Logo
Logo
×

অভিমত

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জোট

সমুদ্রের নিচে চীনকে টক্কর দিতে ভারতের হাতে ‘ট্রাইটন’

ডেস্ক রিপোর্ট

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৪, ০৬:২৪ এএম

সমুদ্রের নিচে চীনকে টক্কর দিতে ভারতের হাতে ‘ট্রাইটন’

ট্রাইটন কাজ করবে গোয়েন্দা হিসেবে। আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারবে নিজেকে। এমনকি পাল্টা আক্রমণের ক্ষমতাও যথেষ্ট।

ইন্দো-প্যাসিফিক জুড়ে চীনের চলমান আগ্রাসনের কারণে ভারত সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দিকে হাত বাড়ায় এবং শেষ পর্যন্ত অনেক কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। এশিয়ার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের বরাতে এমনই বক্তব্য এসেছে ইউএস নেভাল ইনস্টিটিউটের নিউজে (news.usni.org)।

এটা বহুল প্রতিষ্ঠিত সত্য যে, চীন ভারতের সীমান্তশক্তি পরীক্ষা করেছে, তাইওয়ানের গণতন্ত্রকে হুমকি দিয়েছে এবং এই অঞ্চলে আক্রমণাত্মক আঞ্চলিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। গত বছর ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশন অনলাইন ইভেন্টে যোগ দিয়ে জার্মান মার্শাল ফান্ডের ইন্দো-প্যাসিফিক প্রোগ্রামের সিনিয়র ফেলো গরিমা মোহন বলেছিলেন, চীন হল ভারতের আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জ। 

যদিও কয়েক দশক ধরে ভারতীয় সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে স্পয়লার হিসাবে দেখেছিল, ইন্টারন্যাশনাল অর্ডার অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজি প্রকল্পের ইন্ডিয়া চ্যাপ্টারের পরিচালক তানি মদন বলেছেন, ওয়াশিংটনকে এখন সক্ষম হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

আবার নয়াদিল্লির এশিয়া সোসাইটি পলিসি ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো সি রাজুয়া মোহন বলেছেন, কৌশলগত অবস্থান-শক্তি বজায় রাখার জন্য ভারতের সংকল্প ‘মৈত্রী ও অংশীদারিত্বকে’ অস্বীকার করে না। নয়াদিল্লির ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো বড় শক্তি হবার উচ্চাকাঙ্ক্ষা’ রয়েছে। তারা একটি একক জাতি-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের পরিবর্তে বহু-মেরুর এশিয়া দেখতে চায়।

মোহন আরও বলেছেন, চীনের হুমকি মোকাবিলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সাথে সম্পর্কের একটি নতুন টেমপ্লেট তৈরি করেছে ভারত। আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেরও ভারতকে প্রয়োজন। কারণ উভয় দেশই ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে বাণিজ্য, উন্নয়ন ও নিরাপত্তার জন্য ‘একটি উন্নত শৃঙ্খলা তৈরি করতে’ আগ্রহী।

সম্প্রতি ভারতীয় নৌবাহিনীকে আমেরিকা যে অত্যাধুনিক নৌ টহল যান দিয়েছে তা ভারত-আমেরিকার বন্ধুত্বের আরও বড় উদাহরণ। শক্তি বৃদ্ধি করতে এবং সামুদ্রিক অঞ্চলে প্রতিরক্ষা মজবুত করতে আমেরিকার সঙ্গে হাত মিলিয়ে এক নয়া সামরিক যুগে প্রবেশ করেছে ভারত।

শুধু প্রতিরক্ষা নয়, সমুদ্রে খনিজ ভান্ডারের খোঁজ, নজরদারি চালানো, সামুদ্রিক গবেষণার মতো বহুমুখী কাজ করবে এই বাহন। 

আমেরিকার সংস্থা ওশেন এয়ারোর সঙ্গে যৌথভাবে এই যান তৈরি করছে ভারতের ‘অ্যানাড্রোম সিস্টেমস’। এই সংস্থাটি মূলত চালকবিহীন সামরিক উউড়োজাহাজ বানিয়ে থাকে। এখন তারা পানির ওপরে ও নিচে চলার জন্য এই সামরিক বাহন তৈরি করল যার নাম ট্রাইটন। একে ‘অটোনমাস আন্ডারওয়াটার অ্যান্ড সারফেস ভেহিকল’ (এইউএসভি) বলা হচ্ছে। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এই বাহনটি সমুদ্র প্রতিরক্ষায় আমূল পরিবর্তন আনবে। সমুদ্র গবেষণায়ও ট্রাইটন বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে বলে মনে করছেন তারা।

স্বয়ংক্রিয় এই বাহনটি সূর্যের আলো থেকে শক্তি সংগ্রহ করে চলবে। কোন দিক থেকে এবং সমুদ্রের কতটা গভীর থেকে আওয়াজ আসছে, কোনো জাহাজ বা ডুবোজাহাজ আন্তর্জাতিক জলসীমা পার করে ভারতসীমায় ঢুকে পড়েছে কি না তা চিহ্নিত করে তৎক্ষণাৎ নৌবাহিনীকে সতর্ক করবে এই জলযান।

নজরদারি চালানোর পাশাপাশি দ্রুত তথ্য সংগ্রহ করে বিপদের আঁচ পেলে পাল্টা প্রতিরোধের ক্ষমতাও রয়েছে এর। সমুদ্রের দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া এর কাজে বাধা দিতে পারবে না।

আমেরিকার নৌবাহিনী ও উপকূলরক্ষী বাহিনী এই যান ব্যবহার করে। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি দেশে এই যান বিক্রি করেছে আমেরিকা। ওশেন এয়ারোর দাবি, ঝুঁকিপূর্ণ সামুদ্রিক অভিযান, অ্যান্টি সাবমেরিন ওয়ারফেয়ারেও ট্রাইটনের ভূমিকা অনবদ্য। আর উদ্ধারকাজ, তল্লাশি অভিযান ও উপকূলে নজরদারি চালানোর ক্ষমতা তো আছেই।

ফলে সমুদ্রের নিচে চীনা চোখ রাঙানিকে টক্কর দিতে ট্রাইটন বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন