
ছবি: সংগৃহীত
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘ক্রিম আপা’ নামে পরিচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর শারমিন শিলাকে সন্তানদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আজ শুক্রবার (১১ এপ্রিল) ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জিনাত জাহানের আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আদালতে শারমিন শিলাকে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক ওমর ফারুক। যদিও শিলার পক্ষে একাধিক আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন, আদালত সেই আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আশুলিয়া থানার প্রসিকিউশন বিভাগের কর্মকর্তা আবুল খায়ের বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, ৯ এপ্রিল সাভার উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা কাজী ইসরাত জামান আশুলিয়া থানায় শারমিন শিলার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে তাকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
মামলার এজাহারে বলা হয়, শারমিন শিলা একজন বিউটিশিয়ান ও কনটেন্ট ক্রিয়েটর। ‘ক্রিম আপা’ নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি পরিচিত, যিনি মূলত বিউটি ক্রিম তৈরি ও বিক্রির কাজ করেন। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। তিনি ছেলে ও মেয়েকে ফেসবুকসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ভিডিও তৈরি করে পোস্ট দেন। গত ৩ মার্চ তার ফেসবুক আইডি থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। সেই ভিডিওতে দেখা যায় শারমিন তার মেয়েকে জোর করে মুখে খাবার দিচ্ছেন। মেয়েটি খেতে না চাইলে এক হাতে মুখে চাপ দিয়ে, অন্য হাতে কেক জাতীয় খাবার মুখে ঢোকাচ্ছেন তিনি। ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
এজাহারে আরও বলা হয়, শারমিন শিলা মাতৃসুলভ আচরণ না করে সন্তানদের প্রতি নিষ্ঠুর ব্যবহার করছেন, যা তাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এমন আচরণ শিশু আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
‘ক্রিম আপা বিউটি পার্লার’-এর মালিক শারমিন নিয়মিত ভিডিও বানিয়ে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেন। তার ভিডিওতে প্রায়ই মেয়েকে দেখা যায় ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায়। কোনো সময় চুপচাপ, আবার কখনো অস্বাভাবিকভাবে কাঁদতে দেখা যায় শিশুটিকে।
শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন ‘একাই একশো’ গত ৬ এপ্রিল ঢাকা জেলা প্রশাসকের কাছে শারমিনের বিরুদ্ধে স্মারকলিপি দেয়। পরে জেলা প্রশাসন তিন দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেয়।
আলোচনার মুখে পড়ে শারমিন শিলা এক ফেসবুক লাইভে এসে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চান এবং জানান, ভবিষ্যতে এমন ভিডিও আর করবেন না। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, ক্ষমা চাইলেও শিশু নির্যাতনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।