হেলমেট, লাটি, স্টিলের রড আর বেসবল ব্যাট নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ছাত্র সমাবেশ করছে ছাত্রলীগ।
বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম নৃশংস হত্যাযজ্ঞ এবং তাণ্ডবলীলা চালাল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ। দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারে আন্দোলনরত নিরস্ত্র ছাত্রছাত্রীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এরা এক ন্যক্কারজনক ইতিহাস রচনা করল। ছাত্রদের প্রতিরোধে যখন তারা কোণঠাসা তখন তারা সাথে নিল এই দেশের মানুষের কষ্টার্জিত অর্থে বেতন হওয়া পুলিশকে। সেই পুলিশের গুলিতে প্রকাশ্যে দিবালোকে মারা গেলেন নিরস্ত্র আবু সাঈদ।
বাংলাদেশের গৌরবজনক ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে পুলিশ গুলি চালিয়ে ছয়জনকে হত্যা করেছিল, আওয়ামী পুলিশ ও সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ হানাদারদের সেই ইতিহাস পুনরাবৃত্তি করল। তবে ছাত্রলীগের এই হত্যাকাণ্ড নতুন কিছু নয়। এর আগে তারা বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করেছিল। একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া সহপাঠীরা একজনকে লাঠির আঘাতে মারতে মারতে মেরে ফেলতে পারে এই ধরনের নৃশংসতা ছাত্রলীগের পক্ষেই সম্ভব।
অথচ বুয়েটকে ধরা হয় দেশের সবচেয়ে মেধাবী ছাত্রদের প্রতিষ্ঠানে। ছাত্রলীগের বিষে সেই ছাত্ররাই হলো খুনি। এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ গুলি করে মেরেছিল তাদেরই সহপাঠী আবু বকরকে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা হত্যা করে নিরীহ পথচারী বিশ্বজিৎকে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চাঁদাবাজি, হল দখল, টেন্ডারবাজি বজায় রাখতে এরা নিরীহ ছাত্রদের সাথে নির্মম ব্যবহার করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা একসময় এ দেশের মানুষের কাছে শ্রদ্ধার পাত্র হলেও ছাত্রলীগের কারণে সেই শ্রদ্ধা নাই হয়ে গেছে। গত কয়েক বছরে চাঁদার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মার্কেটগুলোতে দোকানদাররা ছাত্রলীগের নেতাদের পিটিয়েছে বলে বহু খবর এসেছে।
এমনকি এই খুনের দল নিরাপদ সড়কের আন্দোলনে নেমে আসা শিশুদেরও রেহাই দেয়নি। মাথায় হেলমেট চাপিয়ে শিশুদের হাতুড়িপেটা করেছে এই খুনের দল। এরপর থেকে দেশবাসী এদের হাতুড়ি হেলমেট বাহিনী বলে চেনে।
এই খুনের দলকে অবশ্যই থামাতে হবে। এরা একদল উগ্র সাইকোপ্যাথ যারা খুন, লুটাপাট আর নেশা ছাড়া কিছু চেনে না। এদের কারণে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো টর্চার সেল হয়ে গেছে। নারীরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এই রকম ত্রাস না রুখতে পারলে বাংলাদেশের অস্তিত্ব থাকবে না।
কিন্তু দেশে এখন জনবিরোধী সরকার। ছাত্রলীগের পালনকর্তা। এদের কাছে বিচার চাওয়ার মানে হয় না। জনগণকেই এই খুনে বাহিনী প্রতিরোধ করতে হবে। যারা বিদেশে আছেন তারা বিশ্বমানবতার কাছে এই খুনেদের কাণ্ডকীর্তি ছড়িয়ে দিন। যে যেভাবে পারেন এই খুনেদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান।
বাংলাদেশকে বাঁচাতে, আমাদের ভবিষ্যৎ বাঁচাতে, খুনে ছাত্রলীগকে প্রতিরোধ করতেই হবে।