Logo
Logo
×

অভিমত

শহীদদের তালিকা প্রকাশ স্বাধীনতা রক্ষার প্রথম ভিত্তি

Icon

আহমেদ খিজির

প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:২২ পিএম

শহীদদের তালিকা প্রকাশ স্বাধীনতা রক্ষার প্রথম ভিত্তি

শহীদ আবু সাঈদ: ফাইল ছবি

স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন। বাংলা এই প্রবাদটি আমরা সবাই জানি। তবে জানলেও তা আসলে মানি কিনা তা বলা মুশকিল। বাংলাদেশিরা স্বাধীনতার ব্যাপারে কখনো আপস করে না। পুরা দুনিয়ায় সাম্রাজ্যবিস্তারকারী ব্রিটিশ হোক, সামরিক ক্ষমতাধর পাকিস্তান হোক কিংবা দেশ স্বাধীনের পর প্রবল প্রতাপশালী স্বৈরাচার, সবার বিরুদ্ধেই লড়াই করে মুক্তি ছিনিয়ে এনেছে এ অঞ্চলের মানুষেরা। 

কিন্তু, বারবারই এদেশের মানুষ স্বাধীনতা হারিয়েছে। জনতার বিজয়কে কিছু গোষ্ঠী কুক্ষিগত করেছে। আন্দোলন সফল হবার সাফল্য নিজেদের ঝুলিতে নিয়ে শাসক বনে গেছে। দেশের মানুষকেই লুটেছে। ফলত, প্রতিবার আন্দোলনের পর আমাদের আগের থেকে সাবধান হয়ে পড়া জরুরি। হাসিনাশাহীর পতনের পর সেই একই অবস্থা তৈরি হয়েছে। আওয়ামী স্বৈরশাসন থেকে মুক্ত হয়ে মানুষ যাতে আরেকবার পরাধীন না হয় সেই ব্যাপারে লক্ষ্য রাখা জরুরি। 

আর এর জন্য নিশ্চিত করতে হবে যে, এই আন্দোলনের কৃতিত্ব যাতে বিশেষ কোনো গোষ্ঠী ছিনিয়ে নিতে না পারে। এর প্রথম ধাপ হবে, আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাঁদের পূর্ণাঙ্গ ও সঠিক তালিকা তৈরি করা। যারা আহত হয়েছেন তাঁদের তালিকা তৈরি করা। এরপর রাষ্ট্রের কর্তব্য হচ্ছে নিহতের পরিবার ও আহতদের আজীবনের জন্য দায়িত্ব নেওয়া। 

যেই কোটাবিরোধী আন্দোলন দিয়ে হাসিনার পতনের শুরু, তার কেন্দ্রেও ছিল মুক্তিযোদ্ধা কোটা। মুক্তিযুদ্ধ ব্যাপারটা আওয়ামী লীগের কাছে ছিল রাজনীতির হাতিয়ার। সত্যিকারের কোন চেতনা নয়। তাই তাঁরা অজস্র ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট দিয়েছে, এসব দিয়ে চাকরি দিয়েছে যাতে প্রশাসনসহ সর্বত্র তাঁদের নিজেদের লোকেরা শক্তিশালী অবস্থানে থাকে। অথচ সত্যিকারের অনেক মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন তালিকার বাইরে, চাকরির মুলা ঝুলিয়ে রাষ্ট্রীয় কর্তব্য এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। 

হাসিনা পতনের গণ-আন্দোলনের ফল বিশেষ কোনো গোষ্ঠীকে ভোগ করতে দেওয়া যাবে না। বাংলাদেশের ইতিহাসে জঘন্যতম স্বৈরাচারের পৈশাচিক সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে যারা খালি হাতে দাঁড়িয়ে জীবন দিয়েছিল তারা কোনো গোষ্ঠী স্বার্থে যায়নি। তাঁরা গিয়েছিল দেশকে উদ্ধারে, দেশের গণতন্ত্র উদ্ধারে। 

ফলে, এই শহীদদের, বীরদের তালিকা করার মাধ্যমে স্বাধীনতা রক্ষার প্রথম ধাপ দিতে হবে। আর অপরাধীদের বিচার করা শুরু করতে হবে। আমরা আগে দেখেছি বিচারের নামে প্রহসন হতে, রাজনীতি করতে। সরকাঁর পতনের পর এর সাথে সংশ্লিষ্ট প্রভাবশালী অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে বিচার শুরু করতে হয় দ্রুত। গণহত্যার হুকুম দাতাদের ক্ষেত্রেও তাই করতে হয়। 

অবশ্যই মামলা ও বিচার হতে হবে অপরাধের ধরনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সরকার পতনের পর চিহ্নিত বড় অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও বিচার দ্রুত শুরু করতে না পারলে প্রভাবশালী অপরাধীরা অর্থ ব্যয় করে বা নানা ধরনের সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে নতুন ক্ষমতার সাথে আঁতাত-আপোষ করে ফেলার সুযোগ পায়। যত দিন যায় এই সুযোগ তত বাড়ে। আর স্বাধীনতা বেহাত হতে থাকে। এতো ত্যাগের স্বাধীনতা বেহাত হতে দেওয়া যাবে না। 

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন