Logo
Logo
×

অভিমত

কোটাবিরোধী আন্দোলন ব্যর্থ করা যাবে না

Icon

আহমেদ খিজির

প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২৪, ১১:১১ পিএম

কোটাবিরোধী আন্দোলন ব্যর্থ করা যাবে না

বৃহস্পতিবার শাহবাগে কোটা আন্দোলন চলাকালে একটি চিত্র। ছবি: সংগৃহীত

কোটাবিরোধী আন্দোলনে দেশের তরুণরা সোচ্চার হয়ে উঠেছে। মুক্তিযুদ্ধ কোটার নামে চেতনার রাজনীতি, কোটার নামে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়ে উঠেছে তরুণরা। সন্দেহ নাই যে এই আমলে সরকারি চাকরি ও প্রতিষ্ঠানগুলো হয়ে উঠেছে দুর্নীতির আখড়া। একদিকে কোটা নিয়ে রাজনীতি, অন্যদিকে প্রশ্ন ফাঁস আর দুর্নীতি করে প্রায় শতভাগ নিয়োগ তরুণদের বেদিশা করে তুলেছে। বেসরকারি খাতের অবস্থাও খারাপ। 

এই অবস্থায়, কোটা নিয়ে আন্দোলন আসলে তরুণ সমাজের অসহায়ত্বই তুলে ধরে। এর বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা সমালোচনা থাকলেও কোনো সন্দেহ নেই যে, বছরের পর বছর গণতন্ত্রহীন দেশে, কোনরকম জবাবদিহিতা ও ন্যায়বিচার না থাকায় জনরোষ নানাভাবে প্রতিফলিত হবে। কোটা আন্দোলনও তাই। 

কিন্তু, দুর্ভাগ্যের ব্যাপার হচ্ছে গত কয়েক বছরে প্রায় সমস্ত আন্দোলনেরই পরিণতি হয়েছে নির্মম দমন অথবা আঁতাতে। এমনকি রাজপথে নেমে আসা শিশুদেরও নির্মমভাবে দমন করেছে জুলুমশাহী। কোটার বিরুদ্ধে এর আগে গড়ে ওঠা আন্দোলন নানা কৌশলে চাপা দেওয়া হয়েছে। ছাত্রদের নিগৃহীত করা হয়েছে, প্রতারণা করা হয়েছে। অথচ, বাংলাদেশের জন্মের পেছনে ছাত্র আন্দোলনের বড় ভূমিকা আছে। অবস্থাগতিকে মনে হচ্ছে, পাকিস্তান আমলের থেকেও বর্তমান স্বৈরশাসক আরো বেশি নিষ্ঠুর। 

আর বিরোধী দলের যে কোনো আন্দোলনে দমনপীড়নের ব্যাপার তো আছেই। গত বছর সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনকে নানাভাবে দমন করা হয়েছে। কেউ কেউ অবশ্য এর জন্য বিরোধী দলের কৌশল এবং নেতাদের সিদ্ধান্তহীনতা ও সাহসের অভাবকেও দায়ী করেন। বছরের পর বছর অত্যাচার সয়ে গিয়ে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অনেক কর্মী সমর্থক আরও মরিয়া লড়াইয়ের আশা করেছিলেন। 

তবে, গণতান্ত্রিক দেশে, আধুনিক রাষ্ট্রে এই দায় প্রথমত এবং সর্বতভাবেই সরকারের। কোনভাবেই একটা দেশের সরকার নাগরিক অধিকার ও প্রতিবাদকে নির্মমভাবে মোকাবিলা করতে পারে না। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আমাদের মিডিয়াতেও দেখতে পাই ইনিয়ে বিনিয়ে সরকারের এই দোষ ঢাকার চেষ্টা। কোটা আন্দোলনের দিন তিনেক পার হবার পর মন্ত্রীরা এই নিয়ে আক্রমণাত্মক সুরে কথা বলছেন। কেউ কেউ রাষ্ট্রবিরোধী বা জঙ্গিবাদের পুরোনো রেকর্ড বাজাচ্ছেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বায়বীয় আলাপ তো আছেই। আশংকা হচ্ছে সামনে আরও একবার নির্মমভাবে পুলিশ ও সরকারি দলের গুন্ডাদের দিয়ে এই আন্দোলনকে দমন করা হবে। 

কিন্তু, আরও একবার কি এই দেশের গনতন্ত্রকামী জনতা তা চেয়ে চেয়ে দেখবে? আরও একটা আন্দোলন কি দানবদের বুটের তলায় চাপা পড়বে, আমাদের কি দীর্ঘশ্বাস ফেলা ছাড়া আর কিছুই করার নেই? 

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন