশ জার্মান হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার্সের উদ্যোগে বার্লিনে ভারতীয় দূতাবাসের সামনে এই বিক্ষোভ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
লন্ডনভিত্তিক গ্লোবাল বাংলাদেশীজ এলায়েন্স ফর হিউম্যান রাইটসের (জিবিএএইচআর) এই সমাবেশে আয়োজনে সহায়তা করে। মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত বিক্ষোভ প্রদর্শনের সময় বার্লিনের কূটনৈতিক পাড়ায় অন্যান্য কূটনৈতিক মিশন ও নগরবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে। বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশিদের বিক্ষোভে গোটা কূটনৈতিক এলাকা মুখরিত হয়ে উঠে।
সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন সাপ্তাহিক সুরমা সম্পাদক ও জিবিএএইচআরের আহ্বায়ক শামসুল আলম লিটন। আয়োজক সংগঠন বাংলাদেশ জার্মান হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার্সের পক্ষ থেকে সমাবেশে বক্তব্য দেন আরিফ আহমেদ সোহাগ, মো. সাব্বির আহমেদ, আনহার মিয়া, রুহুল আমিন খান প্রমুখ।
কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন জার্মান প্রবাসী বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ নির্ক দুলাল, বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. কবীর হোসেন, যুক্তরাজ্য শাখার সভাপতি জামান সিদ্দিকী ও সাধারণ সম্পাদক মোখলেসুর রহমান শামীম।
বিশিষ্ট মানবাধিকার সংগঠক শামসুল আলম লিটন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, অনির্বাচিত ও ফ্যাসিবাদী শাসনকে সমর্থনের মাধ্যমে ভারত বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে বিপন্ন করেছে। অন্যান্য প্রতিবেশীর সঙ্গে একই আচরণ করে দক্ষিণ এশিয়ায় নিরাপত্তা হুমকি তৈরি করেছে। দিল্লি যদি বাংলাদেশের জনগণ ও তাদের অধিকারের বিপক্ষে সমর্থন অব্যাহত রাখে, তাহলে বাংলাদেশের অধিকার বঞ্চিত মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে তার সমুচিত জবাব দেবে। ভারতীয় পণ্যের পাশাপাশি চিরদিনের জন্য বাংলাদেশকে ভারতীয় প্রভাবমুক্ত করা হবে। তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য বাংলাদেশ পাকিস্তানকে গুডবাই দিয়েছিলো। দিল্লিকেও অচিরেই গুডবাই দেওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
বিক্ষোভ চলাকালে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার অপতৎপরতা বন্ধ ও ১৫ লাখ অবৈধ ভারতীয় শ্রমিককে ফেরত নেওয়ার দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয় এবং প্লেকার্ড বহন করা হয়।
স্মারকলিপি গ্রহণ না করায় নিন্দা প্রকাশ
সীমান্ত হত্যা বন্ধ ও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের হস্তক্ষেপ বন্ধের দাবিতে সমাবেশের পর স্মারকলিপি প্রদান করা হবে বলে ভারতীয় দূতাবাসকে আগেই জানানো হয়েছিল। কিন্তু হাই কমিশন স্মারকলিপি গ্রহণে অপারগতা প্রকাশ করে। সমাবেশ চলাকালে কর্তব্যরত জার্মান পুলিশ হাইকমিশনের সঙ্গে পুনরায় যোগাযোগ করেও ব্যর্থ হয়। এতে বিক্ষোভকারীরা ভারতীয় দূতাবাসের অসৌজন্যমূলক ও কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত আচরণের তীব্র নিন্দা জানান।
ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. জয়শংকর ও তার পররাষ্ট্র দপ্তরকে এজন্য ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানানো হয়। সমাবেশ থেকে বলা হয়, এই ধরনের কূটনৈতিক আচরণ জেনেভা কনভেনশন এবং আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক শিষ্টাচারের পরিপন্থি।