জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, "বাংলাদেশে একটি নতুন সম্ভাবনার সূচনা হয়েছে। এখন আমাদের সম্মিলিত দায়িত্ব, যেন সবাই মিলে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে পারি—একটি এমন বাংলাদেশ, যেখানে আর কখনও ফ্যাসিবাদী শাসন ফিরে না আসে।"

শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এনসিপি নেতাদের উদ্দেশে আলী রীয়াজ আরও বলেন, “সংস্কার কমিশনগুলোর প্রস্তাবনার মধ্যে আপনাদের কিছু বিষয়ে একমত, আবার কিছু বিষয়ে ভিন্নমত রয়েছে। আমরা যেসব বিষয়ে একমত হয়েছি, সেগুলো নিয়ে এগিয়ে যাব। যেসব বিষয়ে দ্বিমত বা আংশিক মতভেদ রয়েছে, সেগুলো আজ আলোচনা করব এবং প্রয়োজনে ভবিষ্যতেও আলোচনা অব্যাহত থাকবে। কারণ, আমাদের লক্ষ্য জাতির আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী একটি জাতীয় সনদ প্রণয়ন করা।”

তিনি আরও বলেন, “আপনারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ফ্যাসিবাদী শাসকের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন, তাকে পলায়নে বাধ্য করেছেন। এই বিজয়ের পাশাপাশি আপনারা যেভাবে একটি নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা গঠনের দাবি তুলেছেন, তা দেশের মানুষের মধ্যে রাষ্ট্র সংস্কারের প্রবল আকাঙ্ক্ষা তৈরি করেছে।”

আলী রীয়াজ বাংলাদেশের ইতিহাস প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা বহুবার দেখেছি, কীভাবে গণতন্ত্রকে দাবিয়ে রাখা হয়েছে, আর যে বিজয় গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে এসেছে, সেটিকে বারবার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। কীভাবে রাষ্ট্রকে একটি ব্যক্তির ইচ্ছার অধীন করে ফেলা হয়েছিল।”

তিনি আরও যোগ করেন, “এখন আমাদের কাজ হচ্ছে একটি গণতান্ত্রিক, মানবিক রাষ্ট্র গড়ে তোলা—যেখানে গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং দমন-পীড়নের কোনও স্থান থাকবে না। এসব রাষ্ট্রীয় যন্ত্র ও ব্যবস্থাকে চিহ্নিত করে তা অপসারণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে টেকসই করতে হবে।”

উক্ত বৈঠকে কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, এনসিপির ৮ সদস্যের প্রতিনিধিদলে ছিলেন আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, জাবেদ রাসিন, মূখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব নাহিদা সারোয়ার নিভা।