দ্য ডিপ্লোম্যাটের নিবন্ধ
বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের রাজনৈতিক ব্যবহার
শাহাদাত হোসাইন
প্রকাশ: ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪৫ এএম
ছবি: দ্য ডিপ্লোম্যাট
বাংলাদেশের সামাজিক কাঠামোতেই ধর্মীয় সম্প্রীতির ঐতিহ্য বিদ্যমান আছে। যদিও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনাও অব্যাহত আছে। আর এই উত্তেজনা রাজনীতি এবং সাধারণ মানুষের বোঝাপড়াকে প্রায়ই প্রভাবিত করে। বাংলাদেশে হিন্দুদের যে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয় তার দিকে মনোযোগ দেওয়ার পরিবর্তে রাজনৈতিক দলগুলো, বিশেষ করে আওয়ামী লীগের (আওয়ামী লীগ) সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এই সমস্যাকে রাজনীতিকরণের ইতিহাস আছে।
৫ আগস্টে হাসিনার পতনের পর আওয়ামী লীগ আবারও সাম্প্রদায়িক ইস্যুকে রাজনীতিকরণের কৌশল অবলম্বন করে, যা বাংলাদেশে হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে অবিশ্বাস আরও বাড়িয়ে তোলে। আওয়ামী লীগ ধর্মীয় ও রাজনৈতিক পরিচয়ের ব্যবধান রেখাকে মুছে দিয়ে ক্রমবর্ধমানভাবে হিন্দু সম্প্রদায়কে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। আর এটিই হিন্দুদের জন্য দীর্ঘমেয়াদী ঝুঁকি তৈরি করেছে।
হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশে ভিন্নমত দমনে শিক্ষার্থীদের নিপীড়নের সঙ্গে যুক্ত আ.লীগের নেতাকর্মীরা নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়ে। আ.লীগের হিন্দু-মুসলিম উভয় ধর্মের নেতারা নজরদারি, এমনকি আক্রমণের শিকার হন। তবে এই সংঘাত নিছক কোনো সাম্প্রদায়িক ছিল না, রাজনৈতিকও ছিল। দৈনিক প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৫ থেকে ২০ আগস্টের মধ্যে সংখ্যালঘুদের মোট ১০৬৮টি বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা হয়েছে। যার মধ্যে অন্তত ৫০৬ বাড়ি-প্রতিষ্ঠানের ক্ষতিগ্রস্ত মালিকের আ. লীগের রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন।
এমনকি বাংলাদেশের হিন্দু জনগোষ্ঠীর স্বার্থের প্রতিনিধিত্বকারী গোষ্ঠীগুলোকেও রাজনীতিকরণ করা হয়েছে। সংখ্যালঘুদের সুপরিচিত অ্যাডভোকেসি গ্রুপ বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতারাও নিজেদের সম্প্রদায়ের বৃহত্তর স্বার্থকে উপেক্ষা করে নিজেদের ব্যক্তিগত আর্থ-সামাজিক সুবিধার জন্য আ. লীগের এজেন্ডাকে সমর্থন করে যাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, ঐক্য পরিষদের কিছু নেতাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হাসিনার শাসনামলের সুবিধাভোগী হিসেবে অভিযুক্তও করা হয়। আর সমালোচকরা এর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেছেন।
যে বিক্ষোভ হাসিনার পতন ডেকে আনে সেই বিক্ষোভ চলার সময় বিক্ষোকারীদের হাসিনা রাজাকারদের বংশধর বলে অবমাননাকর মন্তব্য করেছিলেন। পরবর্তীতে বিক্ষোভের সময় হাসিনার ওই মন্তব্যের বিদ্রূপ করে স্লোগান দিয়েছিলেন, ‘তুমি কে, আমি কে? রাজাকার, রাজাকার!’ সেই সময় ওই স্লোগানের জন্য ঐক্য পরিষদও আ.লীগের সুরে সুর মিলিয়ে বিক্ষোভকারীদের শাস্তির আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করেছিল। যদিও তারপর আন্দোলন আরও বেগবান হযেছিল। সম্প্রতি ঐক্য পরিষদ দাবি করেছে, হাসিনা-পরবর্তী শাসনামলে ৯জন হিন্দুকে হত্যা করা হয়েছে। যদিও নেত্র নিউজের একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এই দাবিটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। এতে গোষ্ঠীটির বিশ্বাসযোগ্যতা আরও কমেছে।
এদিকে, ভারতের হিন্দুত্ববাদী দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এবং দেশটির কিছু গণমাধ্যম বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ইস্যু ঘিরে নিজস্ব এজেন্ডা সামনে নিয়ে আসছে। ৮ আগস্ট আল জাজিরা, ১০ আগস্ট আনাদোলু আজানস, ১৮ আগস্ট বিবিসি এবং ২৯ আগস্ট দৈনিক প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার বিষয়ে ভারতীয় মিডিয়া ভুয়া তথ্য এবং গুজব ছড়িয়েছে। ভারত থেকে পরিচালিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কিছু অ্যাকাউন্ট থেকেও গুজব ছড়ানো হয়।
অন্যদিকে, ২০২১ সালে হাসিনার শাসনামলে যখন বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা শুরু হয় এবং ২৭ জেলায় ১১৭টি হিন্দু মন্দিরে হামলা হয়েছিল তখন ভারতকে উল্লেখযোগ্যভাবে নীবর থাকতে দেখা যায়। বিপরীতে, ২০২৪ সালে যখন বাংলাদেশে ৩১ হাজার ৪১৬টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপন নিরাপদে হয়েছিল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তখনো ছোটখাটো বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ত্রুটি খুঁজে পেয়েছিল। দুর্গাপূজার সময় এক হিন্দু মেয়ের হয়রানির ঘটনাকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পুরো উৎসবের ব্যর্থতা হিসেবে দেখেছিল। এই ভিন্ন প্রতিক্রিয়াগুলিতেই বুঝা যায় ভারত কীভাবে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সমস্যাগুলোর মূলে সমধানের চেয়ে রাজনীতিকরণ করে।
শেখ হাসিনার শাসনামলে হিন্দুরা সুরক্ষিত ছিল ধারণা প্রকৃতই একটি মিথ্যা বয়ান। আওয়ামী লীগের ঘোষিত ধর্মনিরপেক্ষপন্থী অবস্থান এবং ভারতের সঙ্গে তার মিত্রতার কারণে হাসিনা মূলত হিন্দু ভোটারদের সমর্থন পেয়েছিলেন। এই কৌশল সত্ত্বেও, আ. লীগ হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ধারাবাহিক সহিংসতা এবং সাম্প্রদায়িক আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিকের মতে, ১৯৫৫ সাল থেকে হিন্দু সম্প্রদায় আ. লীগের হাতে ‘জিম্মি’।
হাসিনার শাসনামলে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার দুটি বড় ঘটনা ঘটেছে। এর একটি হলো ২০১২ সালে বৌদ্ধ সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে এবং অপরটি ২০২১ সালে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে। এই আক্রমণগুলোর কোনো সূরাহা হয়নি এবং ভুক্তভোগীরা বিচার পায়নি। এমনিক হাসিনার শাসনামলে ১০ বছরেরও বেশি সময় পার হলেও, রামুতে বৌদ্ধদের বিরুদ্ধে ২০১২ সালের সাম্প্রদায়িক হামলা সম্পর্কিত সব মামলায় যথেষ্ট প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও, এখনো বিচারাধীন। আর সব আসামি জামিনে মুক্ত আছেন।
বাংলাদেশি মানবাধিকার গোষ্ঠী আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্যানুযায়ী, হাসিনা শাসনামলে ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর ৩৬৭৯টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব হামলার ব্যাপারে প্রশাসনের পদক্ষেপ খুব সীমিত ছিল। সরকার কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নিয়ে শুধু বিরোধী দলকে দোষারোপ করেছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, হিন্দু ও বৌদ্ধ মন্দির এবং সম্পত্তির উপর কিছু আক্রমণের সঙ্গে আ. লীগের নেতাকর্মীরা জড়িত ছিল, বিশেষ করে ২০১৬ সালে নাসিরনগরে হিন্দুদের উপর হামলায়। এসবই সংখ্যালঘু অধিকারের প্রতি দলটির প্রতিশ্রুতি নিয়ে আরও প্রশ্ন তোলে।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের সাবেক প্রধান ও বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক এবং হাসিনা শাসনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব বেনজীর আহমেদ ব্যক্তিগত রিসোর্ট তৈরি করতে তুলনামূলক কম দামে জমি বিক্রি করতে হিন্দুদের বাধ্য করেছিলেন বলে জানা গেছে। এসব অভিযোগ থেকে বুঝা যায়, আ. লীগের নেতাকর্মীরাও সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা চালিয়েছে এবং তাদের সম্পত্তি দখল করেছে।
বাংলাদেশের অভিজাত হিন্দুরা আর্থ-সামাজিক সুবিধার জন্য প্রায়ই আ. লীগ ও ভারতপন্থি অবস্থান নেয়। যদিও বাংলাদেশের অধিকাংশ হিন্দু রাজনৈতিকভাবে জড়িত নয়। আর অভিজাতরা অন্য সব ধর্মের স্বদেশীদের মতো রাষ্ট্রের কাছ থেকে শান্তি, নিরাপত্তা এবং মর্যাদা দাবির পরিবর্তে নিজেদের আখের গোছানোতে মনোনিবেশ করেছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে বিভিন্ন জেলার ৫০ জনের বেশি হিন্দুর সঙ্গে আমার কথোপকথনে একটি স্পষ্ট বিষয় ফুটে উঠেছে। তারা রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার চেয়ে নিরাপত্তা এবং সমতাকে অগ্রাধিকার দেয়।
হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনও জুলাই বিপ্লবে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছিল। অন্তত ৯জন হিন্দু বাংলাদেশি এই বিক্ষোভে প্রাণ হারায়। বেশ কয়েকজন হিন্দু ব্যক্তি আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও পালন করেছিলেন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, দেবাশীষ চক্রবর্তীর ডিজিটাল পোস্টারগুলি বিপ্লবের প্রতীক হয়ে ওঠেছিল এবং অনলাইনে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়। তবুও, অভিজাত হিন্দুরা হিন্দু সম্প্রদায়ের অধিকার, এজেন্ডা এবং অবদানকে বিভ্রান্ত ও রাজনীতিকরণ করে চলেছে।
ভারত হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার পর অনেক বিপ্লবী ভারতের সমালোচনায় সোচ্চার হয়ে ওঠেন। এর মধ্যে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সীমান্ত হত্যা বৃদ্ধি যা হাসিনার শাসনামলেও গুরুতর সমস্যা ছিল—বিপ্লবীদের ক্ষোভকে আরও বাড়িয়ে তোলে। বিপ্লবের পর ১৬ বছর বয়সী স্বর্ণ দাস এবং ১৫ বছর বয়সী জয়ন্ত কুমার সিংহ নামে দুই বাংলাদেশি হিন্দু নাগরিক বিএসএফের হাতে নিহত হয়।
সামাজিক মাধ্যমে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন ৫-৮ আগস্ট অস্থির সময়ে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিরুদ্ধে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা কথা বললেও সীমান্তে দুই হিন্দু হত্যার বিষয়ে কেন তারা নীরব ছিলেন? অভিজাত হিন্দুদের প্রতিক্রিয়া ছিল ভারতের প্রতি সমর্থন দ্বিগুণ করার জন্য। ইসকন চট্টগ্রাম পুণ্ডরিক ধামের সভাপতি চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী সীমান্তে দুই হিন্দুর মৃত্যুর বিষয়ে বাংলাদেশিদের ক্ষোভকে ‘মায়া কান্না’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন এবং ভারতের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়ার সমালোচনা করেন।
ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনসায়নেসকে (ইসকন) বাংলাদেশে তার সামাজিক কাজের জন্য পরিচিত। কিন্তু সম্প্রতি চট্টগ্রামে একটি ঘটনা ইসকন সম্পর্কে ভিন্ন ভাবনা তৈরি করেছে। চট্টগ্রামে এক ব্যবসায়ী সামাজিক মাধ্যমে ইসকন সম্পর্কে সমালোচনামূলক মন্তব্য পোস্ট করলে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন তাকে লাঞ্ছিত করে এবং তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করেছে অভিযোগ উঠে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হস্তক্ষেপ করলে, কিছু হামলাকারী তাদের ওপর হামলা চালায়। এমনকি তাদের হামলায় এসিড ব্যবহার করা হয়েছে বলেও জানা যায়। এই উত্তেজনার মধ্যেই আ.লীগের লোকজন ইসকনকে উসকে দিচ্ছেন বলে মনে হচ্ছে। এর মাধ্যমে সম্ভাব্যভাবে সাম্প্রদায়িক সহিংসতাও উসকে দিচ্ছে যা অন্তর্বর্তী সরকারকে অস্থিতিশীল করতে পারে।
ক্ষমতা গ্রহণের পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ঢাকার ঐতিহাসিক ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের তাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, ‘অধিকার সবার জন্য সমান। বাংলাদেশে আমরা সবাই সমান অধিকারের অধিকারী মানুষ।’
ইউনূস সরকার দুর্গাপূজায় দুই দিনের সরকারি ছুটি ঘোষণাসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের দীর্ঘদিনের দাবির প্রতি সাড়া দিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা হিন্দু সম্প্রদায়ের দাবি পূরণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারপরও ইউনূস প্রশাসন রাজনৈতিক উসকানির মুখে পড়ছেন। বিশেষ করে অসন্তুষ্ট আ.লীগ নেতাকর্মীদের কাছ থেকে।
এসব উত্তেজনার মধ্যেই হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা সুনির্দিষ্ট দাবিতে ঢাকায় লংমার্চের ঘোষণা দিয়েছেন। ইউনূস সরকার এসব উদ্বেগ নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে; সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের দাবি-দাওয়া নিয়ে সংলাপ ও আলোচনার জন্য সরকারের দরজা সব সময় খোলা। তবুও হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা আলোচনার বিষয়ে খুব কমই আগ্রহ দেখিয়েছেন।
এই ঘটনাগুলি ইঙ্গিত দেয়, বর্তমান প্রশাসনের সত্যিকারের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও আওয়ামী লীগ ছাড়া অভিজাত হিন্দু নেতারা অন্য কোনো সরকারের সঙ্গে হয়তো প্রকাশ্যে কাজ করতে চাইছেন না। এই ধরনের প্রবণতা হিন্দু ও মুসলিম নাগরিকদের মধ্যে অবিশ্বাস বাড়িয়েছে, যা হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও ভালো থাকাকে প্রভাবিত করছে।
অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজের দিকে বাংলাদেশের যাত্রার জন্য ধর্মীয় পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠতে হবে। হিন্দু সম্প্রদায়কে রাজনৈতিক হাতিয়ার না হয়ে দেশের বহুসাংস্কৃতিক কাঠামোর একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে থাকা উচিত। শুধুমাত্র হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রকৃত আস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমেই বাংলাদেশ সন্দেহ ও বলির পাঁঠা হওয়ার চক্র ভাঙার আশা করতে পারে।
লেখক : নয়া দিল্লির সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের রিসার্চ স্কলার। দ্য ডিপ্লোম্যাটে প্রকাশিত ইংরেজি নিবন্ধটি বাংলা আউটলুক পাঠকদের জন্য ভাষান্তর করা হলো।