গ্রাফিক্স : বাংলা আউটলুক
বোট সাম্রাজ্যে কৃষক, কারিগর, সেলাই শ্রমিক, প্রবাসী শ্রমিক দিনমান পরিশ্রম করে অর্থ উপার্জন করে। আর ‘ভোট ফর বোট’ শ্লোগান দিয়ে সেসব অর্থ চেটে লোপাট করে সহসভাপতি সংহতি ও প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী সংহতি।
বোট সাম্রাজ্যের চোরের খনিতে এইসব চুরি প্রতিরোধে চোর দমন কমিশন থাকলেও; সেই কমিশনের কাজ ছিলো শিক্ষিত ও পণ্ডিত লোকেদের সামান্য কোন অনিয়মের অজুহাতে খাঁচায় পুরে শুনানি করা।
বোট সাম্রাজ্যের অধিকাংশ মিডিয়া বাতাবি বৃক্ষের তলে বাবুগিরি করায় অল্প-স্বল্প দুর্নীতির খবর আসে। অনেক সময় এক চোরের মিডিয়া আরেক চোরের দুর্নীতির খবর প্রকাশ করে।
প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী সংহতি তখন খুক খুক করে কেশে বলে, এসব ঠিক হচ্ছে না। মিডিয়া খবর দিলে সেই খবরে সাড়া দিতে চোর দমন কমিশন তিন-চারদিন সময় নেয়; সেই সুযোগে চোর পগার পার হয়ে দিল্লী কিংবা দুবাই-সিংগাপুর চলে যায়।
বোট সাম্রাজ্যের ক্যাশিয়ার আলমদানির টাকা পাচারের খবর প্রকাশ হলে; আদালত নির্দেশ দেয়, উঁহু আলমদানির বিষয়ে কোন কথা নয়। ক্যাশিয়ার শিকদারদানি কোনো ব্যাংক খেয়ে সাফা করে দিলে, ক্যাশিয়ার আলমদানিকে ডেকে সেই ব্যাংকের দায়িত্ব দেয়া হয়, মুরগীকে শেয়ালের কাছে বর্গা দেবার প্রাচীন কৌশলে।
উন্নয়নের ঋষি দরবেশদের আধ্যাত্মিক চোখ সাফাইয়ের খেলায় সহযোগী এক ধরনের প্রগতিশীল ভেকধারী সাপ; রাসেলস ভাইপার নামেই যারা অধিক পরিচিত।
দরবেশের গড়া মায়ানগরীতে কেউ ফেসবুকে দুর্নীতির সমালোচনা করলেই রাসেলস ভাইপার এসে কামড় দিয়ে বলে, ‘ছাগু’ কুনহানকার। সর্পরাজ জগলু ও জগাই ঝাঁপিতে করে এই রাসেলস ভাইপার প্রতিপালনের সমন্বয়; সেন্টার ফর রুথলেস ইন্টেলিজেন্স (ক্রাই)-এর সঙ্গে পেটচুক্তিতে।
ফেসবুকে ‘ছাগু’ বলে চোরের সাক্ষী গাঁটকাটাদের রগড় দেখে ছাগল বিস্মিত হয়। মানুষে মানুষে কোন্দলে ছাগলকে ধরে টানাটানি কেন! ছাগলেরা ক্ষুব্ধ হয়ে একটি গোয়েন্দা ইউনিট গঠন করে, দেখাচ্ছি তোর চোরের সহমত ভাইয়ের বড় গলা!
ছাগল দুর্নীতিবাজ লোকের ছেলের সঙ্গে সেলফি তুলে কৌতূহল উস্কে দেয়। এরপর বেরিয়ে আসতে থাকে বেনজীর বা নজিরবিহীন দুর্নীতির নতুন নতুন মতি- কাহিনী!
পাটখড়ির বেড়া আর খড়ের ছাপড়ার জায়গায় সহসভাপতি ভ্যাকসিন চৌধুরীর রুচিহীন প্রাসাদের ক্যাটকেটে হলুদ লাল সবুজ টাইলসের বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছবি তোলে ছাগল। অমনি সবাই ভ্যাকসিন চৌধুরীর ঠিকুজি বের করে দেখে তার চৌদ্দ পুরুষ আমব্রেলা ইঞ্জিনিয়ার ছিলো। ভ্যাকসিন ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং শিখে মিনিটে ৪৪টি ব্যালট পেপারে সিল দিয়ে উন্নয়নের চৌধুরী হয়ে গেছে। এখন পান্তার পরিবর্তে পাস্তা খায়।
ছাগল গিয়ে সেলফি তোলে বেনজীর রিসোর্টের সামনে। লোকে তখন খুঁজে দেখে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে তার মূল বেতনের সঙ্গে এরকম বিশাল রিসোর্ট নির্মাণ অসঙ্গতিপূর্ণ।
ছাগল সেলফি তোলে শিমুলের পাঁচতলার সামনে। বেরিয়ে পড়ে তার চুরিকাহিনীগুলো। এইভাবে গোট ইনভেস্টিগেশনে বেরিয়ে আসতে থাকে চাটার দল সহসভাপতি সংহতি ও প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী সংহতি'র চোরের খনিটি।
সর্পরাজ জগলু ও জগাই ঝাঁপি থেকে রাসেলস ভাইপার ছেড়ে দিয়ে, পশুপ্রেম, দেশচেতনা, গেরুয়া সংস্কৃতির গতিশীলতা ইত্যাদি নানা বিষয়ে ভাটের ছোবল দিয়ে বেড়ায়।
ক্রাই দপ্তরের উদ্ধারকারী জাহাজ এমভি রুস্তম এসে শুরু করে বিবেকের গান, আপনিও সুযোগের অভাবে ভদ্রলোক। চান্স পাইলে আপনিও বেনজীর-মতিউর-ভ্যাকসিন চৌধুরী হইতেন। উন্নয়নের গাছে শিমুল কিংবা আনার হইয়া ঝুলতেন।
শৈশব থেকে পুষ্টি বিশেষত প্রোটিন না পাওয়ায় এমভি রুস্তমের খালাসিদের আই কিউ গড় ৭৪। ফলে তারা যতই বুদ্ধি করে কথা বলুক; এটা স্পষ্ট হয়; এরা ‘রুপের রাণী চোরের রাজা’-র খাদেম। এসেছে বোট রাজ্য জুড়ে দুর্নীতি ও লুণ্ঠনের জাস্টিফিকেশন দিতে।
“Hell is empty and all the devils are here.”--William Shakespeare