মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আওয়ামী বয়ান অস্বীকার মানে মুক্তিযুদ্ধ অস্বীকার নয়
সহুল আহমদ ও সারোয়ার তুষার
প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:০৮ পিএম
বিগত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী জমানায় জারিকৃত কয়েকটি জাতীয় দিবস বাতিল করার পর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস চর্চায় আওয়ামী লীগের বয়ান নিয়ে গুরুতর আলাপ শুরু হয়েছে। এর বিতর্কের একেবারে কেন্দ্রে রয়েছে বাতিলকৃত জাতীয় দিবসের মধ্যে ৭ মার্চের উপস্থিতি। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে ৭ মার্চের গুরুত্ব ও তাৎপর্যের দিকে ইঙ্গিত করে এর ২০২২ সালে ঘোষিত ‘জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস’ বাতিলের সমালোচনাতে সরব হয়েছেন অনেকেই।
দ্যা ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম সাম্প্রতিক এই ইস্যুতে লিখিত এক কলামে বলেছেন, হাসিনার দুঃশাসনের মাপকাঠিতে বঙ্গবন্ধুকে বিচার করা ঠিক হবে না। মুজিবকে একাত্তরের পূর্বে ও পরে, তার ক্ষমতায় যাওয়ার আগে ও পরে – এ দুই বর্গে ভাগ করে আলোচনা করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেছেন, “বাংলাদেশের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ অন্যান্য ব্যক্তিদের মতো তাকেও সামগ্রিকভাবে মূল্যায়ন করতে হবে। সবচেয়ে ভালো হবে, যদি যোগ্য ইতিহাসবিদদেরকে এই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়—রাজনীতি সংশ্লিষ্টদের নয়।”
হাসিনার কুশাসন দিয়ে শেখ মুজিবকে বিচার করা যাবে না, মাহফুজ আনামের এমনতর পরামর্শের সাথে আমরা একমত। যে কাউকে তার নিজের শাসনামল দিয়েই বিচার করতে হবে। সে জায়গা থেকে, যখন ৫ আগস্টের পর দেশের কোথাও কোথাও শেখ মুজিবের ভাস্কর্য ভাঙা হচ্ছিল, তখন আমরা বলেছিলাম, মুজিবের ভাস্কর্য ভাঙার মাধ্যমে ফ্যাসিবাদীদের হাত থেকে মুজিবকে উদ্ধার করা হচ্ছে। হাসিনার শাসনামলে মুজিব ছিলেন ফ্যাসিবাদের আইকন। তার ভাস্কর্য ভাঙা মানে মুজিবের স্মৃতি মুছে ফেলা নয়; বরং আওয়ামী-ফ্যাসিবাদের আইকন ভাঙ্গা।
কিন্তু মাহফুজ আনামের পুরো লেখা হাসিনার কুশাসন দিয়ে মুজিবকে বিচার করতে মানা করে মুজিব বিষয়ে হাসিনামলের ‘বিচার’কেই শিরোধার্য করার ধ্রুপদী নমুনা মাত্র। মুজিব বিষয়ে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক নেতাদের মূল্যায়নে আপত্তি নেই, কিন্তু অন্য কেউ করলে তখন কাজটা তিনি দিতে চান ‘যোগ্য ইতিহাসবিদদের’ হাতে।
হাসিনার শাসনামল কীভাবে মুজিবের নামকে এস্তেমাল করেছে তিনি তার নানা ফিরিস্তি দিয়েছেন। কিন্তু ২০২১ সালে ৭ মার্চকে জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা সে ‘এস্তেমাল’ এর অংশ হলো কি না, তা নিয়ে মাহফুজ আনাম নিঃসংশয়। তিনি মুজিবের দুই জীবন আলাদাভাবে পাঠ করতে চান; অথচ মুজিবের ৭ মার্চের ভাষণ এবং সে ভাষণকে অতি সম্প্রতি ‘জাতীয় দিবসকরণ’ — দুটোকে আলাদা পাঠ করতে চান না তিনি। তার মতে, মুজিব বিষয়ে হাসিনা বা আওয়ামী লীগ যে মূল্যায়ন দিতেন, তাতে কোনো সমস্যা নেই, সমস্যা হচ্ছে কেবল তার এস্তেমালের করুণ দশায়।
অর্থাৎ, হাসিনার কুশাসনের ‘বিচার’-এ দোষ নাই, কেবল দোষ ছিল ‘আচারে’।
উল্লেখ্য জুলাই মাসে, যখন আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের ইতিহাসের ভয়াবহতম গণহত্যা ঘটিয়ে ফেলেছে, মাহফুজ আনাম সাহেব তখন “ভুল থেকে শিক্ষা নেবো, নাকি বারবার ভুল করে যাব?” শিরোনামে একটি সতর্কতামূলক কলাম লেখেন (ডেইলি স্টার, ২৬ জুলাই, ২০২৪)। আপাতদৃষ্টিতে তিনি আন্দোলনের পক্ষেই অবস্থান নিয়েছেন, কিন্তু শুরুতেই যা বলেছেন, তা আসলে আওয়ামী লীগের সরকারি বক্তব্যকেই গ্রহণ করার আরেক ক্লাসিক নমুনা। তিনি লেখেন, “কয়েকজন মন্ত্রীর দাবি অনুযায়ী বিশেষ মতাদর্শ ও রাজনৈতিক গোষ্ঠী কর্তৃক ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম করে দেশকে অস্থিতিশীল করা, নানা কারণে বিক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষকে উসকে দিয়ে ‘সরকার উৎখাতে’র চেষ্টা ছিল। তাদের দাবি সত্য হলে আমরা দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে তার নিন্দা জানাই এবং এটা বুঝতে হবে যে উন্নয়ন ও সামগ্রিক অগ্রযাত্রা-বিরোধী অভ্যন্তরীণ শত্রুর মুখোমুখি আমাদের দেশ। জনগণের সম্পদ ধ্বংস করা এবং সরকারি অফিস, গাড়ি, গণপরিবহন, ইন্টারনেট অবকাঠামোতে আগুন দেওয়া অত্যন্ত নিন্দনীয় কাজ। এর মাধ্যমে দেশের বাণিজ্য, উৎপাদন ও নাগরিকের দৈনন্দিন জীবন রুদ্ধ হয়ে যায়। এসব অপরাধীদের পরিচয় প্রকাশ এবং আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া জরুরি। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এসব কর্মকাণ্ড উদ্ঘাটনে আমরা গণমাধ্যম সরকারকে সহায়তা করব। যারা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল তাদের প্রতিহত ও পরাজিত করতে হবে।”
সম্পাদক হিসেবে মাহফুজ আনামের দায়িত্ব ছিল সরকারি ভাষ্যকে চ্যালেঞ্জ করা। তিনি তা না করে উলটো “কয়েকজন মন্ত্রীর দাবি”র ভিত্তিতে প্রচার করেছেন “বিশেষ মতাদর্শ ও রাজনৈতিক গোষ্ঠী কর্তৃক ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম করে দেশকে অস্থিতিশীল করা”র পাঁয়তারা চলছে। শুধু তাই নয়, সরকারকে ‘সহায়তা’ এবং ‘অপরাধীদের’’ শাস্তির দাবিও জানিয়েছেন তিনি।
আওয়ামী লীগের সরকারি বয়ান যেভাবে এই অভ্যুত্থানকে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো চেষ্টা করেছিল, মাহফুজ আনামও সেই পথ ধরেছেন। অভ্যুত্থানকে যারা জ্বালাও-পোড়াও করেছিলেন, সেই ‘অপরাধীদের পরিচয় প্রকাশ এবং আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া জরুরি’ বলে মত দেন। বিনা নির্বাচনে অসাংবিধানিকভাবে পনেরো বছর যাবত ক্ষমতায় আসীন একটা দলের বিরুদ্ধে আন্দোলন যদি, সরকারি কথানুযায়ী ‘সরকার উৎখাতের’ আন্দোলন হয়ে থাকে, তাহলে তিনি মনে করেন, ‘উন্নয়ন ও সামগ্রিক অগ্রযাত্রা-বিরোধী অভ্যন্তরীণ শত্রুর মুখোমুখি আমাদের দেশ।’ অর্থাৎ, দেখা যাচ্ছে, আওয়ামী লীগ যে কায়দায় মুক্তিযুদ্ধকে এস্তেমাল করেছিল, তাতে তারও সায় ছিল, অন্তত জুলাই মাসে লিখিত কলাম সে সাক্ষ্য দিচ্ছে।
প্রথম আলোর কলামিস্ট সোহরাব হোসেন দুইদিনে “বাতিল হওয়া জাতীয় দিবস ও ইতিহাসের ফ্যাসিবাদী বয়ান” ও “অন্তর্বর্তী সরকারের নতুন ইতিহাস বিচার” নামে একই বিষয়ে দুটো কলাম লেখেন। তারও প্রধান বিষয়বস্তু জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস হিসেবে ৭ মার্চের বাতিলকরণ।
তিনি বলেন, “বিগত সরকার অনেক কিছুর মতো জাতীয় দিবসকেও দলীয়করণ করেছিল। অনেকের চোখে যা ছিল দৃষ্টিকটু। সেই সঙ্গে এ কথাও মানতে হবে, উল্লিখিত আটটি দিবসের সবগুলোকে এক পাল্লায় মাপা ঠিক হয়নি। যেমন ৭ মার্চ আমাদের জাতীয় ইতিহাসে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন।”
আন্দোলন সংগ্রামে শেখ মুজিবের ভূমিকা আলোচনা করে সোহরাব বলেন, “এই প্রেক্ষাপটে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ ও ১৫ আগস্টকে দেখতে হবে।” সংবিধান দিবস বাতিলের ঘটনারও সমালোচনা করেছেন। এই পুরো ঘটনাকে তিনি দেখছেন আওয়ামী লীগ জারিকৃত সকল দিবসের বাতিলকরণ হিসেবে। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী আওয়ামী লীগ কর্তৃক জাতীয় সংগীত নির্ধারণের সাথে এই সময়ের নির্ধারিত দিবসের তুলনাও টেনেছেন: “আওয়ামী লীগ সরকার করেছে বলে সবকিছু বাদ দেওয়া যায় না। আওয়ামী লীগ সরকার তো আমাদের জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সংগীতও ঠিক করেছে। তাই বলে আমরা কি জাতীয় সংগীত ও জাতীয় পতাকাও বাদ দেব?”
সোহরাব হোসেনও মাহফুজ আনামের মতো শেখ মুজিবের শাসনামলকে পৃথকভাবে পাঠ করতে চান। কিন্তু ফ্যাসিবাদের চূড়ান্ত পর্যায়ে যে দিবসকে “জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস” হিসেবে জারি করা হয়েছে, তাকে কীভাবে এবং কেন আওয়ামী লীগের অন্যান্য মুক্তিযুদ্ধের ‘ব্যবহার’ থেকে পৃথক করব তা তিনি বলেননি।
দুই বছর আগের অবৈধ শাসনামলে জারিকৃত জাতীয় দিবস বাতিল করাকে সোহরাব ও মাহফুজ মুক্তিযুদ্ধের ‘অস্বীকার’ ভাবছেন; অথচ বলেননি, ২০২১ সালের আগ পর্যন্ত কি তাহলে মুক্তিযুদ্ধ অস্বীকৃত ছিল? গত এক যুগে ৭ মার্চকে আওয়ামী লীগ কি ভয়াবহ দলীয় বিষয় বানায়নি?
৭ মার্চের ব্যাপারে ভিন্ন সুরে কথা বলায় খোদ আওয়ামী ঘরানার লোকজনকে গালাগালি বা মামলার কথা শুনতে হয়নি? (উদাহরণস্বরূপ, এ কে খন্দকার রচিত ‘১৯৭১: ভেতরে ও বাইরে’ গ্রন্থ প্রকাশের পর আওয়ামী লীগের নেতাদের বক্তব্য স্মরণ করা যেতে পারে। ৭ মার্চের জনসভায় শেখ মুজিব জয় বাংলার পাশাপাশি জয় পাকিস্তান বলেছিলেন— ২০১৪ সালে প্রকাশিত বইয়ে এমন তথ্য থাকায় তাকে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়।)
জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস ঘোষণার প্রস্তাব সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে এসেছিল। হাইকোর্টে এ সংক্রান্ত একটি রিট পিটিশনের প্রেক্ষিতে যে দু’টি সিদ্ধান্ত ছিল তার একটি হলো, ৭ মার্চকে জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা এবং দ্বিতীয়টি, প্রত্যেক উপজেলাতে যেন বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণ করা হয়। অর্থাৎ ওই দিবস ঘোষণাও শেখ হাসিনার কোর্টরুম পলিটিকসের ফসল ছিল, সেটা কেন সোহরাব হোসেন বুঝতে পারেন না, তা আমাদের বোধগম্য হয় না। যে রুলে মুজিবের ম্যুরাল স্থাপনের কথা বলা হচ্ছে, সেই একই রুলে ৭ মার্চের ভাষণকে ‘ঐতিহাসিক দিবস’ হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে, তবু ফ্যাসিবাদী হাতিয়ার হিসাবে ৭ মার্চের ভাষণকে ‘ব্যবহার’ হিসেবে মনে করা হচ্ছে না দেখে অবাক হতে হয়।
পাশাপাশি, মুক্তিযুদ্ধ আদতে বিগত আওয়ামী-জমানায় ফ্যাসিবাদী মতাদর্শ হিসাবে হাজির হয়েছিল, যদিও দীর্ঘদিনে এই মতাদর্শিক নির্মাণ ঘটেছিল। মুক্তিযুদ্ধের মত বিরাট ঘটনাকে আওয়ামী লীগের সমর্থক বানিয়ে হাজির করাটা বিগত পনেরো বছরের রাষ্ট্রীয় মামলা, এবং নব্বই পরবর্তী আওয়ামী-বুদ্ধিবৃত্তিক মামলা। কিন্তু সোহরাব হোসেন ফ্যাসিবাদের পিক টাইমে জারিকৃত দিবসগুলোকে বাহাত্তর-তেহাত্তর সালে ঘোষিত দিবসসমূহের সাথে একাকার করে পাঠ করছেন। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও আওয়ামী লীগের ইতিহাস-বয়ানের মধ্যে ফারাক করতে পারছেন না। অন্যথায়, দুটোকে একত্রে তুলনা করে ‘যা আওয়ামী লীগ করেছে সব বাতিলের’ অজুহাত খাড়া করতেন না।
আওয়ামী লীগ বিগত পনেরো বছরে মুজিবকে ইতিহাসের একমাত্র কর্তাব্যক্তি এবং মুজিব পরিবারকে ইতিহাসের কেন্দ্রে বসানোর জন্য একাধারে একের পর এক আইন তৈরি করেছে। আইনকে ব্যবহার করে মুজিব বিষয়ে পর্যালোচনামূলক বোঝাপড়াকে যেমন দমন করা হয়েছে, তেমনই খণ্ডিত আর্কাইভাল দলিল প্রকাশের মাধ্যমে পদ্ধতিগতভাবে ইতিহাসের একটা খণ্ডিত অংশ হাজির হয়েছে। কিছু ঘটনার উচ্চকিত প্রকাশ এবং কিছু ঘটনার পিনপতন নিরবতা— এ প্রক্রিয়াতেই মুজিবকে দেবতুল্য বানিয়ে ইতিহাসের ঊর্ধ্বে অবস্থিত দেবতা বানানো হয়েছে। মুজিব সংক্রান্ত সকল দিবস (জন্ম, মৃত্যু, বক্তৃতা) এবং তার পরিবারের সদস্যদের নামে দিবস জারি করা এই ‘দেবতা’ পূজারই অংশ। ইতিহাস তৈরি ও চরিত্র নির্মাণের এ প্রক্রিয়ায় শতভাগ ইমান আনলেই কেবল আওয়ামী লীগের জারিকৃত দিবস বাতিলকে ইতিহাসের ‘অস্বীকার’ বলে রায় দেয়া সম্ভব।
স্মর্তব্য, ২০২০ সালে তথাকথিত ‘মুজিববর্ষ’ উদ্যাপন উপলক্ষে গুজরাটের কসাই এবং গণহত্যাকারী নরেন্দ্র মোদিকে প্রধান অতিথি করে বাংলাদেশে আনা হয়েছিল। এর প্রতিবাদ করায় ছাত্র, তরুণ ও রাজনৈতিক কর্মীদের ওপর নেমে এসেছিল দমনপীড়নের স্টিমরোলার। জেল-জুলুম ও হতাহতের ঘটনাও ঘটেছিল।
মুজিববর্ষের প্রধান অতিথি হিসেবে সাম্প্রদায়িক ও হিন্দুত্ববাদী নেতা মোদিকে বাংলাদেশে আনার মাধ্যমে অত্যন্ত পরিষ্কার বার্তা দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। মুজিববর্ষ আর কেবল বাংলাদেশের স্বৈরতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মতাদর্শিক হাতিয়ারই নয়; একই সাথে দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে বিজেপি-আরএসএসের ঘৃণ্য ভূরাজনৈতিক নীলনকশার মতাদর্শিক হাতিয়ারও বটে।
ফলে বাংলাদেশকে ঘিরে বিজেপি যে-ঘৃণ্য সাম্প্রদায়িক রাজনীতির ছক কষেছে, তাতে শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন মাফিয়া শাসকগোষ্ঠীর প্রচ্ছন্ন সায় ও এজেন্টের ভূমিকা পালন করা বুঝতে এবং এর বিরুদ্ধে সক্রিয় হওয়ার কোনো বিকল্প নাই।
ফ্যাসিবাদী মতাদর্শ হিসেবে আওয়ামী রেজিমের জারিকৃত দিবসগুলোর গায়ে মুক্তিযুদ্ধের ‘ইতিহাস’ নেই; বরং আছে একটি নির্দিষ্ট পার্টিকেন্দ্রিক বয়ান। কাজেই অবৈধ শাসক শেখ হাসিনা কর্তৃক ঘোষিত ‘জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস’ ৭ মার্চের বাতিলকরণ মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাসে শেখ মুজিবের প্রত্যাবর্তন হিসেবে দেখার সুযোগ আছে।
• সহুল আহমদ, লেখক ও অ্যাক্টিভিস্ট এবং সারোয়ার তুষার, লেখক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য