Logo
Logo
×

অভিমত

ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি কতটা বদলাবে?

Icon

শেখ ওমর

প্রকাশ: ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০০ পিএম

ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি কতটা বদলাবে?

গত মঙ্গলবারে অনুষ্ঠিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বিজয়ী হওয়ায় বাংলাদেশে অনেকেই আশঙ্কা/প্রত্যাশা করছেন যে, ট্রাম্প ক্ষমতায় বসলে বাংলাদেশকে নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে। কেউ কেউ তো আগে থেকেই আশায় বুক বাঁধছেন যে, ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশের একটি গণধিকৃত দলকে পুনরায় বাংলাদেশের ক্ষমতায় বসিয়ে দিবেন!

আসলে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণে সেই দেশের প্রেসিডেন্টের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকলেও ওই দেশের পররাষ্ট্রনীতি এককভাবে প্রেসিডেন্ট বা রাজনৈতিক নেতৃত্ব দ্বারা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রিত হয় না। মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণের পেছনে রয়েছে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা, প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি, যারা নানা দিক থেকে পররাষ্ট্রনীতির ওপর প্রভাব বিস্তার করে থাকে। 

যেমন:

১. বড় কর্পোরেট হাউজ ও বাণিজ্যিক সংস্থা 

মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে বড় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। যেমন: তেল, অস্ত্র, প্রযুক্তি, ফার্মাসিউটিক্যাল ও ফিনান্সিয়াল প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রভাব উল্লেখযোগ্য। এ ধরনের সংস্থা মার্কিন অর্থনীতির ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে এবং নিজেদের ব্যবসার সুবিধার্থে তারা বিভিন্ন লবিস্ট বা চাপ প্রয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে সরকারের নীতিতে প্রভাব তৈরি করে। এই কর্পোরেট হাউজগুলো প্রকাশ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পছন্দের প্রার্থীকে ডোনেশন দেয়। নির্বাচিত প্রেসিডেন্টও ক্ষমতায় গিয়ে স্বাভাবিকভাবেই সেই কর্পোরেট হাউজগুলোর স্বার্থ রক্ষা করে।  

উদাহরণস্বরূপ, ২০০৩ সালের ইরাক যুদ্ধে মার্কিন ও ব্রিটিশ তেল-গ্যাস ও অস্ত্র নির্মাতা কোম্পানিগুলোর বিপুল স্বার্থ ও বিনিয়োগ ছিল। যুদ্ধ শেষেও মধ্যপ্রাচ্যের তেল সরবরাহের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ওই অঞ্চলে বিশেষ কৌশল অবলম্বন করেছে, যা মূলত তেল খাতের বড় কর্পোরেটদের প্রভাবেই গড়ে উঠেছে।

২. থিঙ্ক ট্যাংক ও গবেষণা সংস্থা 

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন থিঙ্ক ট্যাংক, যেমন- Council on Foreign Relations (CFR), Brookings Institution, এবং Heritage Foundation মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এরা নীতিনির্ধারকদের গবেষণা, বিশ্লেষণ ও পলিসি সুপারিশ প্রদান করে। অনেক ক্ষেত্রেই থিঙ্ক ট্যাংকের বিশ্লেষণ বা সুপারিশ সরাসরি পররাষ্ট্রনীতিতে প্রভাব ফেলে।

৩. মিডিয়া 

মার্কিন কর্পোরেট মিডিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে জনমত গঠনে। নীতিনির্ধারকদের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে কর্পোরেট হাউজগুলো তাদের মালিকানাধীন মিডিয়াকে ব্যবহার করে। আমেরিকান মিডিয়া জনগণের মধ্যে কোনো বিষয় নিয়ে জনমত তৈরি করলে নীতিনির্ধারকরা সেই বিষয়ের প্রতি মনোযোগ দিতে বাধ্য হন। উদাহরণস্বরূপ, ২০০৩ সালে ইরাক যুদ্ধের আগে মিডিয়া ইরাকের বিরুদ্ধে যুদ্ধকে বৈধ প্রমাণে নানা প্রোপাগান্ডা ছড়িয়েছে, যা জনমত গঠনে সহায়ক ছিল এবং সরকার যুদ্ধের সিদ্ধান্ত নিতে সহজে এগোতে পেরেছে।

৪. গোয়েন্দা সংস্থা 

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা, বিশেষ করে সিআইএ পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে অনেক শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে থাকে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ এবং গোপন কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে তারা মার্কিন প্রশাসনের কৌশল নির্ধারণে সহায়তা করে। উদাহরণস্বরূপ, ঠান্ডা যুদ্ধ চলাকালে সিআইএ বিভিন্ন দেশে গোপনে রাষ্ট্রক্ষমতা পরিবর্তনে ভূমিকা রেখেছে।

৫. রাইট গ্রুপ ও মানবাধিকার সংস্থা 

মানবাধিকার সংস্থা ও রাইট গ্রুপগুলো বিভিন্ন মানবাধিকার ইস্যুতে পররাষ্ট্রনীতিতে প্রভাব ফেলে। যদিও তাদের প্রভাব সরাসরি তেমন শক্তিশালী নয়, তবে তারা নীতিগত বিতর্ক উসকে দিতে সক্ষম। বিশেষত, মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে তারা নীতিনির্ধারকদের ওপর জনমতের চাপ সৃষ্টি করে থাকে।

৬. প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্র দপ্তর 

মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণে প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্র দপ্তরের রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও কর্মকর্তাদের একটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব রয়েছে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন বা ফ্রান্সের মতো বৃহৎ ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলোর সুনির্দিষ্ট কিছু রাষ্ট্রীয় নীতি, বাণিজ্যিক লক্ষ্য ও কৌশলগত স্বার্থ (Strategic Objective) থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনুসৃত "Containment Policy"-এর রূপকার কূটনীতিবিদ জর্জ কেনান তাঁর "American Diplomacy" (১৯৫১) গ্রন্থে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ে লিখেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত আদর্শগত জোটে না জড়িয়ে, বরং সরাসরি জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করতে মনোযোগী হওয়া। তাঁর দৃষ্টিকোণ অনুযায়ী, দীর্ঘমেয়াদি জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের স্থির, ধৈর্যশীল এবং দৃঢ় অবস্থান নেওয়া উচিত।

সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার তাঁর বই "Diplomacy" (১৯৯৪)-তে , "America has no permanent friends or enemies, only interests." অর্থাৎ, মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি মূলত জাতীয় স্বার্থকে ঘিরে গড়ে ওঠে, যেখানে মিত্রতা বা শত্রুতা স্থায়ী নয়, বরং পরিস্থিতি ও স্বার্থের ওপর তা নির্ভরশীল। কিসিঞ্জারের এই উক্তিটিই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির মূল দর্শন। 

তাই ওয়াশিংটনের ক্ষমতার কেন্দ্রে প্রেসিডেন্ট বা দলের পরিবর্তন হলে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নে বড়জোর মাধ্যম (means) ও স্টাইল বদলায়, কিন্তু রাষ্ট্রীয় নীতি, বাণিজ্যিক লক্ষ্য ও কৌশলগত স্বার্থগুলো অপরিবর্তিত থাকে। 

উদাহরণস্বরূপ, রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ও ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ভিন্ন দলের হলেও, তাদের প্রশাসন আফগানিস্তান ও মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী উপস্থিতি বজায় রেখেছে। যদিও ওবামা প্রশাসন বুশের তুলনায় অনেক ক্ষেত্রেই সরাসরি সামরিক হস্তক্ষেপ থেকে দূরে সরে আসে এবং ড্রোন হামলা ও গোপন অভিযানের ওপর জোর দেয়।

একইভাবে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আমলে "আমেরিকা ফার্স্ট" নীতির মাধ্যমে ন্যাটো ও আন্তর্জাতিক জোটগুলো থেকে কিছুটা দূরে সরার চেষ্টা হয়। তবে বাইডেন পুনরায় ঐতিহ্যবাহী জোটবদ্ধ নীতির দিকে ফিরে আসেন। এই পরিবর্তন কৌশলের ক্ষেত্রে হলেও যুক্তরাষ্ট্রের মূল পররাষ্ট্রনীতির লক্ষ্য, যেমন - বৈশ্বিক নেতৃত্ব বজায় রাখা, রাশিয়া ও চীনের সাথে প্রভাব বিস্তার প্রতিযোগিতা ও আন্তর্জাতিক বাজারে মার্কিন অর্থনৈতিক প্রভাব বজায় রাখা—এসবই অপরিবর্তিত থাকে।

তাই ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে পুনরায় ক্ষমতায় বসলে, তার নেতৃত্বে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে, বিশেষত রাষ্ট্রের স্ট্র্যাটেজিক অবজেক্টিভে, বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন আসবে না। হ্যাঁ, অবশ্যই পলিসি কার্যকর করার মাধ্যম/উপায় ও কৌশলে কিছু পরিবর্তন আসবে। তবে সেই পরিবর্তন কতটা গভীর হবে এবং তা বিশ্বজুড়ে, বিশেষত মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় কী প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে খুব আনন্দিত বা খুব দুঃখিত হওয়াটা শেষ পর্যন্ত কোনো নিশ্চিত পরিণতি দিবে না। 

ট্রাম্প প্রশাসন মধ্যপ্রাচ্যে বিশেষ করে ইসরায়েলের প্রতি অতীতেও খুব শক্তিশালী সমর্থন জানিয়েছে। তিনি ক্ষমতায় থাকাকালে ইসরায়েলের পক্ষে জেরুজালেমকে রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি এবং যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস স্থানান্তরের মতো পদক্ষেপ নেওয়া হয়। ট্রাম্প ক্ষমতায় ফিরে তিনি ইসরায়েলকে যুদ্ধ ও হত্যাকাণ্ডে আরও ব্যাপক সমর্থন দেবেন। হামাস ও হিজবুল্লাহকে নির্মূল করার ক্ষেত্রেও ট্রাম্প অবশ্যই ইসরায়েলের পক্ষে থাকবেন। 

ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে ইরান পারমাণবিক চুক্তি (JCPOA) থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিয়েছিলেন এবং ইরানের ওপর কড়া নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন। ট্রাম্প এবারের মেয়াদে ইরানের ওপর আগের মতো চাপ বজায় রাখা এবং হয়তো আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপ নিতে পারেন। ট্রাম্প এবারও ইরানকেই আঞ্চলিক উত্তেজনার মূল উৎস হিসেবে দেখবেন। তিনি সামরিক ও অর্থনৈতিক চাপের মাধ্যমে ইরানের প্রভাব কমানোর চেষ্টা করবেন। তবে তিনি সরাসরি সামরিক অভিযানের চেয়ে নিষেধাজ্ঞা ও প্রভাব বিস্তারের অন্যান্য কৌশলকে অগ্রাধিকার দিতে পারেন।

দক্ষিণ এশিয়ার বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান কিছুটা ভিন্ন হতে পারে। ট্রাম্প ভারতকে চীনের বিরুদ্ধে একটি স্ট্র্যাটেজিক মিত্র হিসেবে দেখে থাকেন। ট্রাম্পের নীতিতে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভারতের ভূমিকা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে, যা চীনের প্রতি চাপ সৃষ্টিতে কাজে আসবে।

বাংলাদেশের বিষয়ে ট্রাম্প গুরুত্ব কিছুটা কমাতে পারেন এবং কিছু ক্ষেত্রে ভারতের প্রভাব বাড়ানো হতে পারে। ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য বাংলাদেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও সুশাসনের মতো বিষয়গুলো কতটা অগ্রাধিকার পাবে তা প্রশ্নবোধক, কারণ তার প্রশাসন চীনের প্রভাব নিয়ন্ত্রণে ভারতকে প্রাধান্য দিতে চাইবে। তাই বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের সমর্থন কিছুটা কম হতে পারে। তবে ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশে স্থিতিশীল সরকার বা ভারতের অনুকূলে থাকা প্রশাসনকে সমর্থন দিতে পারে, যার মূল লক্ষ্য হবে চীনের প্রভাব হ্রাস করা। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের ভারতমুখী প্রবণতা আরও বাড়তে পারে। 

তবে সরাসরি মার্কিন সমর্থন কিছুটা যদি কমেও আসে, এটি বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় খুব বড় প্রভাব ফেলবে না। ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারকে বাংলাদেশের ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার ন্যূনতম প্রয়োজনও আমেরিকার নেই। কারণ বঙ্গোপসাগরে মার্কিন স্ট্র্যাটেজিক অবজেকটিভ কোনোভাবেই ট্রাম্পের কারণে বদলাবে না এবং বঙ্গোপসাগরে মার্কিন স্বার্থরক্ষার জন্য বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে অস্থিতিশীল করা যাবে না। তাছাড়া মার্কিন কংগ্রেসের অনেক সদস্যই বাংলাদেশ, মায়ানমার-সহ দক্ষিণ এশিয়ার বিষয় নিয়ে খুবই আগ্রহী। ফলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একক সিদ্ধান্তে সবকিছু পরিবর্তন হয়ে যাবে না।

বিশেষত, দিল্লিতে পলাতক এক নৃশংস খুনিকে বাংলাদেশে পুনঃস্থাপনের ন্যূনতম তাগিদও ট্রাম্প অনুভব করবেন না। ভারত-প্রভুর দয়া ও সাহায্যে ওই খুনি সামান্য যতটুকু খুদ-কুঁড়া আদায় করতে পারবে, অতটুকুই তার প্রাপ্তি হবে। ট্রাম্প-মোদি মিলে ড. ইউনূসকে বঙ্গোপসাগরে ছুড়ে মারছেন—এমন ঘটনাক্রম তামিল মুভিতে সম্ভব হলেও বিশ্ব রাজনীতি ও ভূ-রাজনীতির বাস্তবতায় তা এক প্রকার অসম্ভব।

শেখ ওমর, অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট।

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন