শেয়ারবাজারে দরপতন চলছেই। একই সাথে কমে যাচ্ছে লেনদেন। পরিস্থিতি অনেকটাই পতিত স্বৈরাচারের আমলে এক সময় প্রায় স্থবির হয়ে পড়ার দিকে যাচ্ছে যা আশঙ্কাজনক।
দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গতকাল বুধবার ৭২ পয়েন্ট বা প্রায় আড়াই শতাংশ কমেছে। তাতে ডিএসইএক্স সূচকটি কমে ৫ হাজার ১৭০ পয়েন্টে নেমে এসেছে। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচকটিও এদিন ১২১ পয়েন্ট বা প্রায় ১ শতাংশ কমেছে।
ঢাকার বাজারে আজ লেনদেন হওয়া ৩৯৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩০৬টি বা ৭৭ শতাংশই দর হারিয়েছে। দাম বেড়েছে ৫২টি বা ১৩ শতাংশ কোম্পানির, আর অপরিবর্তিত ছিল ৪১টির বা ১০ শতাংশের। চট্টগ্রামের বাজারে লেনদেন হওয়া ১৯৪ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২৭টির বা ৬৫ শতাংশের দাম কমেছে। দাম বেড়েছে ৪২টির বা ২২ শতাংশের, আর অপরিবর্তিত ছিল ২৫টির বা ১৩ শতাংশ কোম্পানির।
শেয়ারের দাম কমার পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। ঢাকার বাজারের লেনদেন আগের দিনের চেয়ে ৩৬ কোটি টাকা কমে দাঁড়িয়েছে ৩২২ কোটি টাকায়। চট্টগ্রামের বাজারে লেনদেন হয়েছে ৩ কোটি টাকার, যা আগের দিনের চেয়ে ১১ কোটি টাকা কম।
দরপতনের কারণে বিনিয়োগকারীরা যে বাজার ছেড়ে যাচ্ছেন, তার প্রমাণ মেলে বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাব সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড বা সিডিবিএলের তথ্যে।
তাদের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসের ১৪ কার্যদিবসে সাড়ে ৬ হাজার বিনিয়োগকারী তাদের বিও হিসাবে থাকা সব শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। তাতে এসব বিও হিসাব এখন শেয়ারশূন্য বিও হিসাবে পরিণত হয়েছে।
বাজারে এখন শেয়ারসহ বিও হিসাবের সংখ্যাও কমে গেছে। সিডিবিএলের হিসাবে, গত ৩০ সেপ্টেম্বর শেয়ার আছে, এমন বিও হিসাবের সংখ্যা ছিল ১২ লাখ ৯০ হাজার ৩৫৫। গত মঙ্গলবার দিন শেষে এ সংখ্যা কমে হয়েছে ১২ লাখ ৮৫ হাজার ৯০৬।
বাজারের এই মন্দাভাবের পেছনে আস্থার সংকট অন্যতম প্রধান। দীর্ঘদিন ধরে নানা অনিয়মের ফলে বাজারে অবস্থা খারাপ হয়েছে। স্বৈরাচার পতনের পর বেশকিছু সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করা হচ্ছে এসব সংস্কারের প্রভাবে লম্বা সময়ে সুফল পাওয়া যাবে। তবে, অচিরেই শেয়ারবাজারে আস্থা ফেরানো জরুরি। দেশের অর্থনীতির জন্য গতিশীল শেয়ারবাজার দরকারি।