Logo
Logo
×

অভিমত

একজন মার্কিন রাষ্ট্রদূত এখনো বাংলাদেশকে মাতিয়ে তুলতে পারেন

ফয়সাল মাহমুদ

ফয়সাল মাহমুদ

প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৪, ০৫:০২ এএম

একজন মার্কিন রাষ্ট্রদূত এখনো বাংলাদেশকে মাতিয়ে তুলতে পারেন

পিটার হাস। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি এক সকালে ফেসবুক স্ক্রলিং করার সময় বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য নতুন রাষ্ট্রদূত নিয়োগের খবর জানতে পারি। এর মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে প্রভাবশালী মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বিদায় নেবেন। তার স্থলাভিষিক্ত হবেন ডেবিড মিল নামের এক মার্কিনি। 

১৮০ মিলিয়ন জনসংখ্যার একটি গণতান্ত্রিক দেশে বিদেশি কূটনীতিকের উল্লেখযোগ্য প্রভাব বিস্তারের ধারণা কিছুটা অদ্ভূত মনে হতে পারে। এমনকি একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য হলেও সেটা মনে হতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার ইতিহাস বিদেশিদের হস্তক্ষেপ, তাদের শক্তি প্রয়োগ এবং বিভিন্ন ভাবে দিকনির্দেশনা দিয়ে মাতবরি ফলানোর সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। 

রোজকার এক সাধারণ আলোচনায় প্রথমবার আমি এই অস্বস্তিকর বাস্তবতা টের পাই। চা-বিস্কুট খেতে খেতে করা গল্পে এক জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক, যাকে আমি মেন্টর মনে করি তিনি এই কঠিন সত্যটি বোমাটি আমার সামনে তুল ধরেন। তিনি বলেন, ফয়সাল,  মনে রাখবেন বাংলাদেশে মাত্র তিনজন ব্যক্তি কলকাঠি নাড়ার ক্ষমতা রাখেন, প্রধানমন্ত্রী, ভারতীয় দূতাবাস এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত।  

কয়েক বছর পরে, যখন আমার সাংবাদিকতার পরিসর ব্যবসা ও অবকাঠামো থেকে বৃহত্তর রাজনৈতিক হালচিত্রে বিস্তৃত হয় তখন আমি ওই কথার গভীরতা বুঝতে পারি। তাদের সম্পর্কে বলা কথা অবিশ্বাস্যভাবে সত্য ছিল। 

২০২৪ সালের জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের আগের সময়টার দিকে তাকলে দেখা যাবে, এক বছরের বেশি সময় ধরে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের প্রতিটি পদক্ষেপ যেন পুরো জাতি মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে গভীরভাবে অনুসরণ করেছে এবং চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছে। তখন পিটার হাস নিয়মিত সংবাদের শিরোনাম হতেন। এমনকি প্রতিবেশী দেশ ভারতে তার পারিবারিক ভ্রমণও সংবাদের শিরোনাম হতো। 

জনপ্রিয় বিশ্লেষক ও নির্বাসিত বাংলাদেশিদের পরিচালিত টক শো এবং ইউটিউব চ্যানেলগুলোয় রাষ্ট্রদূত হাসকে ত্রাণকর্তা রূপে তুলে ধরা হতো। মানুষজন আশা করেছিল, তিনি হস্তক্ষেপ করবেন এবং বাংলাদেশকে একটি স্বৈরতান্ত্রিক রাষ্ট্র হয়ে ওঠা থেকে রক্ষা করবেন। 

প্রত্যাশা ছিল তিনি যেকোনো ভাবে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেবেন এবং কার্যকর নির্বাচন ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনবেন। আর এর মাধ্যমে বাইডেন প্রশাসন বিশ্বব্যাপী যে সত্যিকারের গণতন্ত্রের কথা বলে তা বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হবে।

পারিবারিক হয়ে ওঠা পিটার হাস

এটা ঠিক যে, পিটার হাসের ওপর ওই প্রত্যাশা একেবারে ভিত্তিহীন ছিল না। তিনি ২০২২ সালের মার্চে রাষ্ট্রদূত হয়ে বাংলাদেশে আসেন। এর ঠিক তিনমাস আগে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এবং সংস্থাটির সাত সাবেক কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। 

বাংলাদেশের আধাসামরিক ইউনিট র‌্যাবের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের ওঠে। এসব অভিযোগের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা—যিনি গত ১৫ বছর ধরে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটি খুব শক্ত হাতে শাসন করছেন, তার রাজনৈতিক বিরোধী ও সমালোচকদের লক্ষ্য করে গুম ও বিচারবহির্ভুত হত্যাও রয়েছে।  

বাংলাদেশে আসার পর থেকেই পিটার হাস তৎপর হয়ে উঠেন। তিনি বড় রাজনৈতিক দল এবং মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে বৈঠককে অগ্রাধিকার দেন। ঘন ঘন সংবাদমাধ্যমে উপস্থিত হয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে ব্যাপক প্রচার পান তিনি। 

তার বক্তব্যকে বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নীতির পরিবর্তনের ইঙ্গিত মনে করেছিলেন অনেক বিশ্লেষক। তারা একে ভারতের চোখ দিয়ে বাংলাদেশকে দেখার যুক্তরাষ্ট্রের যে নীতি তা থেকে দূরে সরে যাওয়া হিসেবেও দেখেছিলেন। গত কয়েক বছর ধরেই এই ধারণা ছিল যে, যুক্তরাষ্ট্র ভারতের চোখ দিয়ে বাংলাদেশকে দেখে।

যুক্তরাষ্ট্রের কথিত এই সমর্থনে উচ্ছ্বসিত হয়ে বিরোধী দল বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি (বিএনপি) নতুন গতি পায়। যদিও দলটি নিজেদের অনেক নেতা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় পড়ায় বিপর্যস্ত ছিল তারপরও তারা দেশব্যাপী বড় ধরনের সমাবেশের আয়োজন করতে পেরেছিল। সাধারণ মানুষও, যারা আগের দুই বিতর্কিত নির্বাচনে সীমিত ভোটাধিকার পেয়েছিল, তারা আসন্ন নির্বাচন স্বচ্ছ হবে বলে ধরে নিয়েছিল।

তাদের এই প্রত্যাশা আরও তীব্র হয় যখন গত বছরের মার্চের শেষি দিকে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। ওই নীতিতে বলা হয়, যারা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করবে তাদেরকে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা দেবে না। যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘোষণা বাংলাদেশের সমাজের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। 

কারণ, কর্মসংস্থান বা শিক্ষার সুযোগ খোঁজা বাংলাদেশিদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরেই শীর্ষ গন্তব্য হয়ে আছে। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের মানুষ এও বুঝতে পারলো বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বিশ্বের অন্যান্য পরাশক্তি যেমন ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার ওপরও যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক প্রভাব আছে। তাই যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা মানে সেসব দেশের ভিসা পাওয়াও কঠিন করে তুলবে। 

যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির বিস্তৃত প্রকৃতির কারণে অনেক ধরনের জল্পনা ও গুজবের ডালপালা ছড়ায়। দেশের মিডিয়াগুলোর বিধিনিষেধের সুযোগে বিদেশে থাকা বাংলাদেশি অ্যাক্টিভিস্টদের ইউটিউব চ্যানেলগুলো জনপ্রিয় হয়। আর সেসব চ্যানেলে কোন কোন রাজনীতিককে ভিসা নিধেজ্ঞা দেওয়া হবে তাদের তালিকা প্রকাশ করা হয়।     

এই তালিকা অনলাইনে ভাইরাল হয় এবং সেসব মানুষের রোজকার আলোচনায় ছড়িয়ে পড়ে, যারা যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য হস্তক্ষেপে আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনের ইতি ঘটার ব্যাপারে ফিসফাস করছিলেন। 

নতুন ভিসা নীতির ফলে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস নির্বাচন নিয়ে আলাচনার কেন্দ্রীয় চরিত্র হয়ে উঠলেন—বিরোধী দলগুলো একে বাংলাদেশের ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার’ বলে অভিহিত করেছিল। 

যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য ওই হস্তক্ষেপের ধারণার ফলে পিটার হাসের জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী হয়ে ওঠে। পিটার হাসের জনপ্রিয়তার কিছুটা টের পাওয়া যায় টেলিভিশন টকশোতে করা বিএনপি নেতা গোলাম মাওলা রনির হাস্যরসাত্মক এক মন্তব্যে। তিনি বলেন, সরকারের দমন-পীড়ন থেকে বাঁচাতে ‘উপরে আল্লাহ আছেন, আর নিচে আছেন পিটার হাস’।

শুধু পিটার হাসই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয়তার বিস্তার জাতির মানসে এমন তুঙ্গে উঠে যে, হামাসের হামলার প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েল অযৌক্তিভাবে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে আক্রমণ শুরু করলেও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে দেশে কোনো সমালোচনা চোখে পড়েনি। এমনকি ইসলামি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও না। 

এটা ছিল নজিরবিহীন ঘটনা। কারণ অতীতে দেখা গেছে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে কিছু ঘটলেই বাংলাদেশের মানুষ যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। কারণ তারা জানে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ছাড়া ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যে বিপাকে থাকবে। 

বাস্তবতায় ফেরা

গত বছরের মধ্য নভেম্বরে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন ৭ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে। নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়ার বিএনপির দাবি কোনো পাত্তাই পায়নি। এর আগে দেশের উচ্চ আদালত তত্ত্ববধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে। 

পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে তাই বিএনপি নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় থাকে। কারণ পূর্বে এমন নির্বাচনে অংশ নিয়ে ৩০০ আসন থেকে মাত্র ৭টি আসন পেয়িছিল এবং সে নির্বাচনকে ব্যাপক কারচুপির নির্বাচন মনে করা হয়। তারা নিশ্চিত ছিল যে দলীয় সরকারের অধীনে কোনোভাবেই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না। 

রাজপথে বিএনপি ও তার মিত্ররা তীব্র আন্দোলন গড়ে তুললো দেশ এক অস্থির সময়ের সাক্ষী হলো। এই আন্দোলনে পুলিশের মারমুখি ভূমিকা বৃদ্ধি পায় এবং নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলাও বাড়ে। রাজনৈতিক এই অস্থিরতার সঙ্গে সঙ্গে কাকতালীয়ভাবে দেশের গুরুত্বপূর্ণ তৈরি পোশাক খাতও শ্রমিক আন্দোলনে অস্থির হয়ে ওঠে। তৈরি পোশাক খাত থেকে দেশের রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশ আসে। ওই সময় শ্রমিকরা ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করছিল। দুঃখজনকভাবে সেই আন্দোলন চলাকালে কয়েকজন শ্রমিক প্রাণ হারান। 

আরও উদ্বেগ তৈরি হয় যখন যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিক অধিকার নিয়ে নতুন নীতি ঘোষণা করে। দেশটির ঘোষিত ‘মেমোরেন্ডাম অন অ্যাডভান্সিং ওয়ার্কার এমপাওয়ারমেন্ট, রাইটস, অ্যান্ড হাই লেবার স্ট্যান্ডার্ড গ্লোবালি’ নীতির আওতায় থাকা যেসব দেশ শ্রম অধিকার লঙ্ঘন করবে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা, ভিসা নিষেধাজ্ঞা এবং বাণিজ্য শাস্তি দিতে পারবে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশের অনেকে এটিকে তৈরি পোশাক খাতকে লক্ষ্য করে সম্ভাব্য বড় ধরনের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা হিসেবে তুলে ধরেছেন। 

অস্থির ওই সময়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কর্মকাণ্ড পুরো জাতি নিবিড়ভাব অনুসরণ করে। মার্কিন দূতাবাস এবং রাষ্ট্রদূতের প্রতিটি পদক্ষেপ তখন গভীর বিশ্লেষণ করা হতো এবং নানা ধরনের গল্প-গুজব ছড়িয়ে পড়তো। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, এমনকি অধিকাংশ সংবাদমাধ্যমও সেই গল্প-গুজব প্রকাশ করে পালে হাওয়া দিতো। এসব গল্প-গুজব সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায় যখন কিছু জাতীয় পত্রিকা বড়দিনের আগে পরিবার নিয়ে পিটার হাসের ভারত ভ্রমণকে শিরোনাম করে এবং নানা অনুমান নির্ভর গল্প ছাপে।  

প্রধান বিরোধী দল বয়কট করায় যদিও ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের ফলাফল অনেকটাই পূর্বনির্ধারিত ছিল। যুক্তরাষ্ট্র প্রতিক্রিয়া দেখাবে—যেমনটা বাংলাদশের সব রাজনৈতিক দল এবং সাধারণ মানুষের অত্যন্ত প্রত্যাশিত ছিল। 

নির্বাচনের ফল ঘোষণার কয়েকদিনের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র এই নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিবৃতি দেয় এবং নির্বাচন স্বচ্ছ না হওয়ায় সমালোচনা করে। পাশাপাশি বিরোধী দলের সদস্যদের আটকের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে। বিবৃতিতে দেশটি ‘বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতির’ ওপরও জোর দেয়।  

যুক্তরাষ্ট্রের মতে, এই অংশীদারিত্ব একটি স্বাধীন ও অবাধ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রসারে জোর দেয়, বাংলাদেশের সুলিশ সমাজ ও মানবাধিকারকে সমর্থন যোগায় এবং মানুষে মানুষে ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করে। 

বিব্রতকর গ্রহণযোগ্যতা

আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদরা যুক্তরাষ্ট্র বা অন্যান্য আন্তর্জাতিক শক্তির হস্তক্ষেপ না করাকে পশ্চিমা বিশ্বের নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেওয়া হিসেবে তুলে ধরেন। বিরোধীরা শেষ পর্যন্ত আগের বাস্তবতাই উপলব্ধি করল যে, আওয়ামী লীগ সরকারকে অপসারণে মার্কিন নেতৃত্বাধীন কোনো উদ্যোগ থাকবে না।

অবশেষে কয়েক মাসের অনলাইন অ্যাক্টিভিজম ও মতামত প্রকাশের পর বেশিরভাগ বিশ্লেষক এবং অ্যাক্টিভিস্ট পুরোনো কাঠামোতে নতুন রাজনৈতিক দৃশ্যকে মেনে নিতে বাধ্য হন। যদিও কিছু রাজনৈতিক পণ্ডিত এবং বিশ্লেষক যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপগুলির এখনো চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন এবং দেশটির বাংলাদেশ নীতি আসলে কি তা বের করার চেষ্টা করছেন।

গণতান্ত্রিক সংস্কারকে উৎসাহিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের কি কঠোর পন্থা অবলম্বন করা উচিত, নাকি আরও সমঝোতামূলক অবস্থান নেওয়া উচিত? দেশটি কি সুদ-চালিত কৌশলের জন্য মূল্যবোধ-ভিত্তিক মনোভাব সম্পূর্ণরূপে বাদ দেবে, নাকি উভয় নীতির ভারসাম্য থাকবে এমন একটি মধ্যপন্থা খুঁজে বের করার চেষ্টা করবে?

আজকাল যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি, বাংলাদেশ ঘিরে দেশটির পররাষ্ট্রনীতির প্রতি, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের প্রতি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কোনো আগ্রহ নেই। বলা যায় নির্বাচনের আগের ওই তীব্র আগ্রহ উবে গেছে। মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস সম্ভবত কোনো মানে ছাড়াই কিছু সময়ের জন্য লাখ লাখ বাংলাদেশিদের কাছে আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছিলেন। 

অনেকেই তাকে বাংলাদেশের সঙ্গে বোঝাপড়ায় মার্কিন মূল্যবোধের কথিত জোরদারের মূর্ত প্রতীক মনে করেন। তার আসন্ন বিদায়ে এবং যুক্তরাষ্ট্রের মাধ্যমে কোনো পরিবর্তন না হওয়ায় সম্ভবত সেই ধারণার সমাপ্তি ঘটবে। 

এশিয়াটাইমস ডটকমে প্রকাশি নিবন্ধটি বাংলা আউটলুক পাঠকদের জন্য ভাষান্তর করে দেওয়া হলো।

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন