প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিতে যমুনায় বিএনপি নেতারা

নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রবেশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের শীর্ষ সাত নেতা।
আজ বুধবার দুপুর ১২টা ৮ মিনিটে বিএনপি নেতাদের বহনকারী গাড়িটি যমুনা ভবনে প্রবেশ করে। বৈঠকে তাঁরা আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ‘সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ’ উপস্থাপনের আহ্বান জানাবেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
বিএনপি প্রতিনিধিদলে আছেন—মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
বৈঠকের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন,
“আমরা নির্বাচনের রোডম্যাপ, রাজনৈতিক পরিবেশ এবং নির্বাচন সংশ্লিষ্ট বিভ্রান্তি দূর করার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলব।”
তিনি আরও জানান, এ নিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে একটি লিখিত বক্তব্যও প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যা প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই বৈঠকে আজকের সাক্ষাতের বিষয়বস্তু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্য জানিয়েছেন, তাঁরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে একটি স্বচ্ছ ও সময়োপযোগী নির্বাচনী রোডম্যাপ উপস্থাপনের অনুরোধ জানাবেন। সেই সঙ্গে জানতে চাওয়া হবে, নির্বাচনের ব্যাপারে সরকারের অবস্থান কী এবং ভোটগ্রহণ ও নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী।
এছাড়াও সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, চলমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং অর্থনৈতিক স্থবিরতা দূর করার প্রয়োজনীয়তা নিয়েও আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা।
সালাহউদ্দিন আহমেদ গত সপ্তাহে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের জানান, “আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ চেয়েছি। তাঁর সঙ্গে আলোচনার পর আমরা নির্বাচন প্রসঙ্গে পরবর্তী অবস্থান পরিষ্কার করব।”
তিনি আরও বলেন, “আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে ডিসেম্বরের মধ্যে একটি রোডম্যাপ আমরা চাইব। যাতে জাতির সামনে একটি স্পষ্ট ও বিশ্বাসযোগ্য চিত্র উপস্থাপন করা যায়। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতি ফেরানোর জন্য এটা অত্যন্ত জরুরি।”
বৈঠকটি দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ এক মুহূর্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। নির্বাচনকে ঘিরে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে বিএনপির এই উচ্চপর্যায়ের অংশগ্রহণ ভবিষ্যৎ সংলাপ ও রাজনৈতিক সমঝোতার পথে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।