আদালতকে মেঘনা আলম
সৌদি রাষ্ট্রদূতের অভিযোগ, আমি নাকি তার বাচ্চা নষ্ট করে ফেলেছি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:২৮ পিএম
-6800c9d9783c9.jpg)
সাবেক ‘মিস আর্থ বাংলাদেশ’ মেঘনা আলম আদালতকে বলেছেন, সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসার সাথে আমার বিয়ে হয়। ঈসা অভিযোগ করেন, আমি নাকি তার বাচ্চা নষ্ট করে ফেলেছি। এটা মোটেও সত্য না। এ বিষয়ে আমি ঈসার সাথে কথা বলি। তাকে এসব তথ্য ছড়ানো থেকে বিরত থাকতে বলি। এসব বিষয় নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিজি শফিকুরের সাথে কথা বলি। এরপরেই পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করে।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর হাকিম মাসুম মিয়ার আদালতে তোলা হলে বিচারকের অনুমতি নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
আদালত অনুমতি দিলে মেঘনা আরও বলেন, আমার নাম মেঘনা, মেঘলা নয়। সৌদি রাষ্ট্রদূতের কথা বলা হচ্ছে। আমার প্রশ্ন যে কেউ চাইলে কি সৌদি রাষ্ট্রদূতের সাথে দেখা করতে পারে? আপনারা কি তার কাছে যেতে পারবেন?”
বিচারক তাকে থামিয়ে দিয়ে মামলা সম্পর্কে কিছু বলার আছে কিনা জানতে চান। এরপর মেঘনা বলেন, আমাকে বিনা বিচারে জেলে পাঠানো হয়েছে। আমাকে বলা হয়েছে কোনো আইনজীবী পাবেন না। বিষয়টি হল রাষ্ট্রদূত ঈসার সাথে আমার একমাত্র সম্পর্ক, আর কারো সাথে না।
এর আগে রূপবতীদের দিয়ে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের প্রেমের ফাঁদে ফেলার অভিযোগে ধানমণ্ডি থানায় দায়ের করা প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে শুনানির জন্য তাকে এ আদালতে হাজির করা হয়। আট দিন আগে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসা থেকে মেঘনা আলমকে আটক করার পর বিশেষ ক্ষমতা আইনে এক মাসের আটকাদেশ দেওয়া হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে তীব্র সমালোচনার মধ্যে তার বিরুদ্ধে ওই প্রতারণার মামলা দায়ের করে পুলিশ।
গতকাল বুধবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আখতার মোর্শেদ মেঘনাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার এবং তার ‘সহযোগী’ সানজানা ইন্টারন্যাশনাল নামের জনশক্তি রপ্তানিকারক কোম্পানির মালিক দেওয়ান সমিরকে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে সেই শুনানির জন্য তাদের আদালতে হাজির করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগরের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী এ মামলায় মেঘনাকে গ্রেপ্তার দেখানোর পক্ষে শুনানি করেন।
তিনি বলেন, এই আসামিরা অভিনব কৌশল অবলম্বন করে বিদেশি রাষ্ট্রদূতসহ অ্যাম্বাসিগুলোতে কর্মরত বিদেশি নাগরিকদের হানি ট্র্যাপে ফেলে বিপুল অর্থ বাগিয়ে নেওয়ার জন্য চক্র দাঁড় করিয়েছেন। তারা দীর্ঘদিন ধরে এসব প্রতারণা করে আসছেন। সবশেষ সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেন। এবং তার কাছে ৫ মিলিয়ন ডলার দাবি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ সময় মেঘনা আলমকে তিনি মেঘলা আলম সম্বোধন করেণ। শুনানির একপর্যায়ে মেঘনা তার নাম ঠিকভাবে উচ্চারণ করতে বলেন।
এরপর বিচারক আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী আছেন কিনা জানতে চান। তখন মেঘনা আদালতকে বলেন, কোনো আইনজীবী নেই। তিনি নিজেই কথা বলতে চান।
এদিকে দেওয়ান সমির রিমান্ড শুনানিতে আদালতকে বলেন, আমাকে মেঘনা আলমের বয়ফ্রেন্ড বলা হচ্ছে। এটা ভুল তথ্য, তার সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। আমি সাধারণ একজন মানুষ। দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলাম। আমি একজন রেমিটেন্স যোদ্ধা। আমি মামলার এসব ঘটনার কিছুই জানি না।
পরে আদালত তাদের দুজনকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন। সেই সঙ্গে সমির দেওয়ানকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।
এজলাস থেকে হাজতখানায় নেওয়ার সময় মেঘনা আলম সাংবাদিকদের দেখে বলতে থাকেন, “একমাত্র ঈসার সাথে আমার সম্পর্ক, আর কারো সাথে সম্পর্ক নেই। আমি ন্যায়বিচার পাচ্ছি না।