Logo
Logo
×

অভিমত

আবারও কেন ‘বিকল্প দেখান’

Icon

আহমেদ খিজির

প্রকাশ: ৩০ আগস্ট ২০২৪, ১২:৩৩ পিএম

আবারও কেন ‘বিকল্প দেখান’

বাংলাদেশের সবচেয়ে জঘন্য স্বৈরশাসনের আমলে স্বৈরাচারকে সমর্থন করার একটা কৌশল ছিলো, সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে প্রশ্ন ছুড়ে দেয়া—বিকল্প দেখান। এদের আলাপটা ছিলো এইরকম যে, আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি আর বাকিরা বিরোধী। যেই বিএনপির প্রতিষ্ঠাতাসহ বড় বড় নেতারা মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, তাদেরকে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী আখ্যা দেয়া হতো কেবল জামায়াতের সঙ্গে ২০০১ সালে নির্বাচনের পর সরকার গঠন করায়। অথচ, মুক্তিযুদ্ধের একক এজেন্ট দাবি করা আওয়ামী লীগ নিজেই এর আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে জামায়াতকে সাথে নিয়ে আন্দোলন করে।

কিন্তু, আওয়ামী সমর্থিত মিডিয়া ও সুশীল সমাজ এই বয়ান প্রতিষ্ঠা করে যে, আওয়ামী লীগ বাদে বাকি যে দলগুলো আছে তারা ক্ষমতায় যাওয়ার যোগ্য না। মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও উনারা এই চরম অগণতান্ত্রিক বক্তব্যই প্রতিষ্ঠা করে।

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে কে দেশ শাসন করবে তা নির্ধারণ করবে জনগণের ভোট। জনগণ যদি সুশীলদের অপছন্দের দলকে নির্বাচন করে তবে তাই মেনে নিতে হবে। নির্বাচিত হবার পর সেই দল যদি গণবিরোধী হয়ে ওঠে, জণগণকে তুষ্ট করতে না পারে, তবে পরের নির্বাচনে জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করবে।

কিন্তু, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মিথ্যা বয়ান দিয়ে গণতন্ত্রের ভিত্তিকেই ধংস করে দিয়েছিলো আওয়ামী দোসররা। টানা তিনবার নির্বাচনের নামে প্রহসন করে জনগণের অধিকার হরণ করেছিলো। বিশেষত ২০১৮ সালের রাতের নির্বাচন আর ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচন পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল ঘটনা হয়ে থাকবে। 

কিন্তু, এতে ওদের শেষরক্ষা হয় নাই। জণগণই যে শেষকথা তা আবারো প্রমাণ হয় জুলাইয়ের এক রক্তক্ষয়ী অভুথানে। হাসিনার পুলিশ আর গুন্ডারা অস্ত্র হাতে নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার উপর ঝাঁপিয়ে পড়লেও শেষতক খুনি হাসিনা পালাতে বাধ্য হন। বাংলাদেশ আবার মুক্ত হয়। রাজনৈতিক টালমাটাল পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়, যার দায়িত্ব নেন সর্বজন শ্রদ্ধেয় ড. মুহাম্মদ ইউনূস। 

বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্তর্তবর্তীকালীন সরকার নতুন কোনো ঘটনা না। বিএনপি গত কয়েক বছর ধরে নির্বাচনকালীন সরকারের দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলো। ফলে, এই সরকারকে মেনে নিতে জনতা ও রাজনৈতিক দলগুলোর সমস্যা হয়নি। তারা আশাও করছেন, পূর্বের মতো এই সরকার দেশের গনতন্ত্র উদ্ধারে সাহায্য করবে। আর এই জন্য চাই দ্রুত নির্বাচন। কেবল জনপ্রতিনিধিরাই পারে দেশের গণতন্ত্র ফেরাতে। 

কিন্তু, আমরা আবার বাতাসে ফিসফাস শুনতে পাই মাইনাস টু ফর্মুলার। বিভিন্ন বিশিষ্টজন বলছেন, জনগণ আর আওয়ামী লীগ এবং বিএনপিকে চায় না। কিন্তু, জনগণ চায় কি চায় না সে তো উনারা ঠিক করবেন না। তা ঠিক হবে ভোটে। সুশীলদের অপ্রিয় বিএনপিকে যদি জনগণ ক্ষমতায় আনতে চায় তবে সেই ইচ্ছাকেই সম্মান দিতে হবে। এটাই গণতন্ত্র। 

গণতন্ত্রের বিকল্প দেখান তত্ত্বের কোনো সুযোগ নেই।

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন