শান্তি ও সমৃদ্ধিতে চীনের ভূমিকা জোরদারের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় আরও কার্যকর ভূমিকা রাখার জন্য চীনকে আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শুক্রবার সকালে বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপল-এ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে তিনি এই আহ্বান জানান।
বৈঠকে দুই নেতা দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করেন। বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে চীনের প্রেসিডেন্টকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান ‘নতুন বাংলাদেশ’ গঠনের পথ সুগম করেছে। তিনি বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি নিয়ে চীনা নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করেন।
বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন এবং মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবর্তনে চীনের আরও জোরালো ভূমিকা রাখার অনুরোধ জানান।
চীনের সঙ্গে দীর্ঘ সম্পর্কের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, অতীতে তিনি গ্রামীণ ব্যাংক ও সামাজিক ব্যবসার প্রসারের জন্য চীনের সঙ্গে কাজ করেছেন এবং ভবিষ্যতেও সহযোগিতার সুযোগ রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস আজ বেইজিংয়ের দ্য প্রেসিডেন্সিয়াল-এ চীনের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে একটি বিনিয়োগ সংলাপে অংশ নেবেন। এর মূল লক্ষ্য হলো— বাংলাদেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তুলে ধরা এবং চীনা বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা।
তিনি একই ভেন্যুতে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নেবেন, যেখানে আলোচিত হবে: টেকসই অবকাঠামো ও জ্বালানি বিনিয়োগ, বাংলাদেশে উৎপাদন ও বাজারের সুযোগ, সামাজিক ব্যবসা, যুব উদ্যোক্তা ও ‘থ্রি জিরো’ বিশ্বের ভবিষ্যৎ।
এই বৈঠক ও সংলাপে বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় চীনা কোম্পানির নির্বাহী কর্মকর্তা, সামাজিক ব্যবসা বিশেষজ্ঞ এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা অংশ নেবেন।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস চীনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের আয়োজনে এক নৈশভোজেও অংশ নেবেন, যেখানে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক আরও গভীর করার বিষয়ে আলোচনা হবে।
চার দিনের চীন সফরে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে রয়েছেন—পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফওজুল কবির খান, প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান, এসডিজি বিষয়ক মূখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
এই সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।