Logo
Logo
×

অভিমত

নানামাত্রিক ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়া জরুরি

Icon

আহমেদ খিজির

প্রকাশ: ১১ আগস্ট ২০২৪, ০৬:০৭ পিএম

নানামাত্রিক ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়া জরুরি

বাংলাদেশের মানুষ এক অভাবনীয় অর্জন করেছে। যেই খুনি, স্বৈরাচার হাসিনাশাহীকে টলানো অসম্ভব বলে মনে হতো, সেই হাসিনার পতন ঘটিয়েছে এই দেশের ছাত্র-জনতা। আবারো প্রমাণ করেছে জনতাই দেশের মালিক, নির্ধারক। কিন্তু, এই রক্তঝরা অভ্যুত্থান শেষ হয়নি, একে ব্যর্থ করার জন্য নানামুখী ষড়যন্ত্র চলছে। 

জনতার চাপে লেজ গুটিয়ে পালালেও খুনি হাসিনা আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার ষড়যন্ত্র করছে। যদিও, লাখো লাখো নেতা-কর্মী ও সুবিধাভোগীদের সে বিপদে রেখেই পালিয়েছিল, তবুও এরা আবার দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে। নানারকম কায়দায় জনতার বিজয়কে পালটে দিতে চাইছে। 

হাসিনার রেখে যাওয়া পুলিশদের একটা অংশ জনতার ওপর হামলা করে। দীর্ঘদিন ধরে কিলিং মেশিন হয়ে উঠা পুলিশের ওপর রোষে দেশের প্রায় প্রতিটা থানা ভাঙচুর করা হয়। এই সুযোগে দেশে অরাজকতা বৃদ্ধি পায়। বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় ডাকাত দল হানা দেয়। 

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, সেই ডাকাতিগুলো হচ্ছে পতিত আওয়ামী নেতাদের নির্দেশে। পুলিশ ও আওয়ামী গুন্ডাদের কাছে থাকা বা ফেলে যাওয়া অস্ত্রগুলো জনতার জন্য ভীতির কারণ হয়। তবে, জনতা অবিশ্বাস্যভাবে তা রুখে দেয়। যেই ঢাকাবাসী পাশের ফ্লাটের মানুষকেও চিনে না বলে দুর্নাম আছে, তাঁরা পাড়ায় পাড়ায় একজোট হয়ে ডাকাতি রুখে দেয়। 

এরপর আওয়ামী লীগ নিয়ে আসে সেই পুরোনো সাম্প্রদায়িক কার্ড। ভারতের গদি মিডিয়াও এতে তাল দেয়। তাদের ভাষ্যমতে হাসিনা পালানোর পর দেশে ব্যাপক হিন্দু নিধন হচ্ছে। হিন্দুদের ওপর সাম্প্রদায়িক আক্রমণ হচ্ছে। আদতে কথাটা পুরোপুরি সত্য না। বাংলাদেশে নৈরাজ্যের সুযোগে বিপুল লুটপাট ও প্রাণহানি হয়েছে। 

তবে, জনতার আক্রোশ ছিল মূলত লুটেরা ও অত্যাচারী আওয়ামী পান্ডাদের ওপর। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আওয়ামী পান্ডা হিসেবেই হিন্দুরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আবার অল্প কিছু ক্ষেত্রে কেউ কেউ ব্যক্তিগত সুযোগ নিয়েছে বলে ধারণা করা যায়। হিন্দুদের চেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমরা অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাংলাদেশে যা হয়েছে তা মূলত নৈরাজ্য এবং পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের ওপর ক্ষোভ। এঁকে কোনোভাবেই সাম্প্রদায়িক হামলা বলা চলে না। 

সাম্প্রদায়িক হামলা ছিল কসাই মোদির গুজরাট গণহত্যা, যেখানে তার খুনে বাহিনী মুসলমানদের হত্যা করে কেবল তারা মুসলমান বলেই। গরু খাওয়ার অপরাধে মুসলমানদের হত্যা করা সাম্প্রদায়িক খুন, আওয়ামী লীগ করার কারণে কেউ আক্রমণের শিকার হলে, যদি তিনি হিন্দুও হন, তাঁকে সাম্প্রদায়িক হামলা বলা চলে না। অবশ্য হাসিনার হয়ে হিন্দুদের একটা অংশ গুটি হয়ে গেছেন। রিয়া গোপ নামের যেই বাচ্চা শিশুটি হাসিনার পাঠানো হেলিকপ্টারের গুলিতে মারা যায় তাঁকে নিয়েও সাম্প্রদায়িক রাজনীতি শুরু করে দিয়েছে মোদির সমর্থনপুষ্টরা।

আশা করা যায়, এসব ষড়যন্ত্র রুখে দিবে বাংলাদেশ। জনতার অবিশ্বাস্য বিজয়কে নস্যাৎ করতে দেওয়া হবে না। 

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন